ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

পাহাড় খেকো ও পাথর ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়া হবেনা   -লামায় বান্দরবান জেলা প্রশাসক

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::

বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন লামা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেছেন। রোববার (১৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন পেশাজীবি লোকজন অংশ নেয়।

এসময় উপস্থিত লোকজন সরকারের উন্নয়ন, এলাকার সমস্যা, সম্ভাবনা, নিরাপত্তা, পর্যটন বিকাশ, সাম্প্রদায়িক সম্পৃীতি, ভূমি সমস্যা, স্বাস্থ্য-শিক্ষা সেবার মান বৃদ্ধি, আশ্রয়ণ প্রকল্পের সমস্যা ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার বিষয় নিয়ে কথা বলেন। জেলা প্রশাসক উল্লেখিত সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।

জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন, বান্দরবান বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যময় একটি জেলা। আগের বান্দরবান আর এখনের বান্দরবানের মধ্যে অনেক পার্থক্য। ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর থেকে পাহাড়ের চিত্র পাল্টে গেছে। সরকারের আন্তরিকতার কারণে পাহাড় আজ সম্পদে রুপ নিয়েছে। বান্দরবান জেলা সাম্প্রদায়িক সম্পৃীতির জন্য এক অন্যান্য নিদর্শন। গত মে/২০১৮ মাসে এসএসসি ফলাফল প্রকাশে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী পাহাড়ের শিক্ষা খাতকে আরো এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন বলে বলেছেন।

জেলা প্রশাসক ‘ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ’কে আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন। পার্বত্য এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদকে ভূমি করের ১শতাংশ টাকা প্রদানের প্রস্তাবটি আগামী ২৫ জুলাই জাতীয় জেলা প্রশাসক সম্মেলনে উত্থাপন করে সরকারের নজরে আনা হবে বলে জানান। আন্তর্জাতিক শান্তি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১১তম। এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলার অবস্থা উন্নতির লক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানদের প্রস্তাবিত স্থানে নতুন সেনা ও পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের সরকারের সাথে আলাপের আশ্বাস দেন। বিশেষ করে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র সমূহে সেবা বৃদ্ধিতে জোর দেন। তিনি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো সংস্কার ও উপকারভোগীদের নামে জমি নামজারির বিষয়ে সহায়তার কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক কঠোর হুশিয়ারী উল্লেখ করে বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধে পরিবেশের উপর কোন রকম অত্যাচার মেনে নেয়া হবেনা। পাহাড় কাটা, পাথর উত্তোলনের সংবাদ পাওয়া মাত্র তাদের আইনের আওতায় আনতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন। পাহাড়ে সক্রিয় কিছু ভূমি দস্যুদের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে এবং বড় কয়েকটি কোম্পানী পাহাড় দখলের যে প্রতিযোগিতায় নেমেছে সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার কথা বলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরীর প্রস্তাবিত উপজেলার ৮৫টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে অধিকাংশ স্কুলের ভূমি সমস্যা সমাধান ও নামজারির বিষয়ে সহায়তার করার আশ্বাস দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি’র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী, পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান আবু তাহের মিয়া, শারাবান তহুরা, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ, মাতামুহুরী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন, জাকের হোসেন মজুমদার, ছাচিং প্রু মার্মা, মো. ফরিদ উল আলম, সাংবাদিক প্রিয়দর্শী বড়–য়া সহ প্রমূখ। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদ পারভেজ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠান পরিচালিত হয়।

এর আগে জেলা প্রশাসক লামা পৌরসভা, লামা থানা, স্থানীয় ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন। সভা শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে একটি বৃক্ষ রোপন করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, লামা হাসপাতাল, ১টি ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

পাঠকের মতামত: