ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নগরীর ৯ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬টিতে নেই প্রধান শিক্ষক

নিউজ ডেস্ক :: দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ‘সংকটে’ ভুগছে নগরীর ছয় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নগরীর নয়টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বর্তমানে ছয়টিতেই প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী প্রধান শিক্ষকরাই এসব বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরের পর বছর প্রধান শিক্ষক না থাকায় একদিকে পাঠদানে যেমন সমস্যা হয়, অন্যদিকে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কাজেও গতি থাকে না বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তবে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের জন্য পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য শিক্ষক না পাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলা সরকারি বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে- গভ. মুসলিম হাই স্কুল। ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। একই বছরের ডিসেম্বর থেকে প্রধান শিক্ষক নেই নগরীর স্বনামধন্য বিদ্যালয় চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। ২০ মাসের বেশি সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সেখানে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়। একইভাবে, গত বছরের জুনের শেষের দিক থেকে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। টানা আড়াই বছরের মত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বাকলিয়া সরকারি বিদ্যালয়। নগরীর সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে চার বছরের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে। সব বিদ্যালয়ে চার বছরের অভিজ্ঞতার শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্তরা দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে, নগরীতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের মধ্যেও দুই থেকে তিনজন আগামী ছয় মাসের মধ্যে অবসরে যাবেন। সরকারের এই শর্ত শিথিল করার জন্য দাবি জানিয়েছেন দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকবৃন্দ। এছাড়া, দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান প্রধান না থাকায় এক দিকে পাঠদানে যেমন সমস্যা হয়, অন্যদিকে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কাজেও গতি থাকে না।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, নগরীর নয়টি সরকারি বিদ্যালয়ের মধ্যে ছয়টিতেই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকরাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিছু শর্তের কারণে প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি এসব শর্ত শিথিল করার জন্য।
এসব শর্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ে সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ নেই। পদোন্নতির মাধ্যমেই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের জন্য পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য এমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে সরকারি বিদ্যালয় চালাতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে একটি নির্ধারিত সময় দায়িত্ব পালন করতে হয়। আমরা চেষ্টা করছি এই কাম্য অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করতে। এই শর্ত যদি শিথিল করা যায়, তাহলে আমাদের প্রধান শিক্ষক সংকট কেটে যাবে।

পাঠকের মতামত: