বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আইনের শাসনকে পদদলিত করে দেশে পেশিশক্তিনির্ভর এক বর্বর আওয়ামী দুঃশাসন চাপিয়ে দেওয়ার জন্য বেপরোয়া ও ধারাবাহিক অপপ্রয়াসে সচেতন নাগরিক সমাজ আজ উদ্বিগ্ন।
চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত এক বার্তায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি এক কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি মনে করি দুর্নীতি, দুঃশাসন, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈরাজ্যের বর্তমান দুঃসহ পরিস্থিতির অবসান কল্পে সকলের অংশগ্রহণে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক জাতীয় নির্বাচনে জনগণের ভোটে একটি প্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে জবরদস্তি ও অপকৌশলের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়েছে বর্তমান অবৈধ সরকার। এই শাসকদের সরাসরি মদত ও আস্কারায় তাদের চ্যালা চামুন্ডারা দেশজুড়ে উচ্ছৃঙ্খলতা ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। নির্লজ্জ দলীয়করণ ও যথেচ্ছ অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসমূহের আইনসম্মতপন্থায় স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার কোনো অবকাশ এরা রাখেনি। তারপরেও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রশাসন, পুলিশ, সীমান্তরক্ষীসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর দৈহিক হামলা ও সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপিপ্রধান বলেন, ‘অন্যায় আবদার রক্ষা ও বেআইনি নির্দেশ পালন এবং বিধিবহির্ভূত সম্মান ও সুযোগ দিতে অস্বীকার করলেই রাষ্ট্রীয় কর্তব্য পালনে নিয়োজিত কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হাতে হেনস্তা ও নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। মাঠ প্রশাসন পর্যায়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।’
‘এ প্রসঙ্গে আমি বিশেষ করে আমার নির্বাচনী এলাকায় ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম রকিব হায়দারকে সম্প্রতি পিটিয়ে আহত করার ঘটনাটির কথা উল্লেখ করতে চাই। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে তাকে সরকারি কর্তব্য পালনরত অবস্থায় প্রকাশ্যে মারধর করে আহত করা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবাধে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন এখন কতটা অসম্ভব ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, এই ঘটনা তার এক জ্বলন্ত প্রমাণ,’ যোগ করেন তিনি।
সারাদেশে এই ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনো ঘটনা নিয়ে বেশি তোলপাড় হলে চোখে ধুলা দেওয়ার জন্য সাময়িক কিছু পদক্ষেপ নিয়ে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো প্রতিকার বা সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। ফাঁক-ফোকরে শাসক দলের কোনো নেতাকর্মী আদালত থেকে দোষী সাব্যস্ত হলেও বিশেষ অনুকম্পায় তাদের মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আওয়ামী নেতাকর্মীরাও ছাড়া পেয়ে নতুন নতুন ভয়ঙ্কর অপরাধ সংঘটিত করছে। অপরদিকে বিনা দোষে মিথ্যা মামলায় বিরোধী দলের অগণিত নেতাকর্মী ও সাধারণ নাগরিকরা দুঃসহ নিপীড়ন ভোগ করছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘ক্ষমতার অবৈধ দখলদারিত্ব যেন শাসকগোষ্ঠীকে স্বেচ্ছাচারিতার অবাধ ছাড়পত্র দিয়েছে। তারা দেশকে এক অসভ্যতার অন্ধকারে ডুবিয়ে দিচ্ছে।’
পরশুরামের ইউএনও’র ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এমনটাও উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া। দ্য রিপোর্ট
পাঠকের মতামত: