ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

সেই হাওয়া ভবন এখন

বহুল আলোচিত-সমালোচিত সেই ‘হাওয়া ভবন’ এখন আর নেই। এক সময়ের রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ানো বনানীর সেই ১৩ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর বাড়িটিতে এখন পিনপতন নীরবতা। সেই সড়কে নেই কোনো কোলাহল। সাড়ে পাঁচ কাঠা জমির ওপর দ্বিতল সেই হাওয়া ভবন ভেঙে এখন তৈরি করা হয়েছে নয়তলা ভবন। ভবনটির মালিক আমেরিকা প্রবাসী মিসেস হুয়ারুন আহমেদ ও আশেক আহমেদ। হুয়ারুন থেকেই ‘হাওয়া’ নামকরণ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। অবশ্য এখন ভবন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড (বিটিআই) ভবনটির নাম দিয়েছে ‘অ্যাজোর’। গত সোমবার বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি টাইলসে দৃষ্টিনন্দিত ভবনটির বেইজমেন্টসহ নয়তলা সম্পন্ন করা হয়েছে। ভবনের সামনে নামফলকে অ্যাজোর নামটির শুধু ‘এ ও জেড’ দুটি অক্ষর রয়েছে। বাকিগুলো দেখা যায়নি। ভবনটির গেটে এনায়েত নামে একজন নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। তার গায়ে বিটিআইয়ের ব্যাজ রয়েছে। অ্যাজোরের বাকি অক্ষরগুলো কই জানতে চাইলে এনায়েত বলেন, ‘এটা কে বা কারা ভেঙে ফেলেছে জানি না। আমি সব সময় উিউটি করি না। ’

ভবনটির সামনে সেই আগের নারিকেল গাছটি এখনো রয়েছে। বেইজমেন্টে গাড়ি পার্কের ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে ভবনটির আশপাশে এখন আর আগের মতো ভিড় নেই। নিরাপত্তারক্ষী জানান, ভবনটির নাম এক সময় হাওয়া ভবন ছিল বলে তিনি শুনেছেন। বাড়ির মালিক ভবনে থাকেন না বলেও জানান তিনি। সূত্রমতে, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন বিএনপি নেতা আলী আসগর লবী হাওয়া ভবন ভাড়া নেন। পরে এখানে নিয়মিত বসা শুরু করেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া ওই ভবনে নিয়মিত দেখা যেত তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, সাবেক ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম বকুল, ডা. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল, আশিক ইসলাম, মিয়া নুরুদ্দিন অপু, বগুড়ার সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর ছেলে জয়, কামরুল ইসলাম, অমিতাভ সিরাজসহ আরও বেশ কয়েকজন তরুণ। ২০০১ সালে দলীয় মনোনয়নসহ পরবর্তীতে বিএনপির রাজনৈতিক সব কর্মকাণ্ড এখান থেকেই পরিচালিত হয়। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমান ‘হাওয়া ভবন’ থেকেই দল পরিচালনা করেন। এরপর থেকেই মূলত নানা কারণে আলোচনা-সমালোচনায় পড়ে ওই ‘হাওয়া ভবন’। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ওই হাওয়া ভবনে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটারসহ নানা সামগ্রী জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর থেকেই মূলত ওই ভবনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, হাওয়া ভবন ভেঙে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে নতুন করে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হতে সময় লাগে প্রায় ২ বছর। বিটিআইয়ের সেলস কর্মকর্তারা জানান, ভবনটির তিন, পাঁচ ও সাততলার কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। দোতলা, চারতলা ও আটতলায় কয়েকটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছেন বাড়ির মালিক। এ ছাড়া আটতলায় একাংশে বাড়ির মালিকের এক ভাই থাকেন বলেও জানা গেছে। রাজউক অনুমোদিত এক স্মারকে উল্লেখ রয়েছে, অ-অ ২/বি, আর তসি ১১৪৫/২৯৬/১১৩৭২২ ভবনটির মালিক মিসেস হুয়ারুন আহমেদ ও আশেক আহমেদ। জমির স্থান-আর এস দাগ নং-৫৮৯। প্লট-৫৩, রোড-১৩ ব্লক-ডি। জমির পরিমাণ সাড়ে পাঁচ কাঠা। নির্মাণ কাজ শুরু জানুয়ারি ২০১১, শেষ ডিসেম্বর-২০১২। ভবনের আশপাশের বাসিন্দারা জানান, ভবনটি নির্মাণের সময় তারা বাড়ির মালিককে দু-একবার দেখতে পেয়েছেন। বাড়ি নির্মাণ শেষ হওয়ায় ভবনটিতে নতুন বাসিন্দা উঠেছেন। অনেকেই জানেন না, ভবনটির নাম হাওয়া ভবন ছিল। বিটিআই কর্তৃপক্ষ ভবনটির সার্বিক বিষয় দেখভাল করছেন বলেও জানান তারা।

– See more at: http://www.bd-pratidin.com/first-page/2017/06/01/236546#sthash.lMI2ZPXP.dpuf
hawabঅনলাইন ডেস্ক :::

বহুল আলোচিত-সমালোচিত সেই ‘হাওয়া ভবন’ এখন আর নেই। এক সময়ের রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ানো বনানীর সেই ১৩ নম্বর সড়কের ৫৩ নম্বর বাড়িটিতে এখন পিনপতন নীরবতা। সেই সড়কে নেই কোনো কোলাহল। সাড়ে পাঁচ কাঠা জমির ওপর দ্বিতল সেই হাওয়া ভবন ভেঙে এখন তৈরি করা হয়েছে নয়তলা ভবন। ভবনটির মালিক আমেরিকা প্রবাসী মিসেস হুয়ারুন আহমেদ ও আশেক আহমেদ। হুয়ারুন থেকেই ‘হাওয়া’ নামকরণ করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। অবশ্য এখন ভবন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড (বিটিআই) ভবনটির নাম দিয়েছে ‘অ্যাজোর’। গত সোমবার বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি টাইলসে দৃষ্টিনন্দিত ভবনটির বেইজমেন্টসহ নয়তলা সম্পন্ন করা হয়েছে। ভবনের সামনে নামফলকে অ্যাজোর নামটির শুধু ‘এ ও জেড’ দুটি অক্ষর রয়েছে। বাকিগুলো দেখা যায়নি। ভবনটির গেটে এনায়েত নামে একজন নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। তার গায়ে বিটিআইয়ের ব্যাজ রয়েছে। অ্যাজোরের বাকি অক্ষরগুলো কই জানতে চাইলে এনায়েত বলেন, ‘এটা কে বা কারা ভেঙে ফেলেছে জানি না। আমি সব সময় উিউটি করি না। ’

 

ভবনটির সামনে সেই আগের নারিকেল গাছটি এখনো রয়েছে। বেইজমেন্টে গাড়ি পার্কের ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে ভবনটির আশপাশে এখন আর আগের মতো ভিড় নেই। নিরাপত্তারক্ষী জানান, ভবনটির নাম এক সময় হাওয়া ভবন ছিল বলে তিনি শুনেছেন। বাড়ির মালিক ভবনে থাকেন না বলেও জানান তিনি। সূত্রমতে, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন বিএনপি নেতা আলী আসগর লবী হাওয়া ভবন ভাড়া নেন। পরে এখানে নিয়মিত বসা শুরু করেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া ওই ভবনে নিয়মিত দেখা যেত তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুন, সাবেক ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম বকুল, ডা. ফিরোজ মাহমুদ ইকবাল, আশিক ইসলাম, মিয়া নুরুদ্দিন অপু, বগুড়ার সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুর ছেলে জয়, কামরুল ইসলাম, অমিতাভ সিরাজসহ আরও বেশ কয়েকজন তরুণ। ২০০১ সালে দলীয় মনোনয়নসহ পরবর্তীতে বিএনপির রাজনৈতিক সব কর্মকাণ্ড এখান থেকেই পরিচালিত হয়। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তারেক রহমান ‘হাওয়া ভবন’ থেকেই দল পরিচালনা করেন। এরপর থেকেই মূলত নানা কারণে আলোচনা-সমালোচনায় পড়ে ওই ‘হাওয়া ভবন’। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ওই হাওয়া ভবনে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটারসহ নানা সামগ্রী জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর থেকেই মূলত ওই ভবনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, হাওয়া ভবন ভেঙে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে নতুন করে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হতে সময় লাগে প্রায় ২ বছর। বিটিআইয়ের সেলস কর্মকর্তারা জানান, ভবনটির তিন, পাঁচ ও সাততলার কয়েকটি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। দোতলা, চারতলা ও আটতলায় কয়েকটি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছেন বাড়ির মালিক। এ ছাড়া আটতলায় একাংশে বাড়ির মালিকের এক ভাই থাকেন বলেও জানা গেছে। রাজউক অনুমোদিত এক স্মারকে উল্লেখ রয়েছে, অ-অ ২/বি, আর তসি ১১৪৫/২৯৬/১১৩৭২২ ভবনটির মালিক মিসেস হুয়ারুন আহমেদ ও আশেক আহমেদ। জমির স্থান-আর এস দাগ নং-৫৮৯। প্লট-৫৩, রোড-১৩ ব্লক-ডি। জমির পরিমাণ সাড়ে পাঁচ কাঠা। নির্মাণ কাজ শুরু জানুয়ারি ২০১১, শেষ ডিসেম্বর-২০১২। ভবনের আশপাশের বাসিন্দারা জানান, ভবনটি নির্মাণের সময় তারা বাড়ির মালিককে দু-একবার দেখতে পেয়েছেন। বাড়ি নির্মাণ শেষ হওয়ায় ভবনটিতে নতুন বাসিন্দা উঠেছেন। অনেকেই জানেন না, ভবনটির নাম হাওয়া ভবন ছিল। বিটিআই কর্তৃপক্ষ ভবনটির সার্বিক বিষয় দেখভাল করছেন বলেও জানান তারা। বাংলাদেশ প্রতিদিন

পাঠকের মতামত: