অনলাইন ডেস্ক ::
টানা দ্বিতীয়বারের মতো এবারও সার্ক শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। যেসব আলামত দেখা যাচ্ছে তাতে সম্মেলন না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। প্রতি বছর নভেম্বরে এ সম্মেলন হয়ে থাকে। এখন সেপ্টেম্বরের প্রায় শেষ। হাতে সময় মাত্র একমাস। কিন্তু এখনও এ নিয়ে কোনো তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে না। পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে এমন অভিযোগে গত বছর সার্ক শীর্ষ সম্মেলন ভন্ডুল হয়ে যায়। কিন্তু এবারও পরিণতি একই রকম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন খবর দিয়েছে ভারতের অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া। এতে সাংবাদিক ইন্দ্রানি বাগচি লিখেছেন, টানা দ্বিতীয় বছরের মতো এবারও সার্ক শীর্ষ সম্মেলন না-ও হতে পারে। বাংলাদেশ, ভারত ও আফগানিস্তান গত বছর সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকে। এ দেশগুলোর অভিযোগ সদস্য দেশ পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে। তার প্রভাব পড়ছে এ তিনটি দেশে। এ অভিযোগে তারা সম্মেলনে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকায় ২০১৬ সালের সম্মেলন ভন্ডুল হয়ে যায়। ওই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে। এবারও সম্মেলনে ভারতের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি সাক্ষাত করেছেন সার্কভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে। সেখানেই তিনি ভারতের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। এবার সম্মেলন হচ্ছে না তার পক্ষে এটাই বড় প্রমাণ। উল্লেখ্য, সার্কে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখে ভারত। সেই ভারতই যদি এমন কথা বলে তাহলে সম্মেলন নিয়ে আশাবাদী হওয়ার জায়গা থাকে না। এখানে উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক একটি বড় ফ্যাক্টর। এ সম্পর্কের বড় একটি প্রভাব রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ সংগঠনটিতে। ইন্দ্রানি বাগচি লিখেছেন, সুষমা স্বরাচ সার্ক সম্মেলন হচ্ছে না বা হবে না এমনটা নিশ্চিত করেন নি। কিন্তু তিনি এক্ষেত্রে সন্ত্রাস দূরীকরণকে প্রধান ধর্তব্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক সমৃদ্ধি, সংযুক্তি ও সহযোগিকা তখনই হতে পারে যখন পরিবেশ থাকে শান্ত ও নিরাপদ। কিন্তু তা এখনও এ অঞ্চলে মারাত্মক ঝুঁকিতে। আঞ্চলিক ভাবে আমাদেরকে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন হলো, সব রকম সন্ত্রাসকে নির্মূল করা। এক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য থাকতে পারে না। সুষমা স্বরাজ আরো বলেছেন, মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা, বাণিজ্যিক কোনো চুক্তি বাদ রেখে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সার্ক। সার্কের অধীনে ভারত যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে তিনি সেসব তুলে ধরেন। সুষমা বলেন, এ বছর মে মাসে সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এটাই এ ধরনের প্রথম উদ্যোগ। এতে রয়েছে বিস্তৃত এপ্লিকেশন। তা এ অঞ্চলের বৃহৎ জনগোষ্ঠী ব্যবহার করে জীবনের উন্নতি ঘটাতে পারবে।
ইন্দ্রানি লিখেছেন, সার্কের পরিবর্তে ভারত নতুন শক্তি নিয়ে নজর দিয়েছে বিমসটেকে। এতে যোগ দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সব দেশ। এতে অনুপস্থিত রয়েছে পাকিস্তান। এটা একটা রহস্য। এর মধ্য দিয়ে সার্ককে কার্যত ‘সার্ক মাইনাস ওয়ান’ সংগঠনে পরিণত করা হয়েছে। উপরন্তু বিবিআইএন (বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্ডিয়া ও নেপাল) নামের সাব-গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে নিজেদেরকে সংযুক্ত করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে রেল ও বিদ্যুত শেয়ারিং করা হবে। সহযোগিতার এক নতুন মডেল হচ্ছে এটি। সূত্র বলেছেন, বর্তমানে সার্কের চেয়ারম্যান হলো নেপাল। তারা আগামী বছর সার্ক শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু তাতেও একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। তা হলো আগামী বছর পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন। ফলে ওই সময়েও সার্ক সম্মেলন করা কঠিন হয়ে পড়বে। তা সত্ত্বেও পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ থেকে সরে আসার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে যাবে ভারত। কারণ, ওই বিষয়টি সার্কের জন্য একটি বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে। আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে
পাঠকের মতামত: