ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

লামায় পাহাড় ধসের ঘটনায় সেনাবাহিনীর ১৮ ইস্ট বেঙ্গলের ভূমিকা প্রশংসনীয়

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::

বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়নে মঙ্গলবার পাহাড় ধসে একই পরিবারে ৩ জন নিহত হয়েছে। টানা বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়া ও লামা হতে সরই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। বৈরী এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় লামা আলীকদম সেনা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান পিএসসি এর নির্দেশে দ্রুত মাঠে নামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী লামা-আলীকদম জোনের ২টি সেনা সদস্যের টিম।

উদ্ধার অভিযানের ১ম টিমে নেতৃত্বে প্রদান করেন মেজর ইসরাফ আহমেদ। প্রথম সেনা টিম প্রচুর বৃষ্টিপাত উপেক্ষা করে লামা-সরই সড়কের বাইশারী ও ডিসি রোড এলাকার বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি অপসারণ করে দ্রুত গাড়ি যোগাযোগ সচল করে এবং পাহাড় ধসের ঘটনায় পৌছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। সেনা সদস্যরা প্রথমে ঘটনাস্থল রেকি করে এবং দুই ঘন্টা ব্যাপী প্রচেষ্টা চালিয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মৃতদের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পরেও দীর্ঘক্ষণ কাজ করে বাড়ির উপরে ধসে পড়া মাটি সরিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ঝুঁকিমুক্ত করেন। উদ্ধার অভিযান চলমান অবস্থায় আলীকদম ১৮ ইস্ট বেঙ্গল এর অধিনায়ক জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মাহাবুবুর রহমান পিএসসি উপ-অধিনায়ক মেজর আব্দুল কাদের সহ সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। জোন কমান্ডারের নেতৃত্বে ২য় টিমও উদ্ধার অভিযানে যুক্ত হয়। উদ্ধার অভিযান শেষে লাশের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর ও দাফন কাপন সম্পন্ন করে সন্ধ্যা ৭টায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সেনাবাহিনী। পরে সেনাবহিনীর পক্ষ থেকে জোন কমান্ডার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে নগদ টাকা ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

সেনাবাহিনীর সাথে উদ্ধার অভিযানে যুক্ত হন লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি, লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা, সরই ইউপি চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা।

সরই ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উল আলম বলেন, মঙ্গলবার লামার সরই এলাকার পাহাড় ধসের ঘটনায় লামা-আলীকদম সেনা জোনের সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। পাহাড়ে যে কোন সমস্যায় আমরা সেনাবাহিনীকে বন্ধুর মত সবসময় পাশে পাই।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় ধসে পড়া মাটি অপসারণ না করলে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্যদের ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌছানো অসম্ভব হত। তিনি লামা-আলীকদম সেনা জোন ১৮ ইস্ট বেঙ্গলকে ধন্যবাদ প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড কালাইয়া পাড়া এলাকায় মঙ্গলবার (৩ জুলাই) বেলা ২টায় পাহাড় ধসে মো. হানিফ (৩০), রাজিয়া বেগম (২৫) ও হালিমা আক্তার (৩) নামে তিনজন নিহত হয়। দুপুরে বাড়ির বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় পাহাড়ের মাটি এসে মাটির ঘরের দেয়ালে চাপ দিলে ঘরের দেয়াল গায়ের উপর পড়ে তিনজন নিহত হয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই সময় ঘরে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যায়।

পাঠকের মতামত: