মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
অপহরণের ১০দিন পর লামা উপজেলায় ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন সাপেরগারা গ্রামের হ্লাসাইং মারমা (১৩) কে ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার এর সহায়তায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ২৪শে মে রাতে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ হয় মেয়েটি। সে হারাকাজা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।
গত ২৪মে মঙ্গলবার বিকালে হ্লাসাই মারমা দাদির বাড়িতে যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী মিজানুর রহমান, পিতাঃ সৈয়দ আহমদ তার ৫/৬ জন বন্ধু-বান্ধব সহ মেয়েটিকে অপহরণ করে। পরেরদিন বুধবার সকালে মেয়েটি বাড়িতে ফিরে না আসলে শুরু হয় খোঁজ। সকাল ৮টার দিকে মেয়েটির কাছ থেকে তার বড় বোনের ফোনে কল আসে। এসময় মেয়েটি বলে তাকে একদল বাঙালি ছেলে আটকে রেখেছে। কিন্তু অনেক খোঁজার পরেও না পাওয়ায় ২৬মে বৃহস্পতিবার মেয়ের বাবা বাদী হয়ে লামা থানায় অপহরণের মামলা করে।
অপহরণের মামলা করায় ও স্থানীয় সাংবাদিকরা সংবাদ মাধ্যমে লেখালেখি করলে টনক নড়ে প্রশাসনের। উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফাঁসিয়াখালী চেয়ারম্যান। এদিকে মারমা তরুণী অপহরণের ঘটনায় ন্যায় বিচার পেতে ও তরুণী উদ্ধারে কয়েকটি উপজাতি সংগঠন মানববন্ধন, স্মারকরিপি প্রদান ও প্রতিবাদ সভা করে। সবদিক দিকে চাপ দেয়া হলে অবশেষে ২রা জুন ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার মিজান ও হ্লাসাইং মারমাকে নিয়ে লামা থানায় হাজির হয়।
এবিষয়ে মেয়েটি থানায় এই প্রতিবেদককে জানায়, সে স্ব-ইচ্ছায় ছেলেটির সাথে গিয়েছে। তাকে অপহরণ করেনি। সে এখন মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে মিজানকে বিবাহ করেছে। এছাড়া সে নিজেকে সাবালিকা দাবী করে বলে আমার জন্মনিবন্ধন মত আমার বয়স ২৩ বছর।
এবিষয়ে মেয়ের বাবা অংছাপ্রু মারমা বলেন, আমার মেয়ের জন্মনিবন্ধনটা ভুল হয়েছিল। সে ৮ম শ্রেণীতে পড়ে। স্কুলের প্রত্যায়ন পত্র ও ৫ম শ্রেণীর পিএসসি সার্টিফিকেট মতে তার বয়স ১৩ বছর। সে নাবালিকা।
এদিকে ২মে বৃহস্পতিবার মেয়েটিকে লামা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নেয়া হলে আদালত মেয়েটির বক্তব্য গ্রহণ করে। সে নিজেকে সাবালিকা দাবি করে মিজানের স্ত্রী বলে জানায়। আদালত ছেলেটিকে জেল হাজতে প্রেরণ করে ও মেয়েকে তার মত অনুসারে তার শুশুর (সৈয়দ আহমদ) বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করে।
পাঠকের মতামত: