কক্সবাজারের রামুতে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ দুই স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। গতকাল শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ১২ টা ৩৮ মিনিটে নিখোঁজ হওয়া আসিফুর রহমান এবং বেলা ২ টা ১৬ মিনিটে আবদুর রহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম থেকে আসা ডুবুরীদল।
নিহত আবদুর রহমান (১৬) দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম উমখালী গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে এবং আসিফুর রহমান আসিফ (১৭) একই ইউনিয়নের ঘাটপাড়া এলাকার বশির আহমদের ছেলে। তারা দুজনই রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশ শ্রেণির ছাত্র।
গতকাল শনিবার বাদে আছর রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিহত আসিফুর রহমান ও আবদুর রহমানের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন, চাকমারকুল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা ফিরোজ আহমদ। জানাযাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম রহিম উল্লাহ, রামু উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান, রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আলী হোসেন, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস ভূট্টো, দক্ষিণ মিঠাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমদ শফি, দক্ষিণ মিঠাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জামাল হোছাইন চৌধুরীসহ সর্বস্তুরের হাজার হাজার জনতা। জানাযায় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, আসিফুর রহমানের চাচা আলী আহমদ এবং আবদুর রহমানের বড় ভাই আবদুল্লাহ আল মামুন। জানাযা শেষে তাদের স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য আগেরদিন শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে চারটায় রামুর চাকমারকুল ইউনিয়নের কলঘর বাজারের পাশে বাঁকখালী নদীর খেয়াঘাটে এ নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ওই স্থানে নদীতে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের দমকল কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালালে তা সফল হয়নি। পরে ওইদিন (শুক্রবার) রাতে চট্টগ্রাম থেকে আসা ডুবুরীদলের সদস্যরা রাতে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে গতকাল শনিবার সকাল থেকে ফের অভিযান শুরু করে নিখোঁজ দুই ছাত্রকে উদ্ধারে সক্ষম হয়।
এদিকে নৌকা ডুবির ঘটনায় দুই মেধাবী শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো রামুতে বিরাজ করছে শোকাবহ পরিবেশ।
নৌকা ডুবির ঘটনায় আহত ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র জিশান জানিয়েছে, তারা একই শ্রেণির ১২ জন শিক্ষার্থী গরু দেখার জন্য কলঘর বাজারে আসছিলো। বাজারের কাছাকাছি এসে বাঁকখালী নদী পার হওয়ার সময় তাদের সাথে আরো কয়েকজন ব্যক্তি জোর করে নৌকা উঠে যান। এতে নৌকাটি নদীর মাঝখানে এসে ডুবে যায়। এসময় অনেকে সাতার কেটে নদীর পাড়ে উঠতে পারলেও সাতার না জানার কারনে নদীতে ডুবে যায় তার দুই সহপাঠি আবদুর রহমান ও আসিফ।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা (স্টেশন অফিসার) আবদুল মজিদ জানিয়েছেন, দূর্ঘটনাস্থলে পানির গভীরতা অনেক বেশী ছিলো। এ কারনে চট্টগ্রাম থেকে ডুবুরী এনে দুই ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: