ঢাকা,রোববার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা আইজিপির

টেকনাফ প্রতিনিধি :::IGP-SAHIDUL-HAQUE

টেকনাফে মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বিপিএম পিপিএম বলেছেন মাদক এবং জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেও ছাড় দেয়া হবে না। সে যেই-ই হউক তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি পুলিশের কোন সদস্য ইয়াবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পুলিশের একার পক্ষে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদককে নির্মূল করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে এসব অপরাধ রুখতে হবে। তিনি মাঠ পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মাদক ও জঙ্গিবাদ বিস্তার রোধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেন। ইয়াবা চোরাকারবারী ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দেশ এবং জাতির জন্য হুমকি স্বরূপ। সবাইকে সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের দমন করতে হবে। যারা ইয়াবাসহ মাদক চোরাচালানে সংশ্লিষ্ট রয়েছে তাদের এসব চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এদেশে এসব অপরাধীদের স্থান হবেনা। পুরো বাঙ্গালী জাতি আজ নতুন করে স্বাধীনতার চেতনা বুকে ধারণ করে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে। সবাইকে এই যুদ্ধের সর্ঙ্গী হতে হবে। টেকনাফের কলংক ইয়াবা ও চোরাচালান দমন করতে যতদূর যেতে হবে আমরা পুলিশসহ আইন-শৃংখলা বাহিনী ততদূর যেতে প্রস্তুত রয়েছি। এরপর টেকনাফবাসীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন আপনারা যদি ইয়াবা বিরোধী হয়ে থাকেন আসন্ন ঈদে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বয়কট করে তাদের বাসায় যাতায়াত বন্ধ করে দেখিয়ে দিন তারা সমাজে কতটা ঘৃণার পাত্র। তিনি আরও বলেন পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু মিয়ানমারের জনগণ তা সেবন করে না। এসব ইয়াবা সেবন করে বাংলাদেশের মানুষ। তাই, তারা কৌশলে এসব ইয়াবা বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করে দিচ্ছে। কারণ এটি বাংলাদেশের মানুষের মেধা ধ্বংস করার একটি ষড়যন্ত্র। জিহাদের নামে কিছু ইসলামী লেবাসধারী বেহেস্তের কথা বলে মানুষকে জঙ্গিবাদে জড়ানো হচ্ছে। পরে এসব জঙ্গিরা বোমা মেরে নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে। বর্তমানে এসব জঙ্গিরা মফস্বল এলাকায় ঢুকে পড়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি আরও বলেন একদিকে জঙ্গিরা মানুষ মারছে, অন্যদিকে ইয়াবা পুরো সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই এসবের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমি টেকনাফে ভ্রমণে আসিনি, মাদকের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি, দেশাতœবোধ জাগ্রত করতে এসেছি।
২৪ মে বিকাল সোয়া ৪টায় টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে মাদক ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশ জেলা পুলিশ সুপার ডঃ একেএম ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পুলিশের এএসপি সৌমিত্র চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্টিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল একেএম শহীদুল ইসলাম বিপিএম পিপিএম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনির-উজ-জামান বিপিএম পিপিএম, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন, টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এসএম আরিফুর রহমান। বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ শাহজাহান, জেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি এডভোকেট আমজাদ হোসেন, টেকনাফ উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম প্রমুখ।
এর আগে কক্সবাজার থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে টেকনাফ আসার পথে দুপুরে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরে নবনির্মিত তদন্ত কেন্দ্র ফিতা কেটে আনুষ্টানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক বিপিএম পিপিএম। সফরসঙ্গীসহ তিনি তদন্ত কেন্দ্রে পৌঁছলে জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, স্থানীয় নেতাকর্মী ও কমিউনিটি পুলিশিং এর নেতৃবৃন্দরা ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহবায়ক আব্দুল হক, বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওঃ আজিজ উদ্দিন ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ শহীদ উল্লাহ বক্তব্য রাখেন। এরপর তিনি রেস্ট হাউসে অবস্থান নিয়ে দুপুরের খাবার ও বিশ্রাম শেষে বিকাল ৪টার দিকে টেকনাফ মডেল থানায় পৌঁছলে ওসি মাইন উদ্দিন খানের নেতৃত্বে গার্ড অব অনার ও সালাম প্রদান করা হয়। সালাম গ্রহণ শেষে তিনি ফিতা কেটে নবনির্মিত টেকনাফ মডেল থানা ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

পাঠকের মতামত: