ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘মরিও তো না’

ুুুুুুমোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

গ্রীষ্মের কাঠ ফাঁটা রোদ। অতি মাত্রার গরমে চারদিকের গাছ পালা ও প্রাণীকূল হাঁপিয়ে উঠেছে। নদী, খাল, ঝিরি শুকিয়ে মরুভূমিতে রুপ নিয়েছে পাহাড়ি অঞ্চল। সবাই যখন একটু শীতল পরশ পেতে সূর্যের রশ্মির আড়াতে যেতে ব্যস্ত তখনই এই তক্ত রোদ মাথায় নিয়ে পাহাড়ে জুম চাষের কাজ করছে রিমা বেগম(৩০)।

বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দূর্গম ছলুম ঝিরি এলাকায় দুপুর ১২টায় তক্ত রোদে নিজের জুম চাষে নিয়োজিত এক নারী শ্রমিকের কষ্ঠের আহাজারি “মরিও তো না”। নিউজের তথ্য অনুসন্ধানে যাওয়া একদল সাংবাদিক পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। এই সময় পাশে পাহাড়ে কর্মরত রিমা বেগম কে দেখে কেমন আছেন প্রশ্ন করতে এই উত্তর দেয় সে।

বিচলিত হয়ে তার কষ্টের কারণ জানতে চাইলে রিমা জানায়, স্বামী মোঃ ওছমান ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড ছলুম ঝিরি এলাকায় খামার বাড়ি করে বসবাস করে তারা। এক মুঠো ভাত জোগাড় করতে তার পরিবারকে এই জীবন যুদ্ধ করতে হয় সব সময়। নিজের জায়গা জমি নেই। তাই এই এলাকার মহাজন চুং নাগ মুরুং এর পাহাড় বর্গা নিয়ে জুম করে করে রিমা। স্বামী ও তার পরিশ্রমের আয় দিয়ে চলে সংসার।

রিমা বলেন, নিজে তো মানুষ হইলাম না। কষ্ট লাগে যখন দেখি নিজের অভাবের কারনে সন্তান গুলোকে মানুষ করতে পারবনা। এই পাহাড়ে থাকলে কেমনে তারা মানুষ হইব। আর শহরে গেলে থাকুম কই খামু কি ?

দূর্গমে বসবাস করা পাহাড়ি বাঙ্গালী সবারই একই সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা। এক রিমার গল্প এতটা কষ্ট ! সব রিমার গল্প শুনলে মানবতার খোলসটা গায়ে থাকবে কি আমাদের ? বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও দেশ এগিয়ে যাওয়ার গল্পটা যতটা সত্যি তেমনি ততটা সত্যি কিছু মানুষ পিছিয়ে পড়ার গল্পটাও। রিমার স্বপ্ন তার সন্তানরা মানুষ হউক। সেই সুযোগ কই ? মৌলিক অধিকার গুলো কি পাবে দূর্গম পাহাড়ে বসবাস করা জনগোষ্ঠী। যাদের বাদ দিয়ে কখনও রচিত হবেনা রুপকল্প ও মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার স্বপ্নটা।

পাঠকের মতামত: