ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বান্দরবানে দূর্গম অঞ্চলে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট

qqqqqমোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

আমাদের কারো বাসায় খাবার নেই। আমরা কিভাবে বাচঁবো ? অনেকে ভাতের অভাবে জংলি আলু, মিষ্টি কুমড়া, আলেয়া (কলা গাছের কান্ড) খেয়ে ক্ষুধা মেটালেও বেশির ভাগ মানুষ রয়েছেন অনাহারে। বান্দরবান জেলার চরম খাদ্য সংকট কবলিত উপজেলা থানচির হৈয়ুক খুমি পাড়ার বৃদ্ধ কারবারী হৈয়ুক খুমি। বিগত বছরের বৈরি আবহাওয়ায় জুম চাষে ভাল ফলন না হওয়ায় চলতি বছরের মার্চ থেকে খাদ্য সংকটে পড়েছে বান্দরবানের সব কয়টি উপজেলার দুর্গম এলাকার এই অধিবাসীরা।

থানচির রেমাক্রী ইউনিয়নের যোগী চন্দ্র পাড়ার হাতিরাম জানান, তাদের ঘরে খাবার না থাকায় ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে তিনদিন না খেয়ে আছে। জানা যায়, থানচির দুর্গম রেমাক্রি, তিন্দু, ছোট মদক, বড় মদক ও সাঙ্গু রিজার্ভ ফরেস্ট; মূলত এসব এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় ত্রিপুরা, ম্রো ও মারমা সম্প্রদায়ের বাস। পাহাড়ে জুম চাষের মাধ্যমে তারা সারা বছরের ধান সংগ্রহ করে রাখেন। কোনও কারণে ভালো ফলন না হলে, ইঁদুরের আক্রমন ঘটলে বা বন্যা দেখা দিলে বছরের খাদ্য মজুদ করা সম্ভব হয় না।

থানচি রেমাক্রি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাং চং ম্রো জানান, সাঙ্গু মৌজার বেশ কয়েকটি পাড়ার কারো কাছে খাবার নেই। না খেতে পেয়ে অনাহারে মানুষ গুলো মানবতার জীবন যাপন করছে।

থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লা চিং মার্মা বলেন, বিগত বছরে জুমে ভাল ফসল না হওয়ায় খাদ্য অভাব দেখা দিয়েছে। দ্রুত এসব এলাকায় পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ করা উচিত।

তিন্দু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মং প্রু অং মার্মা জানান, দূর্গম এলাকা হওয়ায় ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে আমার ইউনিয়নের প্রায় ৭শত পরিবার খাদ্য সংকটে ভুগছে। এভাবে অনাহারে থাকলে খাদ্যের অভাবে মানুষ মারাও যেতে পারে।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, এসব এলাকার ৯০ শতাংশ মানুষ জুমচাষে নির্ভরশীল। তাই জুমধান ভাল না হওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পরিবার।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক সাংবাদিককে জানান, পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য শস্য আছে। তাই দুর্গত এলাকায় জরুরি খাদ্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। খাদ্য সংকট চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত থাকতে পারে বলে সরকারকে জানানো হয়েছে।

চলমান সংকট মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরীভাবে দূর্গত এলাকার ৮শত পরিবারের জন্য ১৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: