বিডি-জার্নাল :: বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতে নতুন গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন পদ্ধতিতে ৯০ নম্বরের বেশি পেলে গ্রেড হবে ‘এক্সিলেন্ট’।
গ্রেডিং পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রস্তাবনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই প্রক্রিয়া আরো বস্তুনিষ্ঠ করতেই এই নতুন গ্রেডিং পদ্ধতি চালুর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কারণ বর্তমানে ৭৯ থেকে মাত্র ১ নম্বর ওপরে ৮০ নম্বর পেলে ‘এ+’ ধরা হয়, কিন্তু যে শিক্ষার্থী ৮০-এর ওপরে অন্তত আরো ১০ নম্বর বেশি পেয়ে ৯০ পাচ্ছে এমনকি ৯০ থেকে ১০০-এর মধ্যে নম্বর পাচ্ছে, তাকেও ‘এ+’ ই ধরা হচ্ছে। এতে তার মেধার মূল্যায়ন সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেই আমরা মনে করি। ফলে ৯০ থেকে ১০০-এর মধ্যে নম্বর পেলে ওই শিক্ষার্থীকে নতুন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুযায়ী ‘এক্সিলেন্ট’ মার্ক বলা যেতে পারে।
মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, বর্তমানের গ্রেডিং পদ্ধতির সঙ্গে বিশ্বের অনেক দেশের গ্রেডিং পদ্ধতির মিল নেই। দেশের শিক্ষার্থীরা যখন বিদেশি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে যায়, তখন তারা সমস্যায় পড়ে। এ কারণেই এই গ্রেডিং পদ্ধতি পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা চলছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে বিশেষ বিবেচনায় রয়েছে ৮০ থেকে ১০০ নম্বরের গ্রেডিং পদ্ধতিটি। একজন শিক্ষার্থী ২০ নম্বরের ব্যবধান থাকলেও এই কাতারের সবাইকে এ+ দেওয়া হয়। যারা ৯০-এর ওপরে নম্বর পায় তাদের আলাদা ক্যাটাগরিতে ভাবা উচিত। এ ক্ষেত্রে ৯০-এর ওপরে নম্বর পেলে ‘এক্সেলিন্ট’ গ্রেড হবে বলে আমরা প্রস্তাব করতে যাচ্ছি।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, ১২ জুন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানদের মতবিনিময় সভায় গ্রেড পরিবর্তনের প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। নতুন গ্রেড পদ্ধতির খসড়া তৈরি করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। ইতিমধ্যে আমরা খসড়া তৈরি করেছি। ২৩ জুন শিক্ষামন্ত্রীর হাতে এই প্রস্তাব তুলে দেওয়া হবে। তিনি অনুমোদন দিলে পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নতুন গ্রেডিং পদ্ধতি বাস্তবায়নে নতুন প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, ৮০-এর নিচে প্রতি ৫ নম্বর ব্যবধানে গ্রেড পরিবর্তন করা হবে। যেমন ৭৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত ‘এ’, ৭০ থেকে ৭৪ নম্বর পর্যন্ত ‘এ’ মাইনাস, এভাবে প্রতি ৫ নম্বর ব্যবধানে ‘বি’ প্লাস, ‘বি’, ‘বি’ মাইনাস, ‘সি’ প্লাস, ‘সি’, ‘সি’ মাইনাস, ‘ডি’ প্লাস ‘ডি’, ‘ডি’ মাইনাস, ‘ই’ প্লাস, ‘ই’, ও ‘ই’ মাইনাস গ্রেড দেওয়া হবে। ফেল হিসেবে ‘এফ’ গ্রেড থাকবে। সর্বনিম্ন পাস নম্বর ৩৩ অথবা ৪০ নির্ধারণ করা হতে পারে। তবে সর্বনিম্ন পাস নম্বর ৩৩ রাখার পক্ষে অধিকাংশ বোর্ড চেয়ারম্যান মতামত দিয়েছেন।
জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতির পরিবর্তন করে জিপিএ-৫ থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ গ্রেড হবে জিপিএ-৪। ৯০ নম্বরের বেশি পেলে নতুন গ্রেড হবে ‘এক্সিলেন্ট’। ৮০ থেকে ৮৯ নম্বর পেলে এ+।
পাঠকের মতামত: