নিজস্ব প্রতিবেদক :: মিল্টন সরকার ওরফে মিল্টন কুমার সাহা ওরফে মো. সোহেল। কখনও মাথায় টুপি দিয়ে পাঞ্জাবি পরে মুসল্লির বেশ নেয়। কখনও তরুণ বয়সী সাজে। নগরীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ২৩টি। চোখের পলকে মোটরসাইকেল চুরিতে জুড়ি নেই তার। একাধিকবার জেল খাটলেও ছাড়েনি মোটরসাইকেল চুরি।
শুক্রবার ও গতকাল শনিবার দুই দিনের টানা অভিযানে চট্টগ্রাম মহানগরী, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রামে টানা অভিযান চালিয়ে মিল্টনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নগরীর আকবর শাহ থানা পুলিশ এই অভিযান পরিচালনা করে। তাদের হেফাজত থেকে চুরি করা ছয়টি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া মিল্টনসহ দুই দলনেতা পাঁচ মাস আগে জেল থেকে জামিনে বের হয়ে আবার চুরির পেশায় ফিরে যায়। গত মাসে তাদের নেতৃত্বে নগরীতে অন্তত ১০০ মোটরসাইকেল চুরির তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার বাকি ৫ জন হলো- মেহেদী হাসান (২০), মামুন আলম (৩৪), জালাল উদ্দিন (২২), ইসমাইল হোসেন (২৮) এবং মহিন উদ্দিন সুমন (১৮)।
আকবর শাহ থানার পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, গত ২৬ এপ্রিল আকবর শাহ থানা এলাকা থেকে চুরি হওয়া একটি মোটরসাইকেলের খোঁজ করতে গিয়ে বিভিন্নসূত্রে এই চোর চক্রের সন্ধান পাই। এরপর আকবর শাহ থানার সিডিএ এলাকা থেকে মিল্টনকে গ্রেপ্তার করি। তার দেওয়া তথ্যে কুমিল্লা থেকে বাকি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে আমরা মোট ছয়টি মোটরসাইকেল পেয়েছি, যেগুলো নগরী থেকে চুরি করে কুমিল্লায় নিয়ে গিয়েছিল। ছয়জনের মধ্যে মিল্টন ও মেহেদী হচ্ছে দলনেতা। তাদের অধীনে বাকিরা কাজ করে।
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে মেহেদী হাসানের নিজস্ব গ্যারেজ আছে। মোটরসাইকেল চুরি করে সেই গ্যারেজে নেওয়া হয়। নিজ গ্যারেজে রেখে গাড়ির রঙ, তেলের ট্যাঙ্কি পরিবর্তন করে এবং ইঞ্জিন ও চ্যাসিস নম্বর ঘষামাজা করে মামুনকে বিক্রি করতে দেয়।
ওসি ওয়ালি উদ্দিন বলেন, মিল্টনের বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা আছে। মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ১৩টি ও মামুনের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা আছে। এর অধিকাংশই মোটরসাইকেল চুরির। মিল্টন ও মেহেদী একাধিক মামলায় একইসঙ্গে আসামি। গত বছর মোটর সাইকেল চুরির এক মামলায় কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। গত জানুয়ারিতে দু’জনই জামিনে ছাড়া পায়। এরপর আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, গত চার মাসে তারা নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০০ মোটরসাইকেল চুরি করেছে। চট্টগ্রাম শহর ছাড়া তারা অন্য কোথাও সেভাবে মোটরসাইকেল চুরি করে না।
পাঠকের মতামত: