অনলাইন ডেস্ক :::
গ্রেফতার বাণিজ্য, হয়রানি, হুমকিসহ নানা অভিযোগে আলোচিত রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) সাজ্জাদ রোমান। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তিনি প্রতি মাসে অন্তত ৩০ লাখ টাকা মাসোয়ারা আদায় করছেন বলেও জানা গেছে। সহকর্মীদের কাছেও তিনি মূর্তিমান আতঙ্ক। টার্গেটকৃত টাকা আদায়ে ব্যর্থ হলে এসআইদের ডিউটি বণ্টনের নামে কঠিন শাস্তি দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান। সূত্র জানায়, আসামি আটক করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইন্সপেক্টর সাজ্জাদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে টাকা দিতে না পারা লোকজন নাজেহাল হচ্ছে নানাভাবে। গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ কর্মকর্তা ভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অপরাধমূলক ঘটনা বেড়ে গেছে বলে অনেকে মনে করছেন। রূপগঞ্জ থানায় যোগদানের পরপরই ইন্সপেক্টর সাজ্জাদ মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী, ডাকাতসহ অপরাধীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। মাসোয়ারার বিনিময়ে তাদের অপরাধে অনেকটাই উৎসাহ দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা। তার আচরণে থানায় কর্মরত কনস্টেবল থেকে শুরু করে এসআই ও এএসআইরা ক্ষুব্ধ হলেও প্রতিবাদ করতে পারেন না। ঊর্ধ্বতনদের ম্যানেজ করেই তিনি চলেন। থানার যেসব এসআই বেশি অর্থ আদায় করে দিতে পারেন, তাদের কম ডিউটি দিয়ে তিনি আরামে থাকার ব্যবস্থা করেন। আর যারা মাসোয়ারাসহ অর্থ আদায়ে ব্যর্থ তাদের রাতদিন ডিউটি দিয়ে হয়রানি করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পুলিশ সদস্য জানান, সাজ্জাদ হোসেন নিজে রাতের ডিউটি বণ্টন করেন। তখন অফিসারদের বিভিন্ন টার্গেট দেওয়া হয়। লোকজন ধরে কত টাকায় ছাড়া যাবে সে বিষয় জানিয়ে দেন। অফিসাররা এই টার্গেট পূরণ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে অহরহ হয়রানি করছেন। সূত্র মতে, ইন্সপেক্টর সাজ্জাদ যেসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসোয়ারা আদায় করেন তাদের একটি তালিকা রয়েছে। সে তালিকায় আছে কালাদি এলাকার ছলিম উদ্দিন ছলুর ছেলে আমান উল্লাহ, ফজলুল হকের ছেলে নাজমুল হাসান, সিদ্দিক হাজির ছেলে আলতাফ হোসেন, দড়িকান্দি এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে রতন, নাগেরবাগ এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে হাকিম মিয়া, গোলাকান্দাইল দক্ষিণপাড়া এলাকার মহিউদ্দিনের ছেলে তারকাটা আনোয়ার, দড়িকান্দি এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে শাকিল, তাইজুদ্দিনের ছেলে হুমায়ুন, মীরগদাই এলাকার নীল মিয়ার ছেলে মোক্তার হোসেন, বরপা এলাকার আবদুল লতিফের ছেলে অহিদ, তোবারক ভুইয়ার ছেলে তানভির ও নাহিদ, আড়িয়াব এলাকার সাত্তার মিয়ার ছেলে মনজুর হোসেন, নুরুল ইসলামের ছেলে মামুন, আজাদুল্লাহর ছেলে আসাদ, গুতিয়াব এলাকার আহাম্মেদ আলীর ছেলে বেলায়েত, আবদুল রহমানের ছেলে লোকা, আগারপাড়া এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে তারেক, গঙ্গানগর এলাকার জাবু মিয়ার ছেলে বাশমল, বাবুল ও তার স্ত্রী শাহিনুর, গঙ্গানগর উত্তরপাড়া এলাকার শমরের ছেলে ফজল, সুলতানের ছেলে ফটিক, হাটিপাড়া এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে সালাউদ্দিন, আক্কাস আলীর ছেলে সোহেল মিয়া, তারাব এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিন ভুইয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া, নবী হোসেনের স্ত্রী নিলা বেগম, তারাব দক্ষিণপাড়া এলাকার মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আওলাত হোসেন, আগারপাড়া এলাকার মৃত হোসেন আলীর ছেলে আমিন, গুতিয়াব এলাকার তাজউদ্দিনের ছেলে বাচ্চু, জামাল উদ্দিনের ছেলে আওলাদ হোসেন, মুশুরী এলাকার হাকিবুদ্দিনের ছেলে সাইফুল ও দড়িগুতিয়াব এলাকার শাহাদাত হোসেন। এসব মাদক ব্যবসায়ীকে কখনো ধরা হলেও মোটা অঙ্কের উেকাচ নিয়ে থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন। রূপগঞ্জ থানার ওসি ইসমাইল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যেসব অভিযোগ নিয়ে আলোচনা, তা আমার জানা নেই। তদন্ত করে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তখন বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে। ’
পাঠকের মতামত: