আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি :::
বান্দরবানের আলীকদমে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কমূর্সচীর মধ্য দিয়ে ৪৫তম মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রশাসনের উদ্যোগে শুক্রবার সকালে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য কর্মসূচি। রাতে স্মৃতি সৌধে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মূল কেন্দ্রবিন্দু কুচকাওয়াজে প্রথম স্থান অধিকার করে ‘আলীকদম আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ’।
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ১৫ ডিসেম্বর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমুহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকালে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ কালাম, বান্দরবান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা।
পরে মনোমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ, মনোরম ডিসপ্লে, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংর্বধনা, হাসপাতাল ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমুহে বিশেষ প্রার্থনা ও বিকেলে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম পুস্কার হটপট!
বরাবরের মতো মহান বিজয় দিবসে নানা কর্মসূচীতে অন্যতম অংশগ্রহণকারী ছিল উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানসমুহকে পুরস্কার দেয়া হতো ‘ক্রেস্ট’। কিন্তু এবার তা ব্যত্যয় ঘটেছে। ক্রেস্টের বদলে দেওয়া হয়েছে হটপট। এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খিন ওয়ান নু বলেন, ‘প্রথম পুরস্কার হটপট। এটির দাম বেশী। আমরা দামটাকে মূল্য দেব। সময় স্বল্পতার কারণে ক্রেস্ট তৈরী করা যায়নি’।
আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রিন্সিপাল হানি ত্রিপুরা বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট অথবা একটি সনদ দিলে ভালো হতো। আমরা প্রশাসনের কাছে সেভাবেই আশা করবো।
মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনায় ক্ষোভ!
দুপুরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইফতেখারুল ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা, মুক্তিযোদ্ধা জেড এ দিদার হোসেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা জামাল উদ্দন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সমর রঞ্জন বড়–য়া প্রমুখ।
মুক্তিযোদ্ধা দিদার হোসেন অভিযোগ করেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনায় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী উপস্থিত না থাকা দুঃখজনক। এ উপজেলায় সাড়ে তিনমাসের বেশী ইউএনও নেই। অথচ প্রশাসন কিছু করছে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাম্মেলক শুক্রবার রাতে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনায় দু’জন আওয়ামী লীগ নেতা যথাক্রমে জামাল উদ্দিন ও সমর বড়–য়া বক্তব্য রেখেছেন। এছাড়াও অনেক নেতাকর্মী সেখানে ছিল। সুতরাং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উত্থাপিত বক্তব্য সঠিক নয়। তাছাড়া দীর্ঘদিন ইউএনওশূন্য আলীকদমে সকলকে অনেক কিছুই মেনে নিতে হবে।
পাঠকের মতামত: