ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন: ১১ এপ্রিল/২১

নৌকার টিকিট পেতে মরিয়া ৬ নেতার দৌড়ঝাঁপ কেন্দ্রে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। আগামী ১১ এপ্রিল চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কে পাচ্ছেন, এ নিয়ে জেলা সদরসহ চকরিয়া পৌর শহরজুড়ে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা।

জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন ৬ষ্ঠ ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৮ মার্চ, ১৯ মার্চ এসব মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৪ মার্চ ও ১১ এপ্রিল ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে। বিএনপি এবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বলে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা দিয়েছে। তবে অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে অনেকে।

তবে পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছে। বিএনপির একটি সূত্র বলছে, দলীয় সিদ্ধান্ত না থাকলেও সাবেক মেয়র হায়দার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। হায়দার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী হওয়ার রহস্য কয়েকদিন পর খোলাসা হবে।

এদিকে পৌর নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী যাচাই-বাছাই নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই পৌরশহর জুড়ে বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী কি আবারও মনোনয়ন পাচ্ছে, নাকি কেন্দ্র থেকে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। এই নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা ।

ইতোমধ্যে প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরে ৬ জন দলীয় প্রার্থীর নাম পৌঁছে গেছে বলে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফলে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে শুরু হয়েছে তদবীর। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। শেষ পর্যন্ত নৌকার টিকিট কে আনছে তা জানতে কেন্দ্রের ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

পৌরশহরে কয়েকজন ভোটার বলেন, নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে তেমন উত্তাপ নেই। ভোটের পরিবেশ থাকলে ভোট দিতে যাবে, না পরে সিদ্ধান্ত নিবে। মুলত প্রার্থীতা চুড়ান্ত হলে ভোটের যুদ্ধ শুরু হবে। একই সাথে প্রার্থী সমর্থক ভোটাদের মধ্যেও ভোটের আমেজ লক্ষ্য করা যাবে। এখন আগের মতো ভোটের মাঠ নেই। একদলীয় ভোটে ভোটারদের আগ্রহ ভাটা পড়েছে।

সর্বশেষ চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী, আরেক যুগ্ন সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী, সহসভাপতি ওয়ালিদ মিল্টন, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর নাম আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে দলীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

দলীয় সূত্র জানায়, প্রার্থীদের তালিকা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা আসতে পারে বলেও ঢাকার একটি সূত্র জানিয়েছেন।

মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতির কঠিন সময়ে আমি রাজপথে ছিলাম। এক দশক ধরে পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। এবার নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিয়ে মুল্যায়ন করবে বলে আশাবাদী।

চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওয়ালিদ মিল্টন মনোনয়ন পাওয়ার আশা ব্যক্ত করে চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আছি। আশা করছি নেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করবেন।’

চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতির মাধ্যমে দীর্ঘ এক দশক ধরে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্ব পালন করছি। মামলা-হুলিয়া, পরোয়ানা নিয়ে রাজনীতিতে আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করেছি। আশা করি দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে। মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা মেনে নেব।’

চকরিয়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘দলের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। বর্তমান মেয়র হিসেবে দল যদি দল আমাকে আবারও মনোনয়ন দেয়, তাহলে পৌরসভার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। তবে দল যে সিদ্ধান্ত নিবে তা আমি মেনে নিব।’

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন। ৯টি ওয়ার্ডে ১৮টি কেন্দ্রে ১৩৯টি বুথে ভোট গ্রহণ হবে। অনুষ্টিতব্য পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের বর্তমান ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৪৮ হাজার ৭শত ২৪ জন। তৎমধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছে ২৫ হাজার ৮শত ৯৯ ও নারী ভোটার হচ্ছে ২২ হাজার ৮শত ২৫ জন। এখন ভোটারের অপেক্ষার পালা।  কার ভাগ্যেজুটে নৌকার টিকিট।

পাঠকের মতামত: