ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কে হচ্ছেন চকরিয়ায় নৌকার মাঝি?

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: আগামী ১১ এপ্রিল চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন। ৩ মার্চ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিল ঘোষণা দেওয়ার পর মেয়র প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন। কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি। এনিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। চলছে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। দলীয় মনোনয়ন পেতে চলছে জোর লবিং। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা। অন্যান্য দলের তুলনায় আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন। তবে এবারের পৌর নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।

আসন্ন চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা। মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে অনেকেই সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে শুরু করেছেন গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা। বর্তমান পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে মার্চ মাসে। তফসিল ঘোষণার পরপরই প্রচার প্রচারণা বাড়িতে দিয়েছেন প্রার্থীরা। তবে তৃণমূল পর্যায়ে ভোটারদের প্রশ্ন কে পাচ্ছেন নৌকা?
জানা যায়, ৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ১১ এপ্রিল ৬ষ্ঠ ধাপে চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন ভবনে ৭৭ তম কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার তফসিল ঘোষণা করেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৮ মার্চ, মনোনয়পত্র বাছাই ১৯ মার্চ, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৪ মার্চ। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে তফসিল ঘোষণার পর মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন। শুরু করেছেন নির্বাচনী তৎপরতা। ইতিমধ্যে মেয়র ও কাউন্সিলর পদের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। অনেকে গণসংযোগ শুরু করেছেন বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে। মসজিদ মাদ্রাসা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নানা অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন এসব প্রার্থীরা।

নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতারা বেশি তৎপর হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে মেয়র পদে দলের মনোনয়ন পেতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন। অনেকে ঢাকায় অবস্থান করে দলের নীতি নির্ধারক নেতাদের সবুজ সংকেত পাওয়ার চেষ্ঠা করছেন। একই সঙ্গে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন পেতে ঘরোয়া বৈঠকসহ সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে দলের মধ্যে নানামুখী গ্র‍ুপিং-লবিং দেখা যাচ্ছে।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে যারা আলোচনায় রয়েছেন, বর্তমান মেয়র ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওয়ালিদ মিল্টন, সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী ও উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ৬ মেয়র প্রার্থীর নাম কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে পৌরসভায় কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণসংযোগ শুরু করেছেন। প্রার্থীদের তালিকায় বর্তমান কাউন্সিলরের পাশাপাশি সাবেক কাউন্সিলর ও অন্যান্য নতুন মুখও রয়েছেন। এসব প্রার্থী আওয়ামী লীগ দলের সমর্থন পেতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অপরদিকে বিএনপি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার। তিনিও মাঠে ময়দানে সভা-সমাবেশে ছিলেন এতোদিন। প্রার্থী হিসেবে মতবিনিময় সভাও করেছেন। হঠাৎ করে পৌর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী দেবে না বলে গুঞ্জন উঠেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী ইউপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে ঘোষণা দেওয়ার পর নেতাকর্মীরা অনেকটা নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। এরপর থেকে মেয়র প্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দার প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জানান বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী।

এবারের পৌর নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ার আলম। তিনি মাঠে ময়দানে না থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ ইলিয়াছ। জাতীয় পার্টি পৌর নির্বাচনে অংশ নেবে এবং শক্তভাবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন বলেন জানান তিনি।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন সুত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ এপ্রিল চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে সবধরণের প্রস্তুতি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে। পৌরসভায় ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। মোট ভোটার ৫০ হাজার ৬ শত ৪। এরমধ্যে পুরুষ ভেটার ২৭ হাজার ১ শত ১৪ ভোট ও ২৩ হাজার ৪ শত ৯০ ভোট নারী ভোটার রয়েছে। এসব ভোটাররা আগামী পৌর নির্বাচনে ১৮টি ভোট কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন পদ্ধতিতে ভোটাররা ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো: শহীদুল ইসলাম।

পাঠকের মতামত: