ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

রামুতে স্ত্রীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ স্বামী..

মাথায় বটির কোপের আঘাত না শুকাতেই ফের দোকানে হামলা

সোয়েব সাঈদ, রামু ::  দুই মাস আগে বটি দিয়ে কোপ দিলে কপালে গুরতর আঘাত পান স্বামী। এ ক্ষত না শুকাতেই সম্প্রতি স্বামীর দোকানেও চালানো হয়েছে পরিকল্পিত হামলা। স্ত্রী নিজে এবং শাশুড় বাড়ির লোকজনের নেতৃত্বে এভাবে একের পর এক নির্যাতন, হামলা ও মিথ্যা মামলায় চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন সুজন পাল নামের এক ব্যক্তি। তিনি রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের মাদ্রাসা গেইট এলাকার মৃত মানিক পালের ছেলে।
সুজন পাল জানিয়েছেন-স্ত্রী প্রিয়াংকা পাল তাকে বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার-নির্যাতন চালাতো। গত ১২ জানুয়ারি এহেন আচরণের প্রতিবাদ জানালে প্রিয়াংকা পাল ধারালো বটি নিয়ে স্বামী সুজনের মাথায় কোপ দেয়। এতে মাথায় গুরতর জখম পান সুজন। মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় স্ত্রী প্রিয়াংকা ধর, তার মা পারুল ধর, ভাই রুবেল ধর ও মিটন ধরকে অভিযুক্ত করে কক্সবাজার বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (নং-১) মামলা (সিআর ১৮/২০২১) দায়ের করেন তিনি।
নির্যাতনের শিকার সুজন পাল আরো জানিয়েছেন- বিয়ের পর থেকে স্ত্রী প্রিয়াংকা পাল ছাড়াও শাশুডি পারুল ধরের নেতৃত্বেও তার উপর বিভিন্ন সময়ে অত্যাচার নির্যাতন চলতো। প্রিয়াংকা পাল এবং মা পারুল ধর তার (সুজন) দোকানের উপার্জিত বিপুল অর্থ বিভিন্ন সময়ে হাতিয়ে নেয়। এমনকি সম্প্রতি দোকানের জন্য স্ত্রী নামে ব্যাংক থেকে নেয়া ঋনের ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকাও তারা নিয়ে নেয়। পাওনা এ টাকা দাবি করলে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সুজন পালের ভাড়া বাসায় গিয়ে তালা লাগিয়ে দেয় এবং দোকানে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে হামলা চালায় স্ত্রী প্রিয়াংকা পাল। এসময় দোকানের কর্মকাচারিদের মারধর, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মালামাল লুট করে হামলাকারিরা।
জানা গেছে, সুজন পালের পৈত্রিক বাড়ি মহেশখালী এলাকায়। তিনি দীর্ঘদিন রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের মাদ্রাসা গেইট এলাকায় একটি লোহার গ্রিল নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন এবং একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন। ৭ বছর পূর্বে তার সুজন পালের সাথে রামু উপজেলার চেরাংঘাটা এলাকার প্রদীপ ধরের মেয়ে প্রিয়াংকা পালের বিয়ে হয়। বর্তমানে তার সংসাদের ২ ছেলে-মেয়ে রয়েছে। নিজের বাড়ি মহেশখালী হওয়ায় এবং স্ত্রী স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গেছে বলে দাবি করেন সুজন পাল।
এ ব্যাপারের জানতে চাইলে সুজন পালের স্ত্রী প্রিয়াংকা পাল জানান-তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। তিনি বটি দিয়ে কোপ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং ঋনের টাকা নেয়ার কথাও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন।
জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স জানিয়েছেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিলেও কোন কুল কিনারা হয়নি। এখন একটি পক্ষ পরিষদের আশ্রয় নিয়েছে। চেষ্টা করছেন দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সমাধানের জন্য।

 

পাঠকের মতামত: