ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

বদরখালীর আজমনগর মাদরাসায় কর্মচারী নিয়োগে সভাপতির ৬ লাখ টাকার বাণিজ্য

মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের বিধিলঙ্ঘনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী আজমনগর মাদরাসার সুপার, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া নিয়োগে কমিটির বির্তকিত সভাপতির বিরুদ্ধে ৬ লাখ টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মাদরাসা কমিটির অভিভাবক সদস্য মোহাম্মদ ওসমানুর রহমান চকরিয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে এইধরণের অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি অনিয়মের মাধ্যমে সভাপতি হলেও ওই পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করেছেন অভিভাবক সদস্য ওসমানুর রহমান। এ সংক্রান্ত কক্সবাজার দ্বিতীয় জজ আদালতে একটি মামলা বিচারধীন থাকলেও মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের বিধিলঙ্ঘনের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগে অপচেষ্ঠা চালিয়ে আসছেন সভাপতি এসএম নুরুল আমিন। এইধরণের বিধিবর্হিভুত নিয়োগ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে বৃহস্পতিবার মাদরাসা বোর্ডের মহাপরিচালক ও পরিচালক প্রশাসন বরাবরে লিখিত অভিযোগও পাঠিয়েছেন ওসমানুর রহমান।

লিখিত অভিযোগে অভিভাবক সদস্য মোহাম্মদ ওসমানুর রহমান বলেন, বদরখালী আজমনগর দাখিল মাদরাসার সভাপতি নির্বাচনে বিভিন্নধরণের অনিয়মে জড়ান এসএম নুরুল আমিন। তবু তিনি দাপটের সঙ্গে সভাপতি পদটি ভাগিয়ে নিলে অনিয়মের বিষদ বর্ণনা তুলে ধরে ওই পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কক্সবাজার দ্বিতীয় জজ আদালতে একটি নং (৪৩৭/১৯) মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারধীন রয়েছে। পরবর্তীতে ওই মামলার বিরুদ্ধে হাইর্কোটে একটি মিস মামলা করেন নুরুল আমিন। এরই প্রেক্ষিতে হাইর্কোট জজ আদালতের মামলাটির উপর ছয়মাসের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।

ওসমানুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে হাইর্কোটে দেয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার ছয়মাস সময় শেষ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় সভাপতি পদে থাকা নুরুল আমিনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সেখানে তিনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের বিধিলঙ্ঘনের মাধ্যমে মাদরাসার সুপার, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমনকি সভাপতির আবেদনের প্রেক্ষিতে নিয়োগ কার্যক্রমসহ মাদরাসার সবধরণের দাপ্তরিক কাজ দেখভালের জন্য মহাপরিচালক অফিস আদেশের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের পরিদর্শক ড.আবুল কালাম আজাদকে নিযুক্ত করেছেন।

অভিভাবক সদস্য ওসমানুর রহমান অভিযোগ তুলেছেন, সভাপতি পদে থাকা অবৈধ হলেও নুরুল আমিন তিনজন প্রার্থীর কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে শিক্ষাবোর্ডের পরির্দশকের উপস্থিতিতে তাদেরকে নিয়োগ দেয়ার জন্য সবধরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন। অথচ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের জারীকৃত প্রজ্ঞাপনের ৮ নং কলামে উল্লেখ আছে, মাদরাসায় নিয়োগযোগ্য পদ ও কমিটি নিয়ে কোনধরণের মামলা থাকলে সংশ্লিষ্ট পদে সুপারিশ করা যাবেনা। বোর্ডের এই বিধিলঙ্ঘনের মাধ্যমে পরিদর্শককে দিয়ে নিয়োগে সুপারিশ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে বির্তকিত সভাপতি নুরুল আমিন।

বিষয়টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের পরিদর্শক ড.আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষাবোর্ডের মহাপরিচালক মহোদয় আমাকে বদরখালী আজমনগর মাদরাসার সবধরণের দাপ্তরিক কাজ দেখভালের জন্য নিযুক্ত করেছেন। কাজেই মাদরাসার নিয়োগ থেকে শুরু করে সবকাজে আমাকে জানাতে হবে।

মাদরাসা কমিটির সভাপতি পদের বৈধতা নিয়ে আদালতে মামলা আছে, সেখানে কীভাবে নিয়োগ কার্যক্রম করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদরাসা কমিটি সংক্রান্ত যে মামলা আছে, সেটি আমাকে জানানো হয়নি। তবে একটি কথা হচ্ছে, সভাপতি হিসেবে তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বিলে স্বাক্ষর দিতে পারলে অন্য কার্যক্রম গুলো কেন করতে পারবেনা। তারপরও বিষয়ের আলোকে যখন অভিযোগ উঠেছে, তাই দেখেশুনে ব্যবস্থা নেব।

 

পাঠকের মতামত: