ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

এলপিজি ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটে গ্রাহকদের ভোগান্তি

এম.এ আজিজ রাসেল ::  কক্সবাজারে এলপিজি ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে বন্ধ রয়েছে সব দোকান। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে গ্রাহকেরা।

এলপিজি ব্যবসায়ীরা হয়রানীর অভিযোগ এনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। ধর্মঘটের ফলে শহরে সব গ্যাসের দোকান বন্ধ রয়েছে। অনেকের বাড়ির গ্যাস ফুরিয়ে গেলে দোকান বন্ধ থাকার কারণে বিপাকে পড়তে হয়। গ্যাস কিনতে না পেরে ভিন্ন জ্বালানি দিয়ে রান্নাবান্না করতে হচ্ছে।

টেকপাড়ার এলাকার বাসিন্দা জুয়েল বলেন, বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান আছে। আসবে অনেক মেহমান। তাই তাদের খাবারের আয়োজনের জন্য রান্না করতে গিয়ে দেখা যায় গ্যাস শেষ হয়ে গেছে। দোকান বন্ধ থাকায় গ্যাস কিনতে পারিনি।

বাহারছড়া এলাকার কর্মজীবি সরওয়ার মাহমুদ বলেন, হঠাৎ গ্যাস শেষ হয়ে যাওয়ায় দুপুরে বাড়ির রান্না বন্ধ ছিল। ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের কারণে গ্যাস মিলছে না কোথাও। তাই লাকড়ি দিয়ে রান্না করতে হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জেলা এলপিজি ব্যবসায়ী সমিতির অবস্থান কর্মসূচীতেজেলা এলপিজি ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি সরওয়ার কামাল সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম আরিফ লিটন বলেন, সরকারি এলপিজি গ্যাস চট্টগ্রাম থেকে ৬০০ টাকায় কিনতে হয়। যা কক্সবাজারে আনতে প্রতি গ্যাস সিলিন্ডার প্রতি খরচ হয় প্রায় ১০০ টাকা। তার বাইরে রয়েছে দোকান ও কর্মচারিসহ অন্যান্য খরচ। সবমিলিয়ে একটি গ্যাস বিক্রিতে লাভ হয় ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

সম্প্রতি জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয় আমাদের অহেতুক হয়রানী করছে। তাদের দাবি সরকারি ৬০০ টাকা রেটে গ্যাস বিক্রি করার। আমরা ৬০০ টাকায় চট্টগ্রাম থেকে পাইকারী গ্যাস কিনে এনে কিভাবে একই দামে বিক্রি করব। আমাদের পরিবহন, দোকান, কর্মচারিসহ নানা খরচ রয়েছে। তাদের বেধে দেয়া দামে গ্যাস বিক্রি করলে পথে বসতে হবে ব্যবসায়ীদের। এ জন্য অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সন্তোষজনক সমাধান করা না হলে ধর্মঘট চলবে।

তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন মত পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, জেলা প্রশাসন ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইমরান হোসাইনের নেতৃত্বে গ্যাসের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি অভিযোগে লাগাতার অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের আগে গ্যাসের দাম সিন্ডিকেট করে ১১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু অভিযানের পর ভেঙে যায় সেই সিন্ডিকেট। তখন নিয়ন্ত্রণে আসে গ্যাসের মূল্য। বতর্মানে ৯০০ টাকায় সর্বত্র গ্যাস বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইমরান হোসাইন বলেন, তাদের মদদে কয়েকদিন ধরে কক্সবাজার ভোক্তা অধিকারের দাপ্তরিক নাম্বারে অহেতুক ফোন করে বিরক্ত করা হচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকদের জিম্মি করে রাখতে গ্যাসের ডিলারেরা আন্দোলনের নামে এমন বিতর্কিত কর্মকান্ড করছে। যা কখনো সফল হবে না। ভোক্তা সাধারণের অধিকার রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি আরও বলেন, বুধবার খুরুশকুল রোডে কক্সবাজার এন্টারপ্রাইজে অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে দেখা যায় উক্ত প্রতিষ্ঠান সরকার নির্ধারিত ৬০০ টাকার মূল্যের এলপি গ্যাস বিক্রি করছেন ৮৫০ টাকায়। যা এবং মূল্য তালিকায় প্রদর্শন করা হয় ৭৫০ টাকা। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারকে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও তিনি বিষয়টা আমলে না নেওয়ায় ভোক্তা অধিকার আইন অনুসারে প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ করা হয়। একই অপরাধে একই এলাকার এস আর গ্যাস বিতানকেও সাময়িক বন্ধ করা হয়।

 

পাঠকের মতামত: