ঢাকা,সোমবার, ৬ মে ২০২৪

কুতুবদিয়ায় বসতি ও ঝাউবাগান বিলীন, অনুমতির নামে সারা বছর বালি উত্তোলন 

এম.এ মান্নান, কুতুবদিয়া ::  কুতুবদিয়ায় জোয়ারের পানি আর বালি উত্তোলনের ফলে ঝাউ বাগান চলে যাচ্ছে সাগরে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে সবুজ বেষ্টনী প্রকল্প ছাড়াও বিভিন্ন ভাবে দ্বীপের পশ্চিম সৈকত জুড়ে ঝাউবাগান তৈরির চেষ্টা দীর্ঘ দিনের। ১৯৯৬ থেকে অন্তত ৫ কিলোমিটার ঝাউবাগান গড়ে তোলা হয়।এর মধ্যে অধিকাংশই চারা জোয়ারে ঢেউয়ে উপড়ে যায়। স্থানীয় বন বিভাগ নানা উদ্যোগ নিলেও তা রক্ষা করতে পারছেনা। জনবল ঘাটতি,গাছ চোর অবাধ বিচরণ সহ বিভিন্ন কারণে হারিয়ে যাচ্ছে ঝাউবাগান। কৃত্রিম দুর্যোগ হিসেবে অবাধে সৈকত থেকে বালি উত্তোলন করায় ঝাউবাগান বিলিনের আরেকটি কারণ। একটি মহল সারা বছরই সৈকত থেকে বিশেষ করে কৈয়ারবিল ইউনিয়নের কয়েকটি স্পট থেকে বালি উত্তোলনের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা ও তৎসংলগ ৫০/৬০টি বসত ভিটা ছাড়াও কাঁচা বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে। মৌলভী পাড়ার মানিকুল ইসলাম, বাবুল, সেলিম, বশর, লোকমান, মতলব, মো:উল্লাহ, রুবেল, ইব্রাহিম, জসীম প্রমূখের বাড়ি সহ কেরানী মসজিদটিও ঝুঁকিতে। কৈয়ারবিল ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইব্রাহিম খলীল,মন্জুর আলম, আবুল কাশেম প্রমূখ জানান, এমনিতেই পুর্ণিমা-অমাবশ্যায় অতিরিক্তি জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে লবনাক্ত ঢেউয়ে বাড়ি-ঘর ভাঙছে। উপড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন গাছ সহ রোপিত ঝাউগাছ।
স্থানীয় একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি রাতের আধারে ট্রাক ভর্তি করে সৈকত থেকে বালি নেয় প্রতিনিয়ত। ব্যবহার হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি কাজ ছাড়াও ব্যক্তিগত পুকুর ভরাটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য মীর কাশেম সহ একাধিক নেতার মাহিন্দ্র ট্রাকে রাত ৩টা থেকে ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত লোড করে বালি নেয়া হয় সৈকত থেকে। কেউ কিছু বললে তাদের উল্টো শাসানো হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মীর কাশেম জানান, উপজেলা প্রশাসনের দেয়া ৩ হাজার ঝাউ চারা তিনি সৈকতে রোপন করেছিলেন। জোয়ারের আঘাতে তার সিংহভাগ বিলীন হয়ে গেছে। রক্ষা করা যাচ্ছেনা।তিনি নিজেও সৈকতের বালি উত্তোলনে অভিযোগের ব্যাপারে বলেন সরকারি কাজের প্রয়োজনে দু‘এক গাড়ী বালি নেয়া হলেও তা উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে।
সহকারি কমিশনার (ভুমি) মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, অবাধে বালি উত্তোলনের কোন অনুমতি নাই। সরকারি কাজে একমাত্র জরুরী প্রয়োজনে উপজেলা প্রশাসন কয়েক গাড়ী বালি উত্তোলনের অনুমতি দিলেও তা শুধু মাত্র প্রয়োজনের সময়, সারা বছরের জন্য নয়। কেউ যদি সৈকত থেকে বালি অনুমতি ছাড়া নেয় তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

পাঠকের মতামত: