ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রামের ১৭ পাহাড় থেকে লোক সরাচ্ছে প্রশাসন, অপেক্ষায় ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক :: পাহাড়ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৭ পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে অব্যাহত ভারী বর্ষণের ফলে এ উদ্যোগ নেওয়া হল।

নগরীর মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, একে খান পাহাড়, ট্যাংকির পাহাড়, আমিন জুট মিলস এলাকা, রউফাবাদ, খুলশী, পাহাড়তলী, ফয়স লেক, আকবর শাহ এলাকার ১, ২ ও ৩ নম্বর ঝিল এলাকা, মুজিব নগর, জিয়ানগর, মধ্যমনগর, শান্তিনগর এলাকা, কৈবল্যধাম বিশ্বকলোনী এলাকা, ফিরোজ শাহ এলাকা, ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট এলাকা, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সিডিএ লিংক রোড এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ ড. শহীদুল ইসলাম জানান, সোমবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামে ৪৯ দশমিক এক মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় সমপরিমাণ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরাতে সারা বছরই আমরা তৎপর থাকি। বর্ষাকালে সেটা আরও জোরদার করা হয়। যাতে পাহাড়ধসে কোন প্রাণহানি না ঘটে। চলমান ভারী বর্ষণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নগরীর ছয়টি সার্কেলের সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।

এছাড়াও স্থানীয় মসজিদগুলো থেকেও মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোকজনকে নিরাপদ অবস্থানে আশ্রয় নিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে-পরে এবং বৃষ্টির তীব্রতা অনুযায়ী মসজিদের মুয়াজ্জিনদের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে সরে যাওয়ার আহ্বান করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের প্রস্তুত করা আশ্রয় কেন্দ্রগুলো হলো— পাহাড়তলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কৈবল্যধাম বিশ্বকলোনীর কোয়াড পি-ব্লক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাহাড়তলী ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেটের ফিরোজ শাহ কলোনী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেট এইচ ব্লকের বায়তুল ফালাহ আদর্শ মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, জালালাবাদ বাজার সংলগ্ন শেড, রউফাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, রশিদিয়া রউফাবাদ আলিম মাদ্রাসা, মহানগর পাবলিক স্কুল, আল হেরা মাদ্রাসা, আমিন জুট মিল ওয়ার্কার্স ক্লাব, আমিন জুট মিলস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লালখানবাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবাদ উল্লাহ পন্ডিত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শহীদ নগর সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কলিম উল্লাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ওয়াইডব্লিউসিএ, শেখ রাসেল প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মতিঝর্ণা ইউসেফ স্কুল।

এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সিটি কর্পোরেশন এবং জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সমন্বয় করে ত্রাণকার্য পরিচালনা করবেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা বিবেচনায় আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেও তৎপর জেলা প্রশাসন। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা এবার দ্বিগুণ করা হয়েছে।

তবে করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকার অনেকেই তাদের নিকটাত্মীয়-স্বজনের বাসায় নিরাপদ আশ্রয় নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত: