ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়া শিক্ষা অফিসে লাগামহীন দুর্নীতি থামাবে কে?

ফারুক আহমদ, উখিয়া ::  উখিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসে ব্যাপক অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, শিক্ষক বদলী বাণিজ্য ও সরকারি বরাদ্দ কৃত টাকা গায়েবের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে । এ সব ঘটনার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী একে অপর কে দায়ী করে দায় এড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । সচেতন নাগরিক সমাজের অভিমত, অনিয়মের লাগাম থামাতে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে তদন্তে নামতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুব্রত কুমার ধর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে উখিয়া শিক্ষা অফিসে কর্মরত রয়েছেন। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষক জানান, এতদ বছর চাকুরী কালে এ ধরনের শিক্ষা কর্মকর্তা আর কখনো দেখিনি। উৎকোচ বাণিজ্য ও অর্থলোভী শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে তিনি রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। শিক্ষকদেরকে জিম্মি করে জোরপূর্বক টাকা আদায় ও বদলির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার নজির রয়েছে।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে জালিয়াপালং ইউনিয়নের মোহাম্মদ শফির বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত কর্মসূচির টাকা নিয়ে লুকোচুরি করা। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বদিউল আলম অভিযোগ করে বলেন , শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার ধর ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের আশ্বাস দিয়ে নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ সম্পন্ন করে। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা সরকারি টাকা আজ কাল দেবে বলে কালক্ষেপণ করছে। এমনকি ব্যাংক একাউন্টে টাকা নেই বলছে। অথচ কমিটি নিজ পকেটের টাকায় ক্ষুদ্র মেরামত কর্মসূচির কাজ বাস্তবায়ন করেছেন।
এদিকে সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা প্রদানে গড়িমসি করার প্রতিকার চেয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করছে বলে জানা গেছে।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা অফিসের আনুষাঙ্গিক খরচ বাবদ বরাদ্দ কৃত ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যাংক একাউন্টে পাওয়া যাচ্ছে না। এমন কি মোহাম্মদ শফির বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত কর্মসূচির ঢাকা ব্যাংক একাউন্টে নেই। এমন দায়িত্বহীন ঘটনায় শিক্ষক সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সহ ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুব্রত কুমার ধর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার অফিসের অফিস সহকারি সুমন চক্রবর্তী বিনা নোটিশে এক বছর ধরে অনুপস্থিত রয়েছে। হয়তো আমার অগোচরে টাকাগুলো তিনি উত্তোলন করেছে বলে মনে হয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ব্যাংকে হিসাবে অমিল হওয়ায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ম্যানেজ করতে হয়েছে। এসবের জন্য তিনি অফিস সহকারীকে দায়ী করেন।
এদিকে অফিস সহকারী সুমন চক্রবর্তী বলেন শারীরিক অসুস্থতা ও চিকিৎসা জনিত কারণে গতবছর আগস্ট মাসে ছুটি গ্রহণ করি। বর্তমানে আমি ছুটিতে রয়েছি। শিক্ষা কর্মকর্তার আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেছেন ব্যাংকের টাকা গায়েব ও গরমিলের বিষয়ে তিনি দায়ী নন। অন্যায় ভাবে দায় ছাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি উল্টো সরকারি বরাদ্দ কৃত টাকা কোন অর্থবছরে তা খতিয়ে দেখারও যুক্তি উপস্হাপনা করেন।

সুশীল সমাজের মতে , উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বদলী বাণিজ্য থেকে শুরু করে অনিয়ম ও শিক্ষা অফিসে অব্যবস্হাপনা দেখে মনে হয় চেইন অব কমান্ড বলতে কিছু নেই। জেলা শিক্ষা অফিসার কে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী উঠেছে।

পাঠকের মতামত: