ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় সরকারী কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ২২ বসতবাড়ি উচ্ছেদের হুমকী

চকরিয়া প্রতিনিধি ::  কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা এলাকায় সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ২২ পরিবারের বসতবাড়ি উচ্ছেদ পূর্বক কয়েক কোটি টাকার সম্পদ দখলের পাঁয়তারা করার অভিযোগ উঠেছে এক ভূমিদস্যূর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগি ২২ পরিবারের লোকজন চকরিয়া সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে রোববার বিকালে সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। তারা দাবী করেন, ওই ভূমিদস্যু কর্তৃক জবর-দখলের চেষ্টা অব্যহত থাকার কারণে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে পারে।

গতকাল রবিবার বিকালে ২২ পরিবারের লোকজন সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন, সম্প্রতি সময়ে চকরিয়া পৌরসভাস্থ দক্ষিণ বাটাখালী এলাকার মৃত নুরুল আলম মেস্ত্রীর পুত্র মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু তার মা আনোয়ারা বেগমকে বাদী করে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি সাহায্যের লিখিত আবেদন করেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু ও তার পরিবারের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিলে তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে উক্ত বিষয়ে তদন্ত পূর্বক সরেজমিনে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ প্রদান করে।

ভুক্তভোগি পৌরসভার ৩নং নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সফুর আলম অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশসকের মৌখিক নির্দেশের প্রেক্ষিতে ইউএনও নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী কোন ধরণের কাগজপত্র যাচাই- বাচাই না করে বিএনপি সরকারের আমলে মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর সকল জমি-জমা জবরদখলে নেওয়া হয় বলে উল্লেখপূর্বক একটি মনগড়া প্রতিবেদন দেন। ইউএনও‘র এ মনগড়া প্রতিবেদনই কাল হলো ভুক্তভোগি ২২ পরিবারের।

চকরিয়া পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ফোরকানুল ইসলাম জানান, ভুমিদস্যূতা, চাঁদাবাজি, হত্যা চেষ্টা ও প্রতারণাসহ একডজনের অধিক মামলার আসামী মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু কখনো আওয়ামীলীগের জন্য ত্যাগী নেতা ছিলনা। তিনি আরো বলেন, বিএনপির আমলে তার পরিবার সবাই বিএনপি করতো এবং ওই আমলে তার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি।

তত্বাবধায়ক(মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন) সরকারের আমলে কেবল আওয়ামীলীগের বদান্যতা পেতে সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় চকরিয়া পৌর আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাস্টার আবুতাহের ও আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল তার ৭ পুত্রকে আসামী করে চরম ভাবে হয়রানী করা হয়। পল্টুর হয়রানীর কারণে অকালে প্রাণ হারান মাস্টার আবু তাহের ও তার জৈষ্টপুত্র শহীদুল ইসলাম খোকন। মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর মিথ্যা মামলা ও হামলায় সর্বশান্ত হয়েছে কয়েকটি আওয়ামী পরিবার। বর্তমান সরকারের আমলেই মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির কারণে থানা ও আদালতে একডজন মামলা রয়েছে। মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি এরফানুল হক চৌধুরীর দায়ের করা একটি মামলায় ১বছর ২ মাসের সাজাও হয় তার বিরুদ্ধে।

সংবাদ সম্মেলনে ২২ পরিবার দাবী করেন- ‘ইউএনও নুরুদ্দিন মোহাম্মদ শিবলী নোমান যে জমিগুলো নিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন সেই জমিগুলোতে খরিদসুত্রে আমরাই বসবাস করি’, আমাদের নামেই নামজারি খতিয়ান সৃজন রয়েছে। ইউএনও‘র ওই মনগড়া প্রতিবেদনের আলোকে বর্তমানে সে আমাদের জমিগুলো স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে জবর দখলে মেতে উঠে প্রতিনিয়ত হুমকী দিচ্ছে। এমন কি ওই পল্টু প্রতিনিয়ত আমাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে আসছে।

চাঁদা না দেওয়ায় সে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে আমাদেরকে হয়রানী করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে আমরা পল্টুর এহেন কর্মকান্ডে চরম নিরপত্তাহীনতায় ভোগছি। তাই আমরা প্রশাসনের নিকট কথিত জমি দাবীদার মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর প্রকৃতপক্ষে পেশা ও আসল চরিত্র খতিয়ে দেখতেও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি ২২ পরিবারের পক্ষে উপন্থিত ছিলেন- সাংবাদিক ওমর আলী, আওয়ামীলীগ নেতা সফুর আলম, মো: কুতুবউদ্দিন, মাওলানা ইব্রাহিম, মো: শাহ আলম, সমাজকর্মী মো: রায়হান উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা ফোরকানুল ইসলাম ও মৌলভী ইদ্রিস। #

পাঠকের মতামত: