ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ার নারী ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন 

সিএন ডেস্ক :: কক্সবাজারের চকরিয়ার নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসি’র বিরোদ্ধে এক ব্যক্তির জমি জবরদখলের উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় এবং সন্ত্রাসীদের দিয়ে হুমকী-ধমকী প্রদানসহ নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে । এ নিয়ে কক্সবাজার আদালতে ভূক্তভোগী জমির মালিক বাদী হয়ে দায়ের করা মামলা বিচারাধীন থাকলেও চকরিয়া উপজেলার নারী ভাইস-চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসির বিরুদ্ধে হয়রানি অব্যাহত রাখার অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগের এ বিষয়টি অস্বীকার করে এ নারী ভাইস-চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, সত্যকে আড়াল করতে জমির মালিক এখন মিথ্যা প্রলাপ শুরু করেছেন।
সম্প্রতি কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী জমির মালিক চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরী এলাকার বাসিন্দা মৃত মোহাম্মদ কালুর ছেলে আলী হোসেন (৭০) সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
এসময় ভুক্তভোগী আলী হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার পাশাপাশি পুলিশ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার কাছে লিখিত অভিাযোগ জানিয়েছেন। এরপরও অভিযুক্ত নারী ভাইস-চেয়ারম্যান জমির মালিককে হুমকী-ধমকী প্রদানসহ নানাভাবে হয়রানি অব্যাহত রেখেছে।
ভূক্তভোগী জমির মালিক আলী হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, চকরিয়া উপজেলার নারী ভাইস-চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসি দীর্ঘদিন ধরে তার বাসায় ভাড়াটিয়া ছিলেন। এ সুবাদে জেসির সঙ্গে জমির মালিকের বেশ সুসর্ম্পক গড়ে উঠে।
এক পর্যায়ে জমির মালিক আলী হোসেনের মালিকাধীন চকরিয়া পৌরসভার ভরামুহুরী মৌজার বিএস ২৮৮, ২৮৭ ও ২৯৭ দাগের আন্দরের ১৯ শতকের বেশী কিছু সম্পত্তি শাসন-সংরক্ষণ এবং কতিপয় মামলা মোকদ্দমা পরিচালনার উদ্দ্যেশে জেসির সঙ্গে বিগত ২০ এপ্রিল ২০১১ সালে ২৭২৬ নম্বর রেজিস্ট্রি কবলামূলে একটি সাধারণ আমমোক্তারনামা সম্পাদন করেন।
আলী হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “আমি অশিক্ষিত ও লেখাপড়া না জানা মানুষ। এটিকে কাজে লাগিয়ে দলিল লেখকের সঙ্গে যোগসাজশ করে জেসমিন হক জেসি আমমোক্তারনামা দলিলে জমি বেচা-বিক্রির বিষয়টি লিপিবদ্ধ করেন। যা আমি অবহিত ছিলাম না। জানলে কখনো আমি আমমোক্তারনামা সম্পাদন করতাম না।”
“সম্পাদিত আমমোক্তারনামামূলে জমি আত্মসাতের জন্য দলিল সৃজন করার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর বিগত ২৮ জুন ২০১১ সালে দলিলটি ৩৯৫০ নম্বর রেজিস্ট্রি কবলামূলে বাতিল ঘোষণা করি। এ সংক্রান্ত একটি লিগ্যাল নোটিশ ডাকযোগে জেসমিন হক জেসি বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছিল। এমতাবস্থায় যার আর কোন কার্যকারিতা নেই।”
এরপর থেকে জমির মালিককে সন্ত্রাসীদের দিয়ে মারধর, হত্যা ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ নানাভাবে হয়রানির হুমকী দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন আলী হোসেন।
জমির মালিক আলী হোসেন বলেন, নারী ভাইস-চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসি দুর্লোভের বশীভূত হয়ে জমিটির মালিকানা ইতিপূর্বে সম্পাদিত আমমোক্তারনামা দলিলমূলে ৫০ লাখ টাকা পণমূল্যে গত ১৬ মে ২০১১ সালে ৩১৯৭ নম্বর রেজিস্ট্রি কবলা মূলে জনৈক আব্দুস সালাম নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রী করেন। পরে আব্দুস সালাম জমিটি পুনারায় জেসিকে ফেরত প্রদানের জন্য গত ২ আগস্ট ২০১১ সালে ৪৮৬৪ রেজিস্ট্রিমূলে বায়নামা দলিল সম্পাদন করেন। ”
তিনি বলেন, “এমতাবস্থায় কোন ধরণের উপায়ান্তর না পেয়ে জেসমিন হক জেসি ও আব্দুস সালামসহ চকরিয়া ভূমি প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করে বিগত ২৫ জানুয়ারী ২০১২ সালে কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতে একটি মামলা (২২/১২) দায়ের করি। যা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।”
এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে চকরিয়া উপজেলা নারী ভাইস-চেয়ারম্যান জেসি জমির মালিককে মিথ্যা মামলায় জড়ানো এবং সন্ত্রাসীদের দিয়ে মারধর ও হত্যার হুমকীসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগ করেন আলী হোসেন।
আলী হোসেন অভিযোগে বলেন, “ক্ষিপ্ত জেসি বসতভিটাসহ জমি বেচা-বিক্রির বিষয় উল্লেখসহ গত ২৭ মে ২০১৫ সালে ২৭৮৮ রেজিস্ট্রিমূলে আমাকে সন্ত্রাসীদের দিয়ে অস্ত্রেরমুখে জিন্মি করে জোরপূর্বক একটি অপ্রত্যাহারযোগ্য আমমোক্তারনামা দলিলে স্বাক্ষর দানে বাধ্য করেন।”
উল্লেখিত আমমোক্তারনামামূলে জমির মালিকের অজ্ঞাতে জেসমিন হক জেসি বিভিন্ন মিথ্যা বায়নামাপত্র ও জাল দলিল সৃজন করে সমস্ত সম্পত্তি ভোগদখলের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে দাবি করেছেন আলী হোসেন। এ নিয়ে ভূক্তভোগী জমির মালিক আলী হোসেন বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চকরিয়া উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসির সঙ্গে কথা হলে তিনি প্রতিপক্ষের উত্থাপিত সবধরণের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

পাঠকের মতামত: