ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পটিয়ায় সড়কে ঝরলো চকরিয়ার স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::  পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাট এলাকায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন এক শিশুসহ আরও পাঁচজন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশংকাজন। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, কক্সবাজার চকরিয়া থানাধীন কৈয়ারবিল গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসাইন (৪২) ও তার স্ত্রী নিগার সুলতানা (৩০) এবং নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার মৃত কোরবান আলীর ছেলে ওমর ফারুক (৪০)। এদের মধ্যে ওমর ফারুক ও জাহিদ দু’জনেই ব্যবসায়ী। আর জাহিদের স্ত্রী নিগার সুলতানা নগরীর চিটাগাং গ্রামার স্কুলের শিক্ষিকা। আহতরা হলেন, বাপ্পি গুপ্ত (৪৮), নিলু আক্তার (৪৫), নুরুল হক (৫৫), মিথিলা আক্তার (১১) ও আব্দুল কাদের (৩০)।
পটিয়া হাইওয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার সকালে কক্সবাজার ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমূখী শ্যামলী পরিবহনের চেয়ারকোচ (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-১৬২৪) পটিয়া শান্তিরহাট এলাকায় পৌছলে বিসমিল্লাহ পরিবহন নামের পটিয়ামূখী লোকাল বাসের (চট্টমেট্রো ব-১১-০১৩৩) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই বাসের অন্তত ৮ জন গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জেলা পুলিশের এ এস আই আলাউদ্দিন তালুকদার পূর্বকোণকে বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় আটজনকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক জাহিদ ও ওমর ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আহত নিগার সুলতানাকে নগরীর বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দুপুরে সেখানে মৃত্যু হয় তার।

এদিকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা নিলু আক্তার, আব্দুল কাদের, বাপ্পীর অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, অন্যদের চেয়ে এ তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তারা সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে’।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিসমিল্লাহ পরিবহন নামের লোকাল বাসটি আরেকটি বাসকে ওভারটেক করে যাওয়ার সময় দ্রুতগামী শ্যামলী পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুটি বাসের সামনের অংশ দুুমড়েমুচড়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন ও পটিয়া ফায়ার সার্ভিস এবং হাইওয়ে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ওসি বিমল চন্দ্র ভৌমিক বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে দুটি বাসের চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। পুলিশ দুটি গাড়ি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’

এদিকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় নগরীর প্যারেড মাঠে নিহত জাহিদ ও নিগার সুলতানার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহিদ হোসেনের চাচা সাংবাদিক মিহরাজ রায়হান। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জাহিদের চার বছর বয়সী এক শিশু রয়েছে। তাদের কয়েক বছর আগেই বিয়ে হয়। জাহিদ বিদেশে থাকলেও বর্তমানে দেশে এসে পরিবহন ব্যবসা শুরু করছে। আজ শনিবার সকাল দশটায় তাদের নিজ গ্রাম চকরিয়ার কৈয়ারবিলে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে’ বলে জানা গেছে।

পাঠকের মতামত: