ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

বাংলা চ্যানেল ডাবল সাঁতারে রেকর্ড করলেন কলকাতার নাসরিন

জসিম মাহমুদ, টেকনাফ ::  একবার নই, দুইবার (ডাবল) বাংলা চ্যানেলে পাড়ি দিয়ে নারীদের মধ্যে রেকর্ড করেছেন ভারতের সাঁতারু তাহরিনা নাসরিন। তিনি এবার বাংলা চ্যানেল ডাবল সাঁতার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের অনেকেই যখন বাংলা চ্যানেল ঠিকমতো চেনেনই না তখন ভিনদেশি বাঙালি মেয়ে নাসরিন নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিলেন এই বাংলা চ্যানেলকে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ১২ মিনিটে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন জেটি প্রান্ত থেকে সাঁতার শুরু করেন ভারতের দূরপাল্লার সাঁতারু ২৫ বছর বয়সী তাহরিনা নাসরিন।
তিনি ৩ ঘণ্টা ৪৭ মিনিট সময় নিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে সাগরে সাঁতরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট প্রান্তে পৌঁছান। সাগরদ্বীপ জেটিঘাট প্রান্ত ছুঁয়ে পুনরায় সেন্টমার্টিনে ৪ ঘণ্টা ২৬ মিনিট সময় নিয়ে সাঁতরে ফিরে আসেন বেলা ২টা ২৫ মিনিটে।
কোনো সমুদ্রের চ্যানেলে এ ধরনের সাঁতারকে বলা হয় ডাবল ক্রস। সে সূত্রে তাহরিনা বাংলা চ্যানেলে প্রথম নারী হিসেবে ডাবল ক্রস (৩২.২ কিলোমিটার) সাঁতারটি সম্পন্ন করেন মাত্র ৮ ঘণ্টা ১৩ মিনিটে।
বাংলা চ্যানেলের রেকর্ড বুক বলছে, এর আগে ২০১৮ সালের ২৭ মার্চ ভারতের ছেলে সাঁতারু সাম্পান্না রমেশ সেলার ৯ ঘণ্টা ১০ মিনিটে একমাত্র সাঁতারু হিসেবে ডাবল ক্রস পাড়ি দিয়েছিলেন। এর আগে গত বছর ২৩ নভেম্বর এ চ্যানেলে তিনি সাঁতারে সময় নিয়েছিলেন ৩ ঘণ্টা ৯ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড।
তাহরিনা নাসরিনের জন্মস্থান ভারতের কলকাতার হাওড়ায়। তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ পাস করেন। বর্তমানে তিনি কলকাতার আয়কর দপ্তরে চাকরি করছেন। এবার তার সঙ্গে আছেন বাবা শেখ আফসার আহমেদ।
প্রথম নারী সাঁতারু হিসেবে নাসরিনের ডাবল ক্রস সাঁতার এবার রেকর্ড করলো বাংলা চ্যানেলে। এর আগে নাসরিন ২০১৫ সালে বিশ্বের প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেন এবং ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর ৩ ঘণ্টা ৯ মিনিট সময় নিয়ে নারীদের মধ্যে দ্রুততম সাঁতারু হিসেবে বাংলা চ্যানেল সিঙ্গেল ক্রস (১৬.১ কিমি) পাড়ি দিয়ে রেকর্ড করেন।
এভারেস্ট একাডেমির আয়োজনে তাহরিনা নাসরিনের এই সাঁতার অভিযানের শুরু থেকে সবকিছুরই নির্দেশনা দিয়ে পাশে থেকেছেন তার বাবা শেখ আফসার আহমেদ। যিনি একাধারে তাহরিনার সাঁতার প্রশিক্ষক ও মেন্টর।
সুইম বাংলা চ্যানেল সাঁতারটিতে রেফারির দ্বায়িত্ব পালন করেন ফিফা রেফারি তোফাজ্জল হোসেন বাচ্চু এবং নেভিগেটর ও সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন রাফাহ উদ্দিন সিরাজী। সহযোগিতায় ছিলেন নর্থ আলপাইন ক্লাব বাংলাদেশ।
ট্যুর অপারেটর হিসেবে এলিগ্রো ট্যুরস, মেডিকেল সাপোর্টে হেলদি হোম বাংলাদেশের ডা. মহসীন কবির লিমন, লাইফ গার্ড হিসেবে ছিলেন সিআইপিআরবির সি সেফ সুইমিংয়ের লাইফ গার্ড মো. কামাল।
পুরো সাঁতারের পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ফুটবল দলের ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম।
তাহরিনা নাসরিন ভবিষ্যতে শিশুদের জন্য সাঁতার প্রশিক্ষণ একাডেমি খুলবেন বলে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: