ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চাপের মুখে পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর

image_150877_0নিজস্ব প্রতিবেদক :::

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকা চুরির ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সকালে এ ঘটনায় পদত্যাগ করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে গভর্নর ড. আতিউর রহমান জানিয়েছিলেন। একইসঙ্গে পদত্যাগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার সকালে গুলশানের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, “সোমবার ভারত থেকে দেশে ফেরার পর রাতেই অর্থমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি বলেছেন, আমি চলে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভালো চলবে। কিন্তু আমি আমার বিবেক দ্বারা চালিত হই। মনে করি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন, তিনি না বললে আমার পদত্যাগ করা উচিৎ নয়।”
গভর্নর বলেন, “আমি অপেক্ষা করছি, প্রধানমন্ত্রী কি বলেন। আমি পদত্যাগ করলে যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভালো হয়, দেশের ভালো হয়, তাহলে পদত্যাগ করতে আমার দ্বিধা নাই। আমি পদত্যাগপত্র লিখে বসে আছি। প্রধানমন্ত্রী বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি পদত্যাগ করবো।”

অর্থমন্ত্রীকে না জানানোর যুক্তি তুলে ধরে গভর্নর বলেন, “অর্থমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাইনি, কারণ আমি চেষ্টা করছিলাম- টাকাটা ফেরত আনার জন্য। অর্থমন্ত্রীকে জানালে যে টাকাটা ফেরত এসেছে সেটাও ফেরত পেতাম না।”
কথা বলার একপর্যায়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন আতিউর রহমান।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে গভর্নর বলেন, “যা কিছু করেছি সবই দেশের স্বার্থে করেছি। ২৮ মিলিয়ন ডলার আমার সন্তানের মতো। প্রতিটি ডলারই তিল তিল করে সঞ্চয় করেছি। একটি ডলারও যাতে নষ্ট না হয় সে চেষ্টা করেছি। কিন্তু এটি ছিল একটা সাইবার অ্যাটাক। কোথা থেকে হ্যাক হয়েছে সে বিষয়ে আমরা কেউই কিছুই জানি না।”
ড. আতিউর বলেন, “এই ঘটনা জানার আমরা কিছুটা গোপনীয়তা অবলম্বন করেছি। আমাদের ইন্টিলিজেন্সকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছি। র্যাবকেও নিয়ে তদন্ত করেছি। তাদের বলেছি- আমাদের ব্যাংকের যদি কেউ জড়িত থাকে তাহলে যেকোনো সময় গ্রেফতার করতে পারেন। পরে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি।”

পুরো টাকাই পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে গভর্নর বলেন, “টাকা চুরির পর ফিলিপিনের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। চুরি হওয়ার টাকার একটি অংশ ফেরত পেয়েছি। আজ সকালে ফিলিপিন থেকে সংবাদ এসেছে- বাকি টাকাও ফেরত পাওয়া যাবে।”
ভারত সফরে যাওয়ার বিষয়ে গভর্নর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েই আমি ভারত সফরে গিয়েছিলাম এবং সেখানে চুরি যাওয়া অর্থ কিভাবে ফেরত পাওয়া যাবে তা নিয়ে আলোচনা করেছি।”

পাঠকের মতামত: