ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লড়াইয়ে জুয়েল-আবছার, ‘ফ্যাক্ট’ সেলিম আকবর?

শাহেদ মিজান, কক্সবাজার ::

বেশ থেকেই জমে উঠছে কক্সবাজার সদরের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রার্থীদের মধ্যে চলছে প্রচারণার তীব্র লড়াই। দিনে দিনে এই নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের কৌতুহল ও আগ্রহ আরো বাড়ছে। বিশেষ করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা এখন ঘরে বাইরে। প্রচারণা এবং ভোটের লড়াইয়ে কে এগিয়ে আছেন? কে হতে যাচ্ছেন পর্যটন নগরীর আগামীর কর্ণধার? তবে আলোচনায় প্রচার এবং ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েল এবং কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল আবছার। কিন্তু অন্য এক দিকে বেশ আলোচিত হচ্ছেন সেলিম আকবর। ভোটাররা মনে করছেন, জুয়েল-আবছারের লড়াইয়ে মধ্যখানে ‘ফ্যাক্ট’ হতে পারেন সেলিম আকবর।

নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য মতে, কক্সবাজার সদর উপজেলায় নির্বাচন ছিলো তৃতীয় ধাপের আওতায়। তখন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলো শুধুমাত্র নৌকা প্রতীকের কায়সারুল হক জুয়েল এবং সেলিম আকবর। কিন্তু কথিত আছে, সেলিম আকবরের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ইস্যুকে কেন্দ্র করে নির্বাচন পিছিয়ে দেন নির্বাচন কমিশন। সেই সাথে পুন: তপশীলও হয়। এতে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় বাড়ে। তাতে মনোনয়নপত্র জমার হিড়িক পড়ে। দুই প্রার্থী থেকে একে একে আট প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেন। তবে বাছাই পর্যন্ত থাকেন পাঁচ প্রার্থী। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েল (নৌকা) নূরুল আবছার (ঘোড়া), সেলিম আকবর (আনরাস) অধ্যাপক আতিকুর রহমান (লাঙ্গল) এবং তারেক বিন মোক্তার (মোটর সাইকেল)। তিনি পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

মাঠের জরিপ মতে, প্রতীক পেয়ে মাঠে নামলে স্বাভাবিকভাবে আলোচনায় আসেন কায়সারুল হক জুয়েল ও নূরুল আবছার। দু’জনই হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে এখন পর্যন্ত ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু তাদের মধ্যখানে সেলিম আকবরকে ‘ফ্যাক্ট’ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন ভোটাররা। কারণ জুয়েল ও আবছার পৌরসভায় হওয়ায় বৃহত্তর ঈদগাঁওতে পুরো মাঠ সেলিম আকবরের আওতায় পড়ে গেছে। তাই আঞ্চলিকতাকে পুঁজি করে সেলিম আকবর চষে বেড়াচ্ছেন বৃহত্তর ঈদগাঁও। খবর পাওয়া যাচ্ছে, আঞ্চলিকতার কথা বলে সেলিম আকবর ও তার লোকজন তার পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। এও খবর রটেছে, দলমত ভুলে বৃহত্তর ঈদগাঁও’র মানুষ একাট্টা হচ্ছে! যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে জুয়েল-আবছারের মাঝে বড় একট ‘ফ্যাক্ট’ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সেলিম আকবর। এমনকি এই আঞ্চলিকতা পুঁজি করে চমকও দেখাতে পারেন তিনি!

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম দফায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে জুয়েল সমর্থক ও সেলিম আকবরের লোকজনের মধ্যে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল বৃহত্তর ঈদগাঁওতে তা এখন বেশ আলোচিত। সেখানকার ভোটাররা এই বিষয়টিকে ভিন্নভাবে নিয়েছে এবং সেলিম আকবরের নির্বাচনী প্রচারণায় তা ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে! ভোটারদের ‘সফট কর্ণারে’ এই বিষয়টি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে! এতে বেশ ঝুঁকির মুখে পড়তে হচ্ছে জুয়েল ও আবছারকে। এই ইস্যু ধরে আঞ্চলিকতাকে কাজে লাগাতে সেলিম আকবর যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তা সফল হলে তাঁকে আটকানো যাবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে বসে নেই জুয়েল-আবছারসহ অন্যান্য প্রার্থীরা। যেহেতু বৃহত্তর ঈদগাঁওতে রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক, তাই সব প্রার্থী বৃহত্তর ঈদগাঁওকে বেশি গুরুত্ব নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সব বিষয় মাথায় রেখে কায়সারুল হক জুয়েল বৃহত্তর ঈদগাঁওতে নানা কৌশলত প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। নূরুল আবছারও গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে ‘কঠিন’ নির্বাচন করছেন বলে স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিয়েছেন শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে বিজয় ঘরে তুলবেন।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল মনে করছেন, হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে কায়সারুল হক জুয়েল বেশ আলোচনায় রয়েছেন। আলোচনায় পিছিয়ে নেই নূরুল আবছারও। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে সেলিম আকবরকে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। তাকে ‘ফ্যাক্ট’ হিসেবে না দিয়ে উড়িয়ে দেয়া হলে শেষ মুহুর্তে তিনিই হয়তো ছক্কা হাঁকিয়ে ফেলবেন!

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার পৌরসভা এবং সদরের ১০ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪৪ জন। তাৎমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪২ এবং মহিলা ১ লাখ ২১ হাজার ২০২ জন। ইভিএমের মাধ্যমে ১০৮টি ভোটকেন্দ্রের ৬৪৮টি বুথে ভোট গ্রহন করা হবে আগামি ৩১ মার্চ।

পাঠকের মতামত: