ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লামা-হারগাজা-ডুলহাজারা সড়কের বেহালদশা খানাখন্দ ও কাঁদায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::   বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের সাপেরগাড়া-ডুলহাজারা সড়কের হারগাজা-ডুলহাজারা অংশের ৫ কিলোমিটার সড়কের বেহালদশার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে কয়েকটি ওয়ার্ডের ১৫ হাজারের অধিক জনগণ। স্থানীয়দের কাছে সড়কটিকে সুজা রোড নামে পরিচিত। সড়কের ফকিরাখোলা, পাগলির আগা ও হারগাজা অংশ ভেঙ্গে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে রাস্তাটি। ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি যাতায়াতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা আর আহত-নিহত হচ্ছে শত শত মানুষ।

সরেজমিনে গেলে সড়কের এই বেহালদশার কারণে স্থানীয়রা সবচেয়ে বেশী দায়ী করেন বালু ও পাথর বাহী গাড়িকে। জানা গেছে, সরকারি অনুমোদন ছাড়া কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট প্রতিদিন এই রোড় দিয়ে শত শত ট্রাক বালু ও পাথর নিয়ে যাওয়ায় সড়কটির এই নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সমগ্র ইউনিয়নের সকল গ্রামীণ অবকাঠামো গুলো (রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট) ধ্বংস হয়েছে এই বালু সন্ত্রাসের কারণে।

সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখি হলে রাস্তা মেরামতে উদ্যোগ নেয় সরকার। ইতিমধ্যে ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সড়কটির সাপেরগাড়া হতে হারগাজা হয়ে বগাইছড়ি অংশের মেরামতের কাজ শুরু করেছে এলজিইডি লামা। কিন্তু সড়কটির সবচেয়ে নাজুক অংশ হারগাজা হতে ফকিরাখোলা ও পাগলীরবিল হয়ে ডুলহাজারা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার অংশের মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সড়কের এই অংশটি মেরামতে উদ্যোগ নিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আর্কষণ করেছে জনসাধারণ। অসমাপ্ত এই ৫ কিলোমিটার সড়কের ১ কিলোমিটার লামা উপজেলায় ও ৪ কিলোমিটার সড়ক (পাগলিরবিল-ডুলহাজারা অংশ) কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় পড়েছে।

হারগাজা ও ফকিরাখোলা এলাকার করিম মিয়া, আল আমিন, রাশেদ পারভেজ ও মনোয়ারা বেগম সহ অনেকে বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উন্নয়নে বাধা সহ উৎপাদিত ফসল ও কাচাঁমাল বাজারজাত করতে সমস্যায় পড়ছি আমরা। ভঙ্গুর সড়ক পাড়ি দিতে যেখানে সর্বোচ্চ সময় লাগার কথা ২৫/৩০ মিনিট সেখানে ২ থেকে ৩ ঘন্টা সময় লাগছে পৌছাতে। এতে করে উক্ত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ৬/৭ বছর আগে এই রোড়টি ব্রিকসলিং দ্বারা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু অতিমাত্রা ভারী পাথর, বালু ও গাছের ট্রাক চলাচলের কারণে অতি অল্প সময়ে নষ্ট হয়ে গেছে সড়কটি। কয়েক বছরের ব্যবধানে রাস্তায় ইটের চিহ্ন পর্যন্ত নেই।

এই রোডের জীপ গাড়ি ড্রাইভার আনোয়ার হোসেন, সামশুল ইসলাম সহ অনেকে বলেন, রাস্তার মাঝে বড় গর্ত হয়ে যাত্রীবাহী গাড়িা চলাচলে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে অনেক স্থানে কাদাঁমাটির গর্তে আটকে যাচ্ছে গাড়ি। বর্ষাকালে এই রোডে গাড়ি চলাচল একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে।

১নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার নাছির উদ্দিন ও ২নং মেম্বার কুতুব উদ্দিন বলেন, রাস্তার চিহ্ন পর্যন্ত নেই। ভেঙ্গে সব শেষ হয়ে গেছে। বিশেষ করে অতিমাত্রায় ভারী পাথর, বালু ও গাছের ট্রাক চলাচলের কারণে অতি অল্প সময়ে রোডটি নষ্ট হয়ে গেছে। সড়কটির পাগলিরবিল-ডুলহাজারা অংশ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় পড়লেও এই রাস্তা দিয়ে লামা উপজেলার লোকজনই চলাচল করে।

ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে হারগাজা হতে পাগলিরবিল দিয়ে ডুলহাজারা সড়কটি মেরামত অতীব জরুরী হয়ে পড়েছে।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন, বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপ করে উক্ত রাস্তা উন্নয়নে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর লেখা হবে।

পাঠকের মতামত: