ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

লামায় নির্বিচারে পাহাড় কাটছে গাজী গ্রুপ

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::
বান্দরবানের লামায় গাজী গ্রুপ নামে একটি কোম্পানী বাণিজ্যিক ফ্যাক্টরী নির্মাণের নামে প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে নির্বিচারে পাহাড় কেটে চলেছে। গত ৪ মাস যাবৎ উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের (লামা-চকরিয়া মেইন রোডের পাশে) কুমারী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এক পাশে নীল টিন দিয়ে ঘিরে ২টি স্কেভেটর ও ২টি ড্রোজার ব্যবহার করে বিস্তৃর্ণ পাহাড়ি এলাকা কেটে পরিবেশের চরম ক্ষতি করে চলেছে।
গাজী গ্রুপকে কোন প্রকার পাহাড় কাটার অনুমতি দেয়া হয়নি জানিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত পাহাড় কাটা বন্ধ সহ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে স্থানীয় কয়েকজন জানান, মেইন রোডের পাশে বেশ কিছুদিন যাবৎ স্কেভেটর ও ড্রোজার দিয়ে সমানে পাহাড় কেটে চলেছে গাজী গ্রুপ। বড় কোম্পানী হওয়া কেউ তাদের কিছু বলছেনা। ইতিমধ্যে ৬/৭টি পাহাড় কেটে সমান করা হয়েছে। প্রায় ১ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকার এখন বিমানের মাঠের মত সমতল। এখনো ২টি স্কেভেটর ও ২টি ড্রোজার দিয়ে পাহাড় কাটতে দেখা যায়। পাহাড় কাটার কারণে বেশ কিছু বনজঙ্গল কাটা পড়েছে। ন্যাড়া হয়ে পড়েছে বিভিন্ন পাহাড়ের বিশাল এলাকা। এভাবে পাহাড় কাটা অব্যাহত থাকলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে। ঘটবে মারাত্মক ভূমিধস। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই সংস্থাটি কেটে ফেলেছে ৬/৭টি পাহাড়। আরও অন্তত ১০টি পাহাড় কাটার আয়োজনও চূড়ান্ত।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়ে লাভ নাই। প্রশাসনের লোকজন এসে পাহাড় কাটা বন্ধ করে। কিছুদিন পর দেখা যায় আবারো সেই আগের মতোই পাহাড় কাটা হচ্ছে। আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ না হওয়ায় পাহাড় খেকোরা ইচ্ছে মতো পাহাড় কেটে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. আলমগীর বলেন, গাজী গ্রুপ এখানে রাবার ফ্যাক্টেরি করার জন্য ২৫ একর জায়গা নিয়েছে। এখন তারা পাহাড় কাটছে। ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, আমরা বাধা দিলে তারা শুনেনা।
গাজী রাবার প্লান্টেশনের সিনিয়র ম্যানাজার হাবীবুল আলম বলেন, উক্ত রাবার ফ্যাক্টরীটি স্থাপিত হলে অত্র এলাকায় প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলার দায়িত্বরত কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশ্রাব জানান, ২ মাস আগেও এই কোম্পানীকে ৬ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। পাহাড় কাটার বিষয়টি লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) আমাকে জানিয়েছেন। দ্রুত আবারো অভিযান চালানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, পাহাড় কাটা বন্ধে আমরা ‘জিরো ট্রলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছি। পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের অভিযান চলছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

পাঠকের মতামত: