ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লামায় ৮টি পূজো মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::   কয়েকদিন পরেই হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। এটি সনাতনী সমাজের প্রাণের উৎসবও বটে। গত ৯ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে দূর্গাপূজার সূচনা হলেও ১৫ অক্টোবর দেবীর ষষ্ঠী পূজোর মধ্যে দিয়ে শুরু হবে সার্বজনীন এই উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। পূজোর এখনো ৩ থেকে ৪ দিন বাকী থাকলেও বেশ কিছু দিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে দূর্গাপূজার প্রস্তুতি। মন্ডপে মন্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরি আর সাজ সজ্জার কাজ। উপজেলার সবচেয়ে বড় আয়োজন হচ্ছে লামা কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে।

এ দিকে পূজোকে শান্তিপূর্ণ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উদযাপনের লক্ষে ইতোমধ্যে দূর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সাথে কয়েকবার মতবিনিময় সভা করেছে লামা উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। এবার লামা উপজেলায় মোট ৮টি পূজো মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

লামা থানা পুরিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, পূজাকে সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দূর্গাপূজা শুরুর বাকী আর কয়েকদিন থাকলেও এখন থেকে সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে কড়া নাড়ছে দূর্গোৎসবের আনন্দের বারতা।

শুধু সনাতনী সম্প্রদায় নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ বাংলাদেশে সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে এ দুর্গোৎসব একটি সামাজিক উৎসবও বটে। দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রত্যেকটি মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।

লামা উপজেলা দূর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কান্তি আইচ জানান, এ বছর দূর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে প্রতিমা ও পূজার মঞ্চ তৈরির কাজ। তারা পূজাকে সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে উদযাপনের জন্য প্রশাসনসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, দূর্গোৎসবকে অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উদযাপনের ক্ষেত্রে সকল ধরণের সহযোগিতার করে যাবে উপজেলা প্রশাসন। পূজাকে কেন্দ্র করে বরাবরের মতোই পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে পূজা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারি ভাবে জিআর খাত থেকে ৮টি পূজামন্ডপের জন্য ৪ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনে আরো সহায়তা করা হবে।

দূর্গোৎসবের মূল বাণী “মঙ্গল প্রতিষ্ঠার, অমঙ্গল নাশের”। যে দূর্গার পূজা হয় তিনি অসুরবিনাশিনী, শক্তিদায়িনী, ভাগ্য-কৃষ্টি প্রদায়িনী। মানুষের মনের কালিমা ঘুচিয়ে তিনি আসেন আলোর নিশানা দেখাতে। দূর্গা শব্দের অর্থ হলো আবদ্ধ স্থান। যা কিছু দুঃখ-কষ্ট মানুষকে আবদ্ধ করে, যেমন বাধাবিঘœ, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা দূর্গার নামে অন্য একটি অর্থ করেছেন। দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।

উমা থেকে পার্বতি। তারপর পার্বতি থেকে দূর্গা। এই নামেই তিনি বেশী পরিচিত। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরানে আছে তিনি গিরিরাজ হিমালয়ের কণ্যা ও পর্বতের অধিষ্ঠাত্রী দেবী, তাই তিনি পার্বতি। পরের অধ্যায়ে তিনি হয়ে উঠেন দানব দলনী দশভুজা। আর তখনিই তার নাম হয় দূর্গা।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৯ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দূর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

পাঠকের মতামত: