ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় দুস্কৃতকারীর আগুনে পুড়ল ভিলেজারের কুঁড়ে ঘর

মনির আহমদ, চকরিয়া ::
চকরিয়ার  দু:স্কৃতকারী কর্তৃক এক অসহায় ভিলেজারের কুঁড়ে ঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার ভোর রাত ৩ টায় কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের রিংভং ছগিরশাহ কাটায় এ ঘটনা ঘটেছে। জমিজমার বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ গ্রুপ  বনজায়গীরদার শাহ আলমের জমি জবর দখল চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এ ঘটনা ঘটায় বলে ক্ষতিগ্রস্থ ভিলেজার শাহ আলম দাবী করেছেন।
 অভিযোগে জানাযায়, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের রিংভং ছগিরশাহ কাটার ২৮ জইন্যা বনজায়াগীর সমিতির সদস্য ছিলেন মৃত রাজা মিয়ার পুত্র লাল মিয়া।অনুসন্ধান ও বনবিভাগের রেকর্ড়ীয় তথ্য সুত্রে জানা যায়, তৎকালে রাজা মিয়া ঘরে পুত্র সন্তান লাল মিয়ার জন্মের পর মারা যান রাজা মিয়া। রাজা মিয়ার অবর্তমানে শিশু সন্তান লাল মিয়া কুলে থাকা অবস্থায় তার মায়ের সাথে জনৈক সুলতান আহমদ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সুলতানের বাড়ীতে আশ্রয়ে বড় হয়ে বিভিন্ন মানুষের বাড়ীতে কামলার পাশাপাশি বনরেঞ্জারের কাজ করে বড় হন লাল মিয়া। এক পর্যায়ে লাল মিয়া এবং তার বৈ পিতৃক পিতাকে নিজের বাবার স্থানে স্থান দিয়ে অজ্ঞতাবশত পিতার নাম রাজা মিয়ার স্থলে সুলতান আহমদ লিপি হয় বনজায়গীর তালিকায়। এর পর দু’ জনই বন জায়গীরদারের তালিকা ভুক্ত হন। ধীরে ধীরে বড় হয়ে লাল মিয়া জানতে পারেন সুলতান আহমদ তার আসল পিতা নন। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন একান্নবর্তি সংসার থেকে। বয়োবৃদ্ধ লাল মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তৎপুত্র শাহআলমকে বনজায়গীরদার সমিতির নমিনি নিযুক্ত করেন। এবং মৃত্যুর পর ধারাবাহিক নিয়মে শাহা আলম মালিক হন।
 অপরদিকে তার বৈ পিতা সুলতান আহমদ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে পরে বনজায়গীরদারের শেয়ার বিক্রীপুর্বক হস্তান্তর করে নিরুদ্দেশ হন। কিন্তু শাহ আলম সুলতান আহমদের পুত্র মনিরুজ্জামান গংদেরকে চাচার স্থানে রেখে তার নিজের শেয়ার নিয়ে একান্নবর্তি পরিবার হিসাবে জীবন যাপন করে আসেন। সম্প্রতি মনিরুজ্জান গং এর ওয়ারিশ আবু ছৈয়দ, নুরুল আলম,নুরুল আলম গং এর সাথে বাড়ী ভিটা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে শাহ আলমকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেন। এবং লাল মিয়ার পুত্র শাহা আলম কে ভাগিয়ে জমি জমা দখলে নেয়ার চেষ্টা করেন মনিরুজ্জামান গ্রুপ। কিন্তু কেঁচু কুড়তে গিয়ে বেড়িয়ে আসে সাপ। বনবিভাগের ও ইউনিয়ন পরিষদের নথিপত্রেরর তথ্যসুত্রে জানা যায় লাল মিয়ার পিতার নাম সুলতান আহমদ নয়, তার প্রকৃত পিতার নাম হচ্ছে রাজা মিয়া।
 তৎকালীন বিভাগীয় বনকর্মকর্তা আলী মনছুর বিষয়টি তদন্তক্রমে বন অধিদপ্তরের স্বারক নং সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দেন। যাতে তিনি লাল মিয়ার পিতার নাম সুলতানের স্থলে রাজা মিয়া হবে এবং ভুলে সুলতান আহমদ হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন নথিভুক্ত করেন। এমনকি সাথে সাথে একটি অনুলিপি শাহা আলমকে ও দেন।
 এ প্রতিবেদনটি হস্তগত হবার পর নড়ে চড়ে বসেন বনবিভাগ সহ বিবাদমান দুই গ্রুপ। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট ফরেষ্টার, রেঞ্জকর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনকে মোটা টাকায় ম্যানেজের চেষ্টা শুরু করেন লালমিয়ার বৈ পিতা সুলতান আহমদের ওয়ারিশগন। পাশাপাশি সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে বেশ কয়েক বছর শাহা আলমের মালিকানাধীন দুই/তিন একর জমি ও জবর দখল করে ভোগদখল করেন সুলতানের ওয়ারিশ গং। কিন্তু প্রবল প্রতিরোধের মুখে গত তিন বছর ধরে ফের জমিগুলো নিজের আয়ত্বে এনে চাষাবাদ করছেন শাহা আলম গং। দফায় দফায় বিচারের সম্মুখিন হয়ে ও ব্যর্থ হন প্রতিপক্ষ সুলতান আহমদের ওয়ারিশ গং।
 শাহা আলম অভিযোগ করে বলেন, জমি জবর দখলে ব্যর্থ হয়ে সুলতান এর ওয়ারিশ মনিরুজ্জান গং এর পুত্র ও ওয়ারিশ আবু ছৈয়দ, নুরুল আলম,নুরুল আলম গং প্রতিপক্ষ শাহ আলমের কুঁড়ে ঘরটি রাতের আঁধারে পুড়িয়ে দিতে পারে। কারন ইতিপুর্বে বনকর্মকর্তা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে তাকে উচ্ছেদের হুমকি দিয়ে আসছিল। শাহা আলমের ঘর পুড়ার বিষয়টি মালুমঘাট – ডুলাহারাবাসীর মুখে মুখে।এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পাঠকের মতামত: