ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লামা-সুয়ালক সড়কে যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::

বান্দরবানের লামা-সুয়ালক সড়কের লামার ২৯.৫ কিলোমিটার অংশে শতাধিক স্থানে ভাঙ্গন, খানাখন্দ ও রাস্তার পাশ ধসে পড়ার কারণে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হওয়ায় গজালিয়া ও সরই ইউনিয়নের সাথে জেলা ও উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সড়কের লামা বাজার হইতে সরই কেয়াজুপাড়া বাজার পর্যন্ত ১৭টি স্থানে বড় বড় ধসের সৃষ্টি ও সমগ্র সড়কে খানাখন্দের কারণে বেহাল দশায় যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক অবস্থায় পৌঁছেছে।

বান্দরবান জেলা সদরের সাথে লামা ও আলীকদম উপজেলা অভ্যন্তরীন যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা লামা-সুয়ালক সড়কটি। এলজিইডি সম্পূর্ণ সরকারী অর্থায়নে সড়কটি নির্মাণ করে। সড়কের লামা অংশে রয়েছে ২৯.৫ কিলোমিটার। গত বছর বর্ষায় প্রবল বর্ষন ও পাহাড় ধসে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সড়কের মাঝখানে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিপাতেই পাহাড় ধসের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সড়কের কার্পেটিং নষ্ট হয়ে গেছে।

লামা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ ইসমাইল জানান, লামা-সূয়ালক সড়কের কার্পেন্টিং এর টপ নষ্ট হয়ে পড়েছে। সড়কের পাহাড়ের পাশের ড্রেনের উচ্চতা বাড়ানো সহ পর্যাপ্ত ড্রেনের প্রয়োজন। সড়কটি ওভার লে দ্বারা উন্নয়ন করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

সরই ইউ.পি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন জানান, সড়কের টিটিএন্ডডিসি, শিলেরঝিরি, নন্দিরবিল, আন্দারী টংগঝিরি, আন্দারী হিমছড়ি ও আমতলী এলাকায় সড়কের বিশাল অংশ জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে এ সড়ক টেকসই উন্নয়ন প্রয়োজন। আন্দারী এলাকার মোঃ জিয়াস উদ্দিন জানান, সড়কটি নষ্ট হয়ে পড়ায় স্থানীয় জনসাধারণকে দুর্ভোগের সম্মুখিন হতে হচ্ছে। স্কুল শিক্ষার্থী মালাতি ত্রিপুরা ও জেমস মার্মা বলে, রাস্তায় বড় বড় গর্ত হওয়ায় সিএনজি ও টমটম চলতে পারেনা। আমরা হেঁটে স্কুলে যাই।

জানা গেছে, এলজিইডি গত অর্থ বছরে সিএইচটি, জিওবি রক্ষণাবেক্ষন এর আওতায় লামা-সূয়ালক সড়কের চেইনেজ ২ হাজার কিলোমিটার হইতে ৯ হাজার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তায় কার্পেটিং, সিলপোর্ট ও ড্রেন নির্মাণের জন্য মেসার্স মিল্টন ট্রেডার্স নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করে। ২টি প্যাকেজে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা চুক্তি মুল্যে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। অভিযোগ উঠেছে সরেজমিন বাস্তবতার নিরিখে প্রাক্কলন তৈরি না করায় বরাদ্দকৃত এই টাকা অনেকটা অপচয় হচ্ছে। সড়কের প্রয়োজনীয় উন্œয়ন প্রাক্কলন না করে দায়সারা গোচর ভাবে প্রাক্কলন তৈরি করে প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনের আলোকে কাজ না করে উন্নয়নের টাকা সরকারী তহবিল থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের অধীনে সম্পাদিত কাজের অনেক অংশ নষ্ট হয়ে গেছে। প্যাকেজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মুজিবুর রহমান সাংবাদিককে জানান, প্যাকেজ ২টি কাজের অগ্রগতি ৩০%।

এলজিইডি’র বান্দরবান জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি গ্রস্থ সড়ক উন্নয়নের আওতায় লামা-সুয়ালক সড়কের ১৫ কিলোমিটার রাস্তা অনুমোদন করা হয়েছে। সদর দপ্তরকে সমগ্র সড়কের বেহাল দশার কথা জানানো হয়েছে।

পাঠকের মতামত: