ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন: হুমকির মুখে জনবসতি

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া :

চকরিয়ার ছড়াখালে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে খালের উভয় পাশের শতাধিক বসতবাড়ি। এলাকাবাসী জানায় স্থানীয় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে চলছে এ অবৈধ বালু উত্তোলনের কাজ।

সরেজমিনে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ফরেস্টার অফিস পাড়া সংলগ্ন ছড়াখালে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিবারাত্রি বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এ বেআইনি কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন খুটাখালী ইউনিয়ন পরিষদ ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন। ইতিপূর্বে ওই ছড়াখাল থেকে বালু উত্তোলনে বেস কয়েকটি বসতঘর নদির পাড় ভেঙ্গে গিয়ে পানিতে তলিয়ে গেছে।

এতে ভুক্তভোগীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও নজর দেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এলাকার বয়স্কা হুসনে আরা বেগম আশংকা করছেন অবৈধ বালু উত্তোলনে যেকোনো সময় তার বসতঘরটি তলিয়ে যেতে পারে। গতবছর বসতবাড়ির গাছপালাসহ তার বাড়ির একাংশ নদীতে তলিয়ে যায়। এবার অবশিষ্ট বাড়ির অংশ নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ষাটোর্ধ এ মহিলা। পার্শ্ববর্তী মোঃ শাহ জাহান বলেন বালু উত্তোলনে তার ভিটেবাড়ি ও ধান্য জমিগুলো নদির পাড় ভেঙ্গে পানির সাথে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি বালু উত্তোলনকারী ইউপি সদস্য আনুয়ার হোসেনকে অবগত করা হলেও কোনপ্রকার কর্ণপাত করছেন না।

এভাবে মেম্বারের নেতৃত্বে বালু উত্তোলনে নির্মম অনাচার সহ্য করে দিনপাত করছে এলাকার শতাধিক পরিবার। অথচ ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে ড্রেজিংয়ের ফলে কোন নদীর তীর ভাঙ্গনের শিকার হলে বালু উত্তোলন করা যাবে না। বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবেনা। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ।

অভিযুক্ত মেম্বার আনোয়ার হোসেন বলেন, খাল ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ইজারা অন্যজন নিলেও তিনি শেয়ারদার হিসেবে রয়েছে। প্রকৃত ইজারা নেওয়া খালটি অন্যত্রে হয়েও জনবসতি সংলগ্ন ছড়াখালটি তাদের ইজারা দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে কোনপ্রকার সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আস্রাব জানান জনসাধারণে ক্ষতির করান হয় বালু উত্তোলনের জন্য এমন খাল কখনো ইজারা দেওয়া হয়না। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: