ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

খুটাখালীতে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত, তলিয়ে গেছে ৫টি চিংড়ি ঘের

সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও :

কক্সবাজার প্রতিনিধি, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ৫ দিনের লাগাতার ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ইউনিয়নের ৫-৬ ও ৭নং ওয়ার্ডের বেশকটি গ্রাম ভাসছে পানিতে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব ওয়াডের ১০ হাজার মানুষ। ভেঙে পড়েছে খুটাখালী জলদাশ পাড়া সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে প্লাবিত হয়েছে ৫টি চিংড় ঘের।

সরেজমিন দেখা গেছে, ইউনিয়নের হাফেজখানা সড়ক সংলগ্ন খুটাখালী ছড়ার বেড়িবাঁধ ভেঙে সড়ক তলিয়ে গেছে। বানের পানি প্রবেশ করায় জলদাশ পাড়ার সাথে যোগাযোগ বন্দ রয়েছে। টানা বর্ষণের ফলে ঘর থেকে কাজে বের হতে না পারার কারণে শ্রমজীবী মানুষগুলো কর্মহীন বেকার হয়ে পড়েছে। এতে করে পরিবার– পরিজন নিয়ে তারা দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। পুরো ইউনিয়নের জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। তবে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোথাও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন জানান, প্রতি বছর বর্ষাকালে ৬নম্বর ওয়ার্ডের ফরেষ্ট অফিস পাড়া বন্যার পানিতে ভাসে। এবারও বাড়ির ভেতর পর্যন্ত কয়েকফুট উচ্চতায় পানি ঢুকেছে। এতে মানুষ দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছেন।

ইউনিয়নের ৫নং ওযার্ড মেম্বার মাস্টার নুরুল হক জানান, ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজ পাড়া ৫ কাইন্যা ঘানার টেক নদীতীরের বেড়িবাঁধ চরম ঝুকিতে ছিল। ওই পয়েন্টে রবিবার রাতে ভেঙে লোকালয়ে ব্যাপকভাবে ঢুকে পড়ছে বানের পানি। ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে অন্তত ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে অনেক পরিবার বাড়িভিটে ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে।

একইভাবে ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড জলদাশ পাড়া, কাটালিয়া পাহাড়, কাচারি পাহাড়, নাইফর ঘোনার মানুষ বানের পানিতে ভাসছে। এসব এলাকায় গত ৫দিন ধরে পল্লী বিদ্যুতের দেখা পাচ্ছেনা মানুষ। এতে দুর্বিষহ যন্ত্রণার মধ্যে পতিত হয়েছে মানুষগুলো।

খুটাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রহমান বলেন, বন্যাসহ যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পরিষদ প্রস্তুুত রয়েছে। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রেখেছি বন্যাদুর্গত মানুষগুলোর। যেসব এলাকা বানের পানিতে তলিয়ে গেছে সেখানকার মানুষ যাতে খাবার ছাড়া না থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বন্যাকবলিত মানুষগুলোকে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, বানের পানি যাতে দ্রুত ভাটির দিকে নেমে যেতে পারে সেজন্য উপকূলীয় এলাকার চিংড়িজোন এবং বিভিন্ন ছড়াখালের সবকটি স্লুইচ গেট খুলে দেয়া হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, গত ৫দিন ধরে স্বশরীরে গিয়ে প্রত্যেকটা ইউনিয়নের খোঁজ–খবর রেখেছি। এ পর্যন্ত কোথাও কোন ধরণের দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বন্যার্তদের পাশে থাকার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে দুইজন করে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের কাজ চালানো হচ্ছে। এরপর ব্যাপক পরিসরে ত্রাণ তৎপরতা চালানো হবে বন্যাকবলিত এলাকায়।

পাঠকের মতামত: