ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার ভিজিএফ চাল পাচ্ছে ৩২ হাজার ২’শ পরিবার

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

মাহে রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চকরিয়া উপজেলার আঠারটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা এলাকার দরিদ্র ও অভাবগ্রস্থ শ্রেণীর ৩২ হাজার দুইশত ৩৮টি পরিবার পাচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রনোদনা কর্মসুচির আওতায় ভিজিএফ চাল। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন সমন্বয় সভার মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার জন্য পরিবার প্রতি দশ কেজি করে চাল বিতরণের বিভাজন তালিকা তৈরী করে বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছেন।

জানা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম ও পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরীর বিশেষ তদবিরে মাহে রমজান এবং আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রানালয় ভিজিএফ কর্মসুচির আওতায় চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের জন্য ২৭৬ দশমিক ৩৮০ মেট্রিন টন ও চকরিয়া পৌরসভার জন্য ৪৬ মেট্রিন টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরউদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভার সিদ্বান্তের আলোকে ইতোমধ্যে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য ভিজিএফ কর্মসুচির চাল বিতরণে বিভাজন তালিকা তৈরী করা হয়েছে। তালিকা মতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে চাল বিতরণের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে দশ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বিতরণ কার্যক্রমে যাতে কোন ধরণের ছন্দপতন না ঘটে এবং স্বচ্ছতার মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয় সেইজন্য উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদেরকে প্রতিটি ইউনিয়নে তদারক কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

চকরিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন বিভাগের সহকারি কর্মকর্তা বাবুল চৌধুরী বলেন, এবছরও মাহে রমজান এবং পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের হতদরিদ্র ও অভাবগ্রস্থ শ্রেণীর ২৭ হাজার ৬৩৮টি পরিবারের জন্য ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য আলাদাভাবে বিভাজন তালিকা তৈরী করে বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি ইউনিয়নে বরাদ্দের এসব চাল বিতরণ শুরু হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রানালয়ের পক্ষ থেকে ভিজিএফ কর্মসুচির আওতায় চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে ২৭২৫টি পরিবার, বরইতলী ইউনিয়নে ২৪৪৯টি পরিবার, কৈয়ারবিলে ১৩৩৮টি পরিবার, লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে ৫৫৩টি পরিবার, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে ৮৪০টি পরিবার, কাকারা ইউনিয়নে ১৫৩১টি পরিবার, বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে ৫৮৯টি পরিবার, চিরিঙ্গা ইউনিয়নে ১০৮৩টি পরিবার, ফাসিয়াখালী ইউনিয়নে ১৯২১টি পরিবার, ডুলাহাজারা ইউনিয়নে ২৭৬১টি পরিবার, খুটাখালী ইউনিয়নে ২৩৪৪টি পরিবার, বিএমচর ইউনিয়নে ১৩৭৪টি পরিবার, পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নে ১৯৪৩টি পরিবার, সাহারবিল ইউনিয়নে ১৩৬৮টি পরিবার, কোনাখালী ইউনিয়নে ১২৩৩টি পরিবার, ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে ৮৫০টি পরিবার, পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নে ৬০৫টি পরিবার ও বদরখালী ইউনিয়নে ২১৩১টি পরিবারের জন্য ২৭৬ দশমিক ৩৮০ মেট্রিন টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

চকরিয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র বশিরুল আইয়ুব বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রানালয়ের পক্ষ থেকে ৪৬ মেট্রিন টন ভিজিএফ কর্মসুচির আওতায় চাল বরাদ্দ দিয়েছে। বরাদ্দের বিপরীতে আমরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ৪ হাজার ছয়শত দরিদ্র পরিবারের মাঝে এসব চাল বিতরণ শুরু করেছি। তার আগে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থানীয় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে এবং কিছু কিছু এলাকায় মেয়র আলমগীর চৌধুরীর পক্ষ থেকে পরিবার প্রতি ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে।

চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম বলেন, আগেকার সময়ে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রানালয় মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নে ভিজিএফ কর্মসুচির আওতায় চাল বরাদ্দ দিত মাত্র ১৩ হাজার পরিবারের জন্য। কিন্তু আমি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর মন্ত্রানালয়ে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলি। ৫লাখ জনগনের চকরিয়া উপজেলাকে কেন অবহেলা করা হচ্ছে তা নিয়ে অভিযোগ করি। ফলে আমার আপত্তির মুখে গত পাঁচবছর ধরে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রানালয় প্রতিবছর চকরিয়া উপজেলার জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ (দিগুন) নিশ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত বরাদ্দের ধারাবাহিকতায় এবছরও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রানালয় ভিজিএফ কর্মসুচির আওতায় চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়নের জন্য ২৭৬ দশমিক ৩৮০ মেট্রিন টন ও চকরিয়া পৌরসভার জন্য ৪৬ মেট্রিন টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে গরীব পরিবারের মাঝে এসব চাল বিতরণ শুরু করা হয়েছে। #

পাঠকের মতামত: