ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের নেই বিদেশী বন্যপ্রাণি হতাশ হচ্ছে দর্শনার্থীরা “তেলা মাথায় তেল, ন্যাড়া মাথায় বেল”

এম.আর মাহমুদ ::
দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠিত কক্সবাজার জেলার চকরিয়াস্থ ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে প্রতিদিন দেশী বিদেশী বেশুমার দর্শনার্থী আসলেও বিদেশী বন্যপ্রাণি না দেখে হতাশ হয়ে ফিরছে। কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ৯‘শ হেক্টর বনভূমি নিয়ে পার্কটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেশিরভাগ দেশীয় বন্যপ্রাণি নিয়ে যাত্রা শুরু করে। পরে পার্কে আগত দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে আফ্রিকার ২টি গ্রেটার কুদু সংগ্রহ করা হলেও পরিবেশের সাথে বেশিদিন বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরে আফ্রিকার ২টি ওয়ার্ল্ড বিষ্ট আনা হয়। এ দু’টি সুস্থ অবস্থায় বংশ বিস্তার করে যাচ্ছে। বর্তমানে ৪টি বিদেশী প্রজাতির ইমু পাখি রয়েছে। এছাড়া কোন ধরণের বিদেশী বন্যপ্রাণী নেই বললেই চলে। তবে ওয়ান ইলেভেনের সময় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে বিত্তশালী ব্যক্তিদের শখের কিছু প্রাণী উদ্ধার করে পার্কে অবমুক্ত করেছিল। প্রতিনিয়ত আগত দর্শনার্থীরা দেশীয় প্রজাতির প্রাণীগুলো ছাড়া অন্যান্য বিদেশী প্রাণী দেখার সুযোগ পাচ্ছে না। কিছুদিন আগে গাজীপুরে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে দেশী বিদেশী বন্যপ্রাণির অভাব নেই বললে চলে। সংঘত কারণে বলতে হয় রাজধানীর পাশে নবপ্রতিষ্ঠিত সাফারি পার্কে বিদেশী ও স্বদেশী বন্যপ্রাণি থাকার যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। কারণ এখানে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের চাইতে দর্শনার্থী বেশি। সম্প্রতি সীমান্ত হয়ে ভারত পাচারের জন্য আনা বিদেশী ৮টি জেব্রা উদ্ধার করেছে ডি.বি পুলিশ। পরে এসব জেব্রা গাজীপুরস্থা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ পার্কে আগের ও ১৪টি জেব্রা রয়েছে। বর্তমানে এ পার্কে জেব্রার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২টি। বিষয়টি সংবাদপত্রে দেখে অনেক নাখান্দা পাবলিক মন্তব্য করতে শোনা গেছে, ‘তেলা মাথায় তেল, ন্যাড় মাথায় বেল’। ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে এক সময় দর্শনার্থীদের প্রবেশপত্র সংগ্রহে দিতে হতো ২০ টাকা। এখন দিতে হয় ৫০ টাকা। কিন্তু এখানে দেখার মত কয়টি পশুপাখি আছে তা মন্তব্য করা নি®প্রয়োজন। তবে বিদেশী বন্যপ্রাণি না থাকলেও দৃষ্টিনন্দন পরিবেশটি আছে। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট শতবর্ষী গর্জনসহ হরেক প্রজাতির বৃক্ষরাজি। যা দেখেই দর্শনার্থীরা পুলকিত হয়। কথায় আছে কিছু না থাকার চাইতে সামান্য কিছু থাকাও ভাল। আমি একজন এলাকার সচেতন নাগরিক হিসেবে বলতে চাই পার্কের সমৃদ্ধির জন্য জরুরীভাবে প্রয়োজন দর্শনার্থীরা দেখার সুযোগ পায় নাই এমন কিছু বিদেশী বন্যপ্রাণি। যেমন- জেব্রা, জিরাফ, শিবপাঞ্জিসহ অন্যান্য প্রাণি। অন্যথায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বনে প্রতিষ্ঠা করা দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের গুরুত্ব একসময় নষ্ট হয়ে যাবে। সম্প্রতি পার্কে আগত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ট্যুরিষ্ট পুলিশের একটি ক্যাম্পও স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের জন্য দেশ বিদেশের অসংখ্য পর্যটক পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজার এসে পার্কে একবার ভ্রমণ করে যায়। কিন্তু বেশিরভাগ দর্শনার্থীর অভিমত, এখানে নতুনত্ব বলতে কিছুই নেই; আছে শুধু কিছু দেশীয় বন্যপ্রাণী। প্রতিনিয়ত বনভূমি উজাড়, দখল বেদখল অব্যাহত থাকায় কক্সবাজার অঞ্চলের বনে বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব সংকটাপন্ন। এক সময় কক্সবাজার অঞ্চলের লোকজনের ঘুম ভাঙত বন্যপ্রাণির শোরচিৎকারে। এখন বন্যপ্রাণির চিরচেনা শোরচিৎকার আর শোনা যায় না। তাই কক্সবাজার বাসীর প্রাণের দাবী ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু সাফার্কে বিদেশী প্রজাতির বন্যপ্রাণি সংগ্রহ করে দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য।

পাঠকের মতামত: