ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী আলোকে অবশেষে শাস্তি মুলক বদলী

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী ফয়জুল আলীম আলোকে অবশেষে বদলী করা হয়েছে। মঙ্গলবার ৮ মে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী পরিদপ্তর (বিউবো’র) উপ-পরিচালক-১ মেহেরুন নেছা খানম স্বাক্ষরিত এক আদেশে জনস্বার্থে ওই কর্মকর্তার বদলীর আদেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে বদলীর আদেশের খবর জানাজানি হলে চকরিয়া স্টেশনে কর্মরত থাকাকালে তাঁর উপর নানাভাবে ক্ষুদ্ধ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

চকরিয়া বিদ্যুত বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলীর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ইতোমধ্যে আদালতে মামলাও হয়েছে। গত ১১ মার্চ চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সমশেরপাড়ার ব্যবসায়ি ছৈয়দ আলম চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রকৌশলী ফয়জুল আলীম আলো সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ছৈয়দ আলমের কাছ থেকে মিটার দেওয়ার নামে ১লাখ ৬০ হাজার ব্যাংক চেকের মাধ্যমে নিয়ে নেয়। কিন্তু ওই টাকা নেওয়ার পর আরও ৫০হাজার টাকা ঘুষের জন্য এক বছর পর্যন্ত তাকে মিটার সরবরাহ করেনি। এমন কী তাকে অপমান করে বিদ্যুৎ অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। মামলা দায়েরের পর এঘটনা বিভিন্ন সংবাদপত্রে ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। পরে প্রকৌশলী আলো কর্তব্য কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে উল্টো অভিযোগ এনে বাদিকে চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ কোর্টে পাল্টা করেন। ওই মামলায় ছৈয়দ আলমকে জেলও খাটিয়েছেন।

গ্রাহক ছৈয়দ আলম জেলে যাওয়ার পর গত ২৮ মার্চ চট্টগ্রামস্থ দুদকের গণশুনানীতে ছৈয়দ আলমের পুত্র মনছুর আলম মিন্টু উপস্থিত হয়ে ওই প্রকৌশলীর ব্যাপারে অভিযোগ উত্থাপন করেন। এসময় তিনি দুদকের কমিশনার ড. নাছির উদ্দিন আহমদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অসহায় কান্নায় জড়িয়ে ধরেন। কান্নার ছবি সহ পরদিন গণমাধ্যমে করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদের কারণে পুরো বিদ্যুৎ বিভাগ বিব্রত অবস্থায় পড়ে যায়। এরপর থেকে বিভাগীয় ও দুদকের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক তদন্ত শুরু হয়। দীর্ঘ তদন্তের পর অবশেষে গতকাল৮ মে প্রকৌশলী আলোকে শাস্তিমূলক বদলীর এ আদেশ দেওয়া হয়।

চকরিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ি ছৈয়দ আলম জানান, তিনি বিদ্যুতের মিটার নেয়ার জন্য আবাসিক প্রকৌশলীর পরামর্শে ওই অফিসের বিদ্যুত বিল সরবরাহকারী দেবানন্দ দত্তের নামে ১ লাখ ৬০ হাজার চেক প্রদান করেন। যার চেক নং-৩৪৬৬৪৫৭)। কিন্তু তাকে একবছর পরও মিটার দেয়া হয়নি। এ ঘটনায় তিনি উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। তাকে বদলীর করায় ছৈয়দ আলম বলেন, এদেশে আইন আছে এটাই তার প্রমাণ।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী পরিদপ্তর (বিউবো’র) উপ-পরিচালক-১ মেহেরুন নেছা খানম স্বাক্ষরিত আদেশে চকরিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী ফয়জুল আলীম আলো আগামী ১৩ মে মধ্যে বিউবো’র পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল (উত্তর) চট্টগ্রামে সংযুক্তি হতে বলা হয়েছে। নির্ধারণ করে দেয়া সময়ের মধ্যে তিনি ওই স্টেশনে সংযুক্ত না হলে তাকে স্ট্যান্ডরিলিজ করা বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। ##

পাঠকের মতামত: