ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়া জেনারেল হাসপাতালে অপচিকিৎসার শিকার আয়েশা বেগমের হত্যাকারী ডাক্তার রুবেল সাদাত ও পরিচালক মুকুটের শাস্তি দাবী করছি

নিজস্ব প্রতিনিধি. পেকুয়া :

আমার স্ত্রী আয়েশা বেগম এক মেয়ে এক ছেলে সন্তানের জননী। এরই মাঝে ৩য় সন্তান জন্মের জন্য ৭ মাস পার করে। হঠাৎ ব্যাথা অনুভব হলে পেকুয়া বাজারস্থ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক ছিলেন ওই হাসপাতালের মো: রুবেল সাদাত চৌধুরী। তিনি প্রাথমিক চিকিৎসার পর ও আল্ট্রা করার পর বললেন গর্ভের সন্তান মারা গেছে। আমি অজ্ঞ মানুষ চিকিৎসার বিষয়ে তেমন কিছু অবগত নয় বিধায় আমার ভাইকে নিয়ে চিকিৎসক রুবেল সাদাতের সাথে কথা বলি কি করা যায়। তিনি বললেন ডিএনসি করে মৃত বাচ্ছা বের করতে হবে। দ্রুত আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ডাক্তার ও হাসপাতালের পরিচালক কামরান জাদিদ মুকুটের সাথে আলাপ করি। অন্যান্য পরিক্ষা ও চিকিৎসাপত্রের টাকা ছাড়া তারা ডিএনসি করতে ৫হাজার টাকা দাবী করলে সর্বশেষ আমরা অসহায় পরিবার বলায় দুই হাজার পাঁচশত টাকা দরদাম হয়। সেদিন ছিল ১৪ তারিখ। আমি স্ত্রীর ডিএনসি জেনারেল হাসপাতালে করাই। ডাক্তার সাদাত একজন নার্সকে নিয়ে আমার স্ত্রীর ডিএনসি করায়। একদিন হাসপাতালে স্ত্রীকে নিয়ে অবস্থান করি। হাসপাতালে অবস্থানকালে স্ত্রীর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে ডাক্তারের সাথে কথা বলি। কিন্তু তিনি কোন ধরণের সুরহা না দিয়ে আমাদেরকে চলে যেতে বলে। আমরা যাওয়ার সময় রোগির ডিএনসি করানোর সমস্ত ডকুমেন্ট চাইলেও তারা দেয়নি। রোগির অবস্থা আরো বেশি খারাপ হওয়ায় চকরিয়ায় ডাক্তার সুমির কাছে নিয়ে যায়। তিনি আরেকটা অল্ট্রা করার পর বলেন, রোগির শারীরিক অবস্থা তেমন ভাল নয় আপনারা চট্টগ্রামে নিয়ে যান। ওখান থেকে চট্টগ্রামে অবস্থানকারী আমার ফুফাতো ভাই ডাক্তার আতিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বললে আমি ভাইকে নিয়ে মূমর্ষ অবস্থায় তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করাই। ভর্তির পর থেকে স্ত্রীর অতিরিক্ত রক্তপাত হলে প্রতিদিন ৫ব্যাগ করে রক্ত দেয়া শুরু করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের অসম্ভব চেষ্টার পরও আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে পারি নাই। আমি অসহায় বিধায় স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ বাবদ চমেক হাসপাতালের অপারেশনসহ চিকিৎসাধীন সমস্ত টাকা আমার ফুফাতো ভাই আতিকুর রহমান ব্যায় করেন। তিনি ৭০হাজার টাকা খরচ করেন। এছাড়াও পেকুয়া জেনারেল হাসপাতালে দেন ৫হাজার টাকা। পেকুয়া জেনারেল হাসপাতালের একটি ভুল চিকিৎসায় টাকা খরচের পাশাপাশি স্ত্রীকেও বাঁচাতে পারি নাই। শিশু দুই সন্তান নিয়ে স্ত্রী হত্যার ন্যায় বিচার পেতে আপনাদের ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।

বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে ভুল চিকিৎসায় সদ্য প্রয়াত আয়েশা বেগমের স্বামী ফজল করিমের রাজাখালীস্থ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন, মনুর আলীর পুত্র ফজল করিম।

তিনি আরো বলেন, স্ত্রীর মৃত্যুর আগে স্ত্রীর অবস্থা চরমভাবে খারাপ হলে পেকুয়া জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক পেকুয়া উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামরান জাদিদ মুকুটের কাছে চিকিৎসার কাগজপত্রের জন্য আমার আত্বীয় মো: মানিককে পাটায়। তিনি না দেওয়ার জন্য অনেক কৌশল অবলম্বল করলেও শেষ পর্যন্ত ডিএনসি করানোর আড়াই হাজার টাকার রিসিভটা দেন। বাকি কাগজগুলো তিনি গায়েব করে পেলেন। তারা ভুল চিকিৎসার কৌশলটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পেকুয়া থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে যায়। কিন্তু তারা অভিযোগ নেয়নি। সর্বশেষ জেনালের হাসপাতালে স্ত্রীর ভুল চিকিৎসার রিপোর্ট চমেক হাসপাতালে তাদের মৃত্যু সনদে উল্লেখ করলে মাননীয় আদালতে ডাক্তার রুবেল সাদাত ও পরিচালক মুকুটের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করি। মামলাটি পেকুয়া থানায় তদন্তাধীন রয়েছে। মামলার পর পরিচালক মুকুট তাদের অপকর্ম ডাকতে হাসপাতালের অন্য পরিচালকদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সংবাদ সম্মেলন করে কমিটির রিপোর্টে ডিএনসি করানোর কথা সম্পূর্ন অস্বীকার করে সমস্ত ঘটনার জন্য আমার ফুফাতো ভাইকে দোষারোপ করেন। অথচ আমার ফুফাতো ভাই আতিক না হলে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আমার স্ত্রীকে চিকিৎসা করানো আমার পক্ষে সম্ভব হতো না। আমার স্ত্রীর অপচিকিৎসা আমি নিজেই সাক্ষি। স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য রুবেল সাদাত ও মুকুট দায়ী। আমি অসহায় বলে যুবদলের সম্পাদক ও প্রভাবশালী মুকুটের বিরুদ্ধে মামলা করেছি বলে অনেকে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্যও বলা হচ্ছে। বিভিন্ন মাধ্যমে বলছে পেকুয়া থানার ওসিকে তারা ম্যানেজ করছে। ওসি তাদের বিরুদ্ধে কখনো মামলার চার্জসিট করবে না। সাংবাদিকদের প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমি অসহায় বলে কি স্ত্রী হত্যার বিচার পাবো না। আপনারাদের লেখনির কারণে আমার স্ত্রীর হত্যা বিচার পাব বলে আশা করছি। আর তাদের সংবাদ সম্মেলনের সমস্ত কথা আমি প্রত্যাক্ষান করে পেকুয়া থানার ওসি মহোদয়ের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবী করছি। এ সময় ফজল করিমের পিতা মনুর আলী, স্থানীয় ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন ও তার দুই সন্তান উপস্থিত ছিলেন।

#############

পেকুয়ায় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে স্ট্যাম্প জালিয়াতি মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া

কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্ট্যাম্প জালিয়াতির মাধ্যমে জমি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করায় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী।

সোমবার (১৬এপ্রিল) চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা (সি/আর ৩৬৯) দায়ের করে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের মৃত নাগু মিয়ার ছেলে মনিরুল ইসলাম।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া মৌজার আরএস খতিয়ান নং- ২৯, প্লট নং ৩৯, ১৪, ১১ মূলে মোট ৫ একরের আন্দর ২.৫০ একর জমি পশ্চিম উজানটিয়া এলাকার মৃত নাগু মিয়া ও তার ভাই মৃত মোক্তার কামাল স্বত্ববান ও দখলদার হিসেবে বৈধ মালিক হয়। কিন্তু জাল স্ট্যাম্পে জাল দলিল সৃজন করে মালিকানা দাবী করে একই এলাকার মৃত সফর মুল্লুকের ছেলে আব্দু জলিল। এঘটনায় সহযোগীতা করায় একই এলাকার মোক্তার কামালের ছেলে আজম উদ্দিন ও কবির আহমদকে উক্ত মামলায় বিবাদী করা হয়।

মামলার বাদী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার পূর্বপুরুষের মালিকানাধীন এ জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি দেয় প্রভাবশালী এ চক্র। জালিয়াতির মাধ্যমে তারা এ জমি জবরদখল চেষ্টা করলে আমি আইনের আশ্রয় নিই। কিন্তু এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিবাদী আব্দু জলিল ও আজম উদ্দিন আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এব্যাপারে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি।

পাঠকের মতামত: