ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় শ্বশুরালয়ে হাসেমকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা (ফলোআপ)

ফারুক আহমদ, উখিয়া ॥

উখিয়ার বালুখলীতে নব বিবাহিত স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমে বাধাঁ দিতে গিয়ে শ্বশুরালয়ে স্বামী নুরুল হাসেমকে নির্মম ভাবে হত্যার অভিযোগে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতে ৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ২১ মার্চ নিহতের বড় ভাই রত্মা পালং ঝাউতলা গ্রামের নুরুল আমিন ভূট্টু বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। এতে আসামী করা হয় শ্বশুর হাজী শামশুল আলম, স্ত্রী আকলিমা বেগম, স্ত্রীর ভাই মনজুর আলম, চাচা শ্বশুর ডাঃ ফরিদুল আলম ও স্ত্রীর বড় বোন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে এনে আগামী ৩ কার্য্য দিবসের মধ্যে তদন্ত পূর্বক সংঘটিত ঘটনার প্রতিবেদন প্রেরন করার জন্য উখিয়া থানার অফিসার ইনর্চাজকে নিদের্শ দিয়েছেন বলে বাদীর আইনজীবী জানান।

জানা যায়, উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীস্থ পান বাজার গ্রামের প্রবাসী শামশুল আলমের মেয়ে আকলিমা বেগমের সাথে রত্মা পাালং ইউনিয়নের ঝাউতলা গ্রামের নুরুল হাশেমের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বছর দু’ জনই হলফনামা মূলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আনুষ্ঠানিকতা না হওয়ায় ঘরে তুলে আনেনি এখনো নববধুকে। তবে স্বামী হিসাবে হাশেম প্রতিনিয়ত শ্বশুর বাড়ীতে আসা-যাওয়া ছিল। কোটবাজার মিলিখা মার্কেট ও বালুখালীতে দোকান ছিল তার।

সরজমিন পরিদর্শন ও খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও সংস্থা এনজিও ফোরাম কর্মরত আকলিমা। চাকুরীস্থলে সহকর্মীর সাথে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ও বেপরোয়া চলাফেরা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একাধিকবার মনোমালন্য ও ঝগড়ার ঘটনাও ঘটে। স্বামী আবুল হাশেম একাধিকবার চেষ্টা করেও স্ত্রীকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে ফেরাতে বারবার ব্যর্থ হয়।

পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ রাত ৮টার দিকে অজ্ঞাত এক মোবাইল ফোন থেকে খবর দেওয়া হয় নুরুল হাশেম মুমুর্ষ অবস্থায় উখিয়া হাসপাতালে রয়েছে। আত্বীয়স্বজনরা দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পায় রক্তাত্ব অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে মারা যায় তিনি।

নিহতের ছোট ভাই ইমরান সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইয়ের মাথায় মারাত্বক জখমের চিহৃ রয়েছে। এছাড়াও সারা শরীরের আঘাতও দেখা গেছে। নাকে জমাট বাঁধা রক্ত ছিল। কুসুম ফুলে গেছে। তার দাবী পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেওয়ার অপরাধে ক্ষুদ্ধ হয়ে স্ত্রী সহ শ্বশুর বাড়ীর লোকজন পরিকল্পিত ভাবে অমানষিক নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করে। নিহতের বড় ভাই মামলার বাদী নুরুল আমিন ভুট্টু জানান,আমার ভাইকে ওই দিন ফোন করে শ্বশুর বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে শ্বশুর হাজী শামশুল আলমের বাড়ীতে এবং দ্বিতীয় দফায় চাচা শ্বশুর ফরিদুল আলমের বাড়িতে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্যাতন চালায়। বয়োবৃদ্ধ পিতা বজলুল রহমান ও মা রিজিয়া বেগম শোকাহত অবস্থায় বলেন আমার ছেলেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। আমরা পুত্র হত্যার বিচার দাবী করছি।

অপর একটি সূত্রে জানা যায়, শ্বশুর বাড়ীর লোকজন ঘটনার দিন উখিয়া থানায় জামাতা নুরুল হাশেমের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করে। এ নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে নানা রহস্য।

পাঠকের মতামত: