ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার বিমান বন্দরে যাত্রী পরিসেবাবার পাশাপাশি বেড়েছে জাতীয় রাজস্ব আয়

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজার বিমান বন্দরে বেড়েছে যাত্রী পরিসেবাবার। সুনাম শুধু দেশে নয়, ছড়িয়েছে বর্হিবিশ্বেও। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের বিমান ও প্রাইভেট এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজের ২৪টি ফ্লাইট ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন চলাচল করছে। দেশি-বিদেশী পর্যটক আগমন বাড়ায় জাতীয় রাজস্ব আয়ও বেড়েছে তিনগুন।

জানা গেছে, কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আর্ন্তজাতিক মানে উন্নিত করণে বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান এই সম্প্রসারণের কাজ প্রায় ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

গত বছরের ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বোয়িং ৭৩৭ বিমান যোগে কক্সবাজার আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে অবতরন করেন এবং কক্সবাজার আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের শুভ উদ্বোধন করেন। এর পর থেকে আর্ন্তজাতিক বিমানগুলো ও উড়োজাহাজ উঠা নামা করছে কক্সবাজার বিমান বন্দরে। বিশেষ করে গত বছরের ২৫ আগস্টে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা সংকটের পর বিভিন্ন দেশের ভিভিআইপি, ভিআইপি অনেকে সরাসরি কক্সবাজার বন্দর থেকে উঠা নামা করেছে। পরিসেবার পাশাপাশি বিমান বন্দরে নিরাপত্তা নিয়ে সন্তোষ দেশি নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশী পর্যটকরা।

বিমান ও উড়োজাহাজ যোগে বিশেষ করে ইয়াবা পাচার রোধে হার্ড লাইনে রয়েছে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরে নিরাপত্তাকর্মীরা সার্চ ও পৃথক অভিযান চালিয়ে গত আড়াই বছরে ২ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। যার মুল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। এসময় যাত্রীবেশি নারী ও পুরুষ সহ ৫০ জন ইয়াবা পাচারকারীকে আটক করে।

আরো জানা গেছে, ইতোমধ্যে সরাসরি কক্সবাজার বিমান বন্দর হতে যাতাযাতায় করেছে তুরস্কের ফাস্ট লেডি, তুরস্কেও উপপ্রধানমন্ত্রী, জর্ডানের রাণী, মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী, তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, ১২টি দেশের নৌ বাহিনী প্রধান সহ অনেক দেশের ভিভিআইপি ও ভিআইপি লোকজন সরাসরি এই বিমান বন্দর দিয়ে যাতায়ত করেছে।

জানা গেছে, গত ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে এই বিমান বন্দর হতে সপ্তাহে চলাচল করতো ১০টি ফ্লাইট। ২০১৬ সালে এর সংখ্যা দাড়ায় ১২টিতে। ২০১৭ সাল থেকে দৈনিক ১৬টি ফ্লাইট যাতায়ত করলেও বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড ও প্রাইভেট এয়ারলাইন্স এর ৮টি কর্গো সহ ২৪টি বিমান ও উড়োজাহাজ ফ্লাইট প্রতিদিন নিয়মিত যাতায়ত করছে। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা, বিমান বন্দরে নিয়মশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, পরিচ্ছন্নতা বেড়েছে বহুগুন। পাশাপাশি বেড়েছে রাজস্ব আয় সহ যাত্রী পরিষেবার মান।

ঢাকা থেকে আগত পর্যটক জীবন আহসান বলেন, বিমান বন্দরের নিরাপত্তা মুলক ব্যবস্থা খুবই ভালো। এখানকার দায়িত্বরতদের সেবা নিয়ে আমি অত্যন্ত সন্তোষ্ট।

কক্সবাজার চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাষ্ট্রি সদস্য ও মৎস্য ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, আগামীতে সরকার ও সিভিল এভিয়েশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে আর্ন্তজাতিক ফ্লাইটগুলো প্রতিদিনই অবতরণের সম্ভাবনা রয়েছে। যাত্রী বিমান সরাসরি আসা যাওয়া করলে কক্সবাজার পর্যটনের সমৃদ্ধি তথা বর্হিবিশ্বের সাথে ব্যবসায়িক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

কক্সবাজার বিমান বন্দর ব্যবস্থাপক সাধন কুমার মোহন্ত বলেন, কক্সবাজার বিমান বন্দরের ২০১৫ সালের পূর্বে বিমান, উড়োজাহান অবতরণ, পাকিং, যাত্রী বর্হিগমন ফিস সহ অন্যান্য খাতে বছর রাজস্ব আয় হতো ৮০ লাখ টাকা। বর্তমানে এই আয় বেড়ে দাড়িয়েছে পৌনে দুই কোটি টাকায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নিত করণ ও যাত্রী পরিসেবা বৃদ্ধি করায় এটা সম্ভব হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

পাঠকের মতামত: