ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মী নির্যাতনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে’

অনলাইন ডেস্ক ::

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মী নির্যাতনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতেই যেন নির্দয়তার সীমা অতিক্রম করছে। কারণ এর উপরেই যেন নির্ভর করে তাদের পুরস্কার, পদোন্নতি। তাই কে কতটা বিএনপি নেতাকর্মীকে নির্যাতন করতে পারে সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছে। তিনি আরো বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিবেকহীনতা এখন জাতি ও জনগণের জন্য সবচেয়ে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গতকালও চলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অমানবিক গ্রেপ্তার অভিযান। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে অভ্যর্থনা জানাতে আসা বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক, পিটিয়ে আহত এবং বিএনপি’র সিনিয়র গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিঃসন্দেহে এখন আওয়ামী লীগের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী চেতনায় লালিত এই বাহিনীগুলো যেন বিরোধী দলকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়ার জন্যই সরকার প্রধানের কাছে শপথ করেছে।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জাল নথির সাজানো মামলায় বিচারের নামে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার বিচার জাতীয়তাবাদী শক্তি ও জনগণ সকল নিপীড়ণ-নির্যাতন সহ্য করে প্রতিবাদে-প্রতিরোধে বাধার বিন্ধ্যাচলের ন্যায় দাঁড়াবে। সরকারের পেটোয়া বাহিনীদের নিক্ষিপ্ত গুলি বুকে বরণ করে নিয়েও নীতি, আদর্শ, গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদী চেতনায় বলিয়ান বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে থেকে তাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে কোন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি সারাদেশে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গতকাল ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল শওকত সরদারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের বড় ছেলে সুনিন্দ্য ইসলাম সুমিত, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মুজিবর রহমান, মুন্সিগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মোল্লা, যুবদল নেতা সেলিমকে গতকাল পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম-এর বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে।
রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আরমান মৃধাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ ও বাঘা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালামের বাড়ীতে তল্লাশির নামে পুলিশ ভাঙচুর করেছে।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং কাবিলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাহার ও সেনবাগ উপজেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা মোস্তফা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুল হককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া ৬১ জন নেতাকর্মীর বাড়ী বাড়ী তল্লাশির নামে পুলিশ তান্ডব চালিয়েছে।
চাঁদপুর জেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক মো. মানিক মিয়া, কচুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি বোরহান উদ্দিন বাহার এবং উপজেলা বিএনপির নেতা লিটনকে খালেদা জিয়ার গাড়ী বহর থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
এসময় তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশির নামে পুলিশের তান্ডবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।

পাঠকের মতামত: