ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লামায় ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার ও কানুনগো পাথরের পারমিটের জন্য ভুয়া প্রতিবেদন দিচ্ছে

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা ::

বান্দরবানের লামা উপজেলায় পাহাড় কেটে ও খুঁড়ে পাথর উত্তোলন করার প্রশাসনিক অনুমোদনের কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। লামা ভূমি অফিস কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করে পাথরের অনুমোদন প্রদানের জন্য ভুয়া ও মনগড়া প্রতিবেদন প্রস্তুত করছে। পাথর সিন্ডিকেটের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে পাহাড় খুঁড়ে উত্তোলিত পাথরকে ঝিড়ি ছড়ার ভাসমান পাথর উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের নিকট প্রতিবেদন দায়েরের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন ঝিরি ও ছড়া থেকে পাথর আহরণের নামে পাহাড় কেটে প্রায় ৩ লক্ষাধিক ঘনফুট পাথরের পারমিট অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন।

তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কানুনগো, সার্ভেয়ার সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পাথরের পারমিট সংক্রান্ত তথ্য প্রদানে কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করে চলেছেন। পাথর পাচারকারী সিন্ডিকেট লামা ভূমি অফিসকে ইতিমধ্যে বিপুল অংকের টাকা উৎকোচ প্রদান করেছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। পাথরের গণ-আবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে তদন্তের জন্য লামা ভূমি অফিসের কানুনগো সার্ভেয়ারের কাছে এসেছে। পাথর পাচারকারী সিন্ডিকেট সার্ভেয়ার ও কানুনগোদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার ও কানুনগো পাথর পাচারকারী সিন্ডিকেটকে সহযোগীতা করার জন্য প্রকাশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দোহাই দিয়ে তদন্ত রিপোর্ট প্রদানের নামে পাথর পাচারকারী সিন্ডিকেটের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিছুদিন পূর্বে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও কানুনগোদের বিষয়ে দুদকের গণ শুনানীতে অভিযোগ উঠলেও পাত্তা দিচ্ছেনা দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার ও কানুনগোগণ।

ইতিমধ্যে নামে-বেনামে ১১টি আবেদনের অনুকূলে ৩ লক্ষাধিক ঘনফুট পাথরের আবেদন করা হয়েছে। আরো আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আবেদনে উল্লেখিত ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হরিণ ঝিরি, চিতারঝিরি, ছমুখাল, পাইকঝিরি, কাপঝিরি, কোলারঝিরি, কাঠাঁলছড়া, সাপমারা ঝিরি ও শামছড়ি ছড়া-ঝিরিতে কোন ভাসমান পাথর নেই মর্মে জানিয়েছেন, ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় জনসাধারণ। এই প্রতিবেদক সহ সংবাদকর্মীদের একটি টিম সরজমিনে বর্ণিত ছড়া ও ঝিরি সমূহ পরিদর্শনে ভাসমান কোন পাথরের অস্তিত্ব পাননি।

ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানান, আমার ইউনিয়নের কোন ঝিরি ছড়াতে ভাসমান পাথর নেই। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট গত ৪/৫ বছর ধরে পাহাড় খুঁড়ে ও মাটি কেটে পাথর উত্তোলন করছে। আমাদের বাধা প্রশাসন সহ কেউ পাত্তা দিচ্ছেনা।

পাথরের তদন্তের দায়িত্ব থাকা কানুনগো বিজয় শংকর চাকমা জানান, আমি কোন তথ্য দিতে পারবনা।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সায়েদ ইকবাল জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসন হতে প্রেরিত পাথরের আবেদন সমূহ তদন্তের জন্য কানুনগোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কানুনগো প্রতিবেদন পাওয়ার পরে তা জেলা প্রশাসনের নিকট প্রেরণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: