ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জেলার ৩২ মাধ্যমিক স্কুলের সাড়ে ৩শ’ শিক্ষকের মানবেতর জীবন

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
দশ বছর আগে সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার পরও এমপিও হয়নি (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) জেলার ৩২টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে চাকুরী স্থায়ীকরণের আশায় প্রহর গুণছেন উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাড়ে ৩ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দীর্ঘদিন যাবৎ এমপিও ভূক্তির জন্য নানা আন্দোলন করেই যাচ্ছেন। কিন্তু বিধি বাম । প্রহর যেমন কাটছেনা , কাটছেনা জীবন ও।
জেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৮ উপজেলায় স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে ১০টি এবং দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে ১৯টি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক বেতন এবং সাহায্য সহযোগিতায় চলছে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারীর পরিবার। এমপিও’র (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) আশায় অনেকে দশ থেকে পনের বছর যাবৎ স্বল্প বেতনে শিক্ষকতা করে আসলেও পরিবারে চলছে অভাব অনটনসহ সিমাহীন সমস্যা। গেল বছর এমপিও’র অগ্রাধিকার তালিকা থেকে শতভাগ ফলাফল অর্জনকারী ১২টি স্কুল এবং মাদ্রাসা বাদ পড়ায় এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের মাঝে বিরাজ করছে চরম হতাশা। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত জেলার উক্ত ২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১২ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অথচ এমপিও বঞ্চিত মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপজেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যান হল (বিদ্যালয়) সদর উপজেলায় ৪টি, উখিয়া উপজেলায় ১টি, টেকনাফ উপজেলায় ১টি, কুতুবদিয়া উপজেলায় ১টি, মহেশখালীতে ৩টি বিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া স্বীকৃতির অপেক্ষা রয়েছে জেলায় আরো ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। জেলায় বর্তমানে ১২৪টি এমপিও ভূক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
অপরদিকে জেলায় স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে ১৯টি। এদের মধ্যে ৭টি মাদ্রাসার দাখিলে পরপর ৩ বছর শতভাগ উত্তীর্ণের ফলাফল রয়েছে। তবুও তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি। এমপিও’র অপেক্ষা বেড়েছে। জেলায় এমপিও’র অপেক্ষায় থাকা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত উপজেলা ভিত্তিক দাখিল মাদ্রাসার সংখ্যা হল সদর উপজেলায় ৮টি, রামুতে ১টি চকরিয়ায় ৩টি, উখিয়ায় ২টি, টেকনাফে ৪টি, মহেশখালীতে ১টি সহ মোট ১৯টি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। এছাড়া জেলায় এমপিওভূক্ত দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে ৯১টি। স্বীকৃতিবিহীন মাদ্রাসা রয়েছে ২৩টি। জেলায় সর্বমোট ১৩৩টি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে।
এদিকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম মাতবর জানান, আমরা সারা দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষকদের চাকুরী জাতিয়করণের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। আগামি ২৮ ডিসেম্বর কেন্দ্রিয় কমিটি মাধ্যমিকের সকল শিক্ষকদের চাকুরী জাতিয়করণের দাবিতে জরুরী সভা আহবান করেছে । আমরা সেখানে উপস্থিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের সকল দাবি উপস্থাপন করব। আশাকরি তিনি আমাদের শিক্ষকদের আর্তনাদ শুনবেন।
অপরদিকে অবকাঠামোগত সুবিধা মাদ্রাসা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত সকল শর্ত পূরণের পরও দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ অপেক্ষায় থাকা জেলার উক্ত ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও’র জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এমপিও বঞ্চিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ।

পাঠকের মতামত: