ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

লামায় রুপসীপাড়া ইউনিয়নে সোলার বিতরণে অনিয়ম, সরকারী সোলারে ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যবসা

solমোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় “পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শীর্ষক প্রকল্পের” আওতায় বান্দরবানে লামায় ৭টি ইউনিয়নের সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। উক্ত প্রকল্পে অধিনে সোমবার (২৮ আগষ্ট) লামা উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নে ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডে প্রথম ধাপে ২২০টি পরিবার মাঝে বিনামূল্যে সোলার বিতরণ করা হয়।

উক্ত সোলার বিতরণে ও সুবিধাভোগী নির্বাচনে প্রত্যেকজনের কাছ থেকে অফিস ও আনুসাঙ্গিক খরচের কথা বলে দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে সরকারের উন্নয়নমুখী কোটি টাকা প্রকল্প প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টরা ব্যাক্তিগত সামান্য সুবিধা নিতে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উক্ত ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বেপারী ও ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি নুর জামাল।

নাম প্রকাশ না সত্ত্বে সোলার গ্রহণকারী কয়েকজন সুবিধাভোগী বলেন, আমাদের কাছ থেকে খরচের কথা বলে দেড় হাজার থেকে ৩ হাজার পর্যন্ত টাকা নিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টরা। বলা হয়েছে যদি মুখ খুলি তাহলে সোলার দেয়া হবেনা এবং ইউনিয়ন পরিষদের সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। এই সোলার সরকার ফ্রি দিয়েছে নাকি আপনি ক্রয় করেছেন এমন প্রশ্নে সুবিধাভোগীরা বলেন, যেহেতু আমাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে, তাই আমরা মনে করি এইটা আমাদের ক্রয়করা সম্পত্তি।

সচেতনমহল বলছেন, গড়ে প্রতিটি সোলারের মূল্য ২০ হাজার টাকা। প্রত্যেক দুঃস্থ মানুষের জন্য এইটা সরকারের পক্ষ থেকে উপহার। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানরা প্রত্যেক সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে সামান্য টাকা নেয়ায় দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সরকার যে এত টাকা দামের সোলার দিল তার কৃতিত্ব নষ্ট হয়ে গেছে। তারা বলেন, সোলার সরকারের কিন্তু ব্যবসা চেয়ারম্যানের।

সোলার গ্রহণকারী রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বাচ্ছু বলেন, আমার কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়েছে। আমার বাবা আবুল বশর এর কাছ থেকে ২ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। সোমবার ইউনিয়ন পরিষদে সোলার বিতরণ কালে সরজমিনে গেলে সুবিধাভোগী অনেকে প্রতিবেদকের কাছে টাকা নেয়ার বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন।

রুপসীপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বেপারী বলেন, তালিকা তৈরি যথাযতভাবে করা হয়নি। আমার আওয়ামীলীগ পরিবারের অনেক দুঃস্থ ও অসহায় মানুষকে সোলার দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা কোন বক্তব্য প্রদান না করে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া কয়েকজন সাংবাদিকদের সাথে উদ্ধত আচরণ করেন। শত মানুষের সামনে চিৎকার করে বলেন, টাকা নিয়েছি পারলে কি করবে কর।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু বলেন, এবিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সোলার প্যানেল প্রকল্পের টেকনিক্যাল কর্মকর্তা আশুতোষ চাকমা, ইঞ্জিনিয়ার সজিব চাকমা, ওয়ার্ড মেম্বার আবুল এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

পাঠকের মতামত: