ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ভূমি অধিগ্রহণে দালালচক্রের ১০ অফিস চিহ্নিত

matarইমাম খাইর, কক্সবাজার :::
কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার (এলও) কার্যালয়কেন্দ্রীক অর্ধশত কাছাকাছি দালাল-প্রতারক রয়েছে। শহরের বিভিন্ন হোটেলকেন্দ্রিক অন্তত ১০টি দালাল অফিস রয়েছে। ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্যের ভিক্তিতে দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে এসব দালাল অফিসের খোঁজ মেলে।

শহরের লালদীঘিরপাড়স্থ ইডেন গার্ডেন সিটির নীচ তলার একটি অফিস নিয়ন্ত্রণ করে দালাল রনি, মোস্তাফিজ, শফিক, হোছন, মোর্শেদ মেহেদী। ঢাকা হোটেলে আবুল হাশেম, সাদ্দাম, হেলালের অফিস। সথে রয়েছে আরো কয়েক জন দালাল। ঝাউতলার একটি আবাসিক হেটেলে দালাল সাহাব উদ্দিন, হাজি ফরিদ, আবু ছালেক এর অফিস। হোটেল সাগরগাঁও কেন্দ্রীক দালাল মামুন সিন্ডিকেট। কস্তুরাঘাট সংলগ্ন হোটেল গার্ডেনের ১ নং কক্ষে ইব্রাহিম, আমান উল্লাহ সিন্ডিকেট অফিস। হোটেল এম. রহমান সিটিতে খোরশেদ আলম সিন্ডিকেট, শহীদ সরণিস্থ হোটেল কোহিনূর-এ রমিজ, মতিন, আসাদ উল্লাহর অফিস। বদর মোকাম সড়কে বাবর চৌধুরী ও দিদারের অফিস। দালাল মুসা, হেলাল ও মৌলভী মোর্শেদের অফিস হলিডে মোড়ের হোটেল এলিন পার্কে। হোটেল হলিডে-তে অফিস রয়েছে অলিদ চৌধুরী, ঢাকার আহাদ, মিঠুন, কানুনগো দিদারের। এছাড়া বিভিন্ন বাসাবাড়ী কেন্দ্রীক ভ্রাম্যমান কাজ করে- এমন অনেক দালাল রয়েছে। এসব দালালরা ক্ষতিপূরণের টাকা চেয়ে আবেন করতে আসা লোকদের কৌশলে জিম্মি করে ফেলে। জমির মালিকদের টাকা আদায় করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নগদ বা অগ্রিম চেকের মাধ্যমে ২০%-৩০% কমিশন খুইয়ে নেয়।

অভিযোগ রয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণ শাখার পিয়ন হারুন, মঈন উদ্দিন, বশির ও চিন্তা বালার হাতের ছোয়া ছাড়া কোন ফাইলপত্র নড়েনা। কাজ করেন কমিশনের বোঝাপড়ায়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের বিনিময়ে অধিগ্রহণকৃত জমির নথি, মামলা, আপত্তিসহ গুরুত্বপূর্ণ পত্রাদি গোপন এবং দালালচক্রের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় অন্তত ২৩ কোটি টাকার চেক আত্নসাতের। ভুক্তভোগীরা জানায়, কমিশন বাণিজ্যের মূল হুতা কানুনগো দিদার আহমদ ও সার্ভেয়ার মনির-২। সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে তারা ইতোমধ্যে কয়েক কোটি টাকার মালিক। ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আবু আসলামের কাছে জানতে চাইলে অভিযোগের বিষয়ে সঠিক তথ্য পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

ভুক্তভোগীরা জানায়, কমিশনের টাকা নিজেরা বহন করার শর্তে জমি মালিকদের কাছ থেকে ফাইল নিলেও তাড়াতাড়ি চেক পাবার আশায় জমি মালিকদের টাকা যোগাড়ে চাপ প্রয়োগ করছে দালাল চক্র। এতে দালালদের ফাইল নিয়ে কাড়াকাড়ি, পাল্টা পাল্টি অভিযোগে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মাতারবাড়ির অধিগ্রহনকৃত জমির মালিকরা। জমি একজনের তবে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আঁতাত করে টাকা নিয়ে গেছে আরেক জন। এ ধরণের একাধিক প্রমান রয়েছে কক্সবাজার ভূমি হুকুম দখল অফিসে। তবে জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন সংশিষ্ট কর্মকর্তাদের সাফ বলে দিয়েছেন, অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকরা যেন হয়রানির শিকার না হয়। তিনি জানান, সরকারী অফিস মানুষের সেবার জন্য। হয়রানি বা অনিয়ম কোন ভাবেই মেনে নেয়া হবে না। দালালের খপ্পরে না পড়ার জন্য বার-বার সবাইকে বলা হচ্ছে। যে কোন অভিযোগ তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। কেউ অভিযোগ করলে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাতারবাড়ির জমির মালিক জাকের হোসেন সাংবাদিকদের জানান, কয়েক মাস পূর্বে আমার জমির টাকা উত্তোলন করার জন্য ২৫ ভাগ কমিশনের ভিত্তিতে ২৩ কোটি টাকা লোপাটের নায়ক দালাল নুরুল আবছার এবং সৈয়দ হোসেন এর সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তি ছিল জমির ক্ষতিপুরণের চেক পাওয়া পর্যন্ত খরচের টাকা দুই দালাল বহন করবে। তারপরও তাড়াতাড়ি ফাইল নড়াচড়া করাতে টাকা দিতে হবে বলায় দুই দালালকে প্রথমে দুই লাখ ও পরবর্তীতে ৪লাখ টাকাসহ মোট ৬ লাখ টাকা নগদ প্রদান করি। জমির মালিক সাদাত হোসেন জানান, তার অগোচরেই আত্মীয় স্বজনরা জমির টাকা উত্তোলন করে নিয়ে গেছে। আমার চাচা জাকের হোসেন আমার পিতা, চাচা ও অপরাপর ফুফুদের অংশের টাকা ভূঁয়া দলিল দেখিয়ে (রোয়েদাদ নং-২২৮) টাকা হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বর্তমানে।

কয়েকজন জমি মালিক জানান, ডিসি সাহেব ভাল মানুষ। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জমির মালিকরা ক্ষতিপুরণের টাকা পেতে যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে জন্য সদা তৎপর জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন। আসল ব্যাপারটা হচ্ছে- মধ্যম সারির কিছু কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী দালালের কারণে ডিসি স্যার কোনভাবেই পেরে উঠতে পারছেন না। অভিযোগ পেলে তিনি তাৎক্ষণিক দালাল মুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তবে কয়েকদিন পর দুর্নীতিবাজ মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের যোগশাজসে ফের দালালচক্র দখল করে নিচ্ছে ভূমি অধিগ্রহন অফিস। জমি মালিকদের কেউ কেউ দালালের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে বুঝতে পারেন যে, দালাল ছাড়া তাদের জমির টাকা পাওয়া মুশকিল। তাই বাধ্য হয়ে তারা দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন। জমির ক্ষতিপুরণের টাকা পাবার আশায় দালালের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে বসতভিটা পর্যন্ত বন্ধক দিয়েছে জমি মালিকরা। আর দালালী করে এবং জমি একজনের, তবে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আঁতাত করে টাকা নিয়ে দিয়েছে আরেক জনকে। এসব দালালী ও দুর্নীতি করে বাড়ি গাড়ির মালিক বনে গেছে একাধিক দালাল। ভূমি অধিগ্রহণ অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা দালালদের প্রাধান্য দিয়ে থাকে। মাতারবাড়ী এবং ইনানী মৌজার জমি মালিকদের কাছ থেকে প্রতি জন টাকা (ঘুষ) আদায় না করে দালালের মাধ্যমে বান্ডিল আকারে নেয়াটা শ্রেয় মনে করে দালালদের সমাদর করে থাকে ওই অফিসের কয়েক কর্মকর্তা। ২৩ কোটি টাকা লোপাটে জড়িত কয়েকজন ছাড়াও অন্তত ২৫-৩০জন দালাল প্রতিদিন ভূমি অধিগ্রহন অফিস ঘিরে রাখে। তাদের ভিড়ে অধিগ্রহণকৃত জমি মালিকরা সরকারী অফিসে সেবা নিতে গেলেও কোন পাত্তাই পাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

এদিকে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ২৩ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলও) শাখার প্রধান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার ও জলা জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী নুর মোহাম্মদ সিকদারকে সোমবার (৩ এপ্রিল) সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযানকালে দুদকের চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক (এডি) অজয় কুমার সাহা, সহকারী কমিশনার (এসি) গোলাম মোস্তফা এবং ওসমান গণি উপস্থিত ছিলেন।

একই দিন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কক্সবাজারের সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে দুদকের আরেকটি টীম। তিনিও দুদকের মামলার আসামী। ধৃতদের সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কক্সবাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আবদুর রহিম জানান, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর মহেশখালী মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ২৩ কোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেপশাল জজ আদালতে মামলা করেছিলেন মাতারবাড়ির বাসিন্দা একেএম কায়সারুল ইসলাম।

এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া তিনজন ছাড়াও আসামী করা হয় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন, সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাফর আলম, সাবেক জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আরেফিন আক্তার নুর, মহেশখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোং বাংলাদেশ লি.-এর পিডি ইঞ্জিনিয়ার মো. ইলিয়াছ, সাবেক কাননগো আবদুল কাদের, সাবেক সার্ভেয়ার বাদশা মিয়া, মহেশখালী মাতারবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, মহিবুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ হারুন, জমির উদ্দিন, এরফান, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মো. সেলিম, জিএ ছমিউদ্দিন, নুর আহমদ, মো. নুরুল ইসলাম, আবুল বশর, আশরাফ আলী, দানু মিয়া, মির কাশেম, মো. সেলিম উদ্দিন, রিদুয়ান, আনিছুর রহমান ও ছকি আলম। বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলাটি আমলে নিয়ে ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারির মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠায়। এ মামলায় গতকাল তিনজন গ্রেফতার হন।

সূত্র জানায়, দেশের এযাবতকালের সর্ববৃহৎ প্রকল্প মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের আলোচিত ২৩ কোটি টাকা লোপাটের ধৃত নায়কদের সহযোগীদের নানা আবদার রক্ষা করতে গিয়ে পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছেন জমির মালিকরা। দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত ইতোপূর্বে ও বর্তমানে ধৃতদের আস্থাভাজন দালালদের কথা না পেলে অধিগ্রহনকৃত জমির ক্ষতিপুরণের ফাইল নড়াচড়া করে না বলে জানা গেছে। ওই দালালদের মাধ্যমে টাকা (ঘুষ) আদায়ের ইশারায় না পেলে তদ্বির করেও জমির মালিকদের প্রাপ্য টাকা মিলছে না। আলোচিত ২৩ কোটি টাকা লোপাটের মামলায় একাধিক কর্মচারী গ্রেফতার হলেও তাদের সৃষ্ট দালালের কারণে জেলা ভূমি হুকুম দখল অফিসে সেবা পাচ্ছে না ভূমি মালিকরা। ওই দালালদের আবার বাধ্য করে টুপাইস কামাই করে নিচ্ছে কতিপয় পাতি নেতা। দালালদের সঙ্গে কমিশনে অংশীদারিত্বের ভাগ বসিয়ে জমি মালিকদের ফাইল নিয়ে দৌড়ছে ওসব ধান্ধাবাজ নেতা। তারা ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা আবু আসলামকে শতকরা ১৫ ভাগ, এক কর্মকর্তার টেবিল থেকে অপর কর্মকর্তার টেবিলে ফাইল নিতে ১০ পার্সেন্ট ইত্যাদি কথা বলে টাকা আদায় করে জমি মালিকদের ফতুর করে ফেলছে। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অধিগ্রহনকৃত জমির ক্ষতিপুরণের টাকা পেতে এসে অনেকে মাসের পর মাস কক্সবাজারে হোটেল ভাড়া দিয়ে চলছে।

এদিকে দুদক টীমের হাতে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলও) শাখার প্রধান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার, সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলাম ও এডভোকেট নুর মোহাম্মদ সিকদার সোমবার গ্রেপ্তারের পর তড়িঘড়ি করে ৪০ দালালের তালিকা প্রকাশ করেছে ভূমি অধিগ্রহন শাখা। তবে, ওই তালিকায় অনিয়ম, জালিয়াতি, মানুষ হয়রানীর অন্যতম হুতা অনেকের নাম বাদ পড়েছে। বিশেষ করে শহরের লালদীঘিরপাড়ের সিকদার কমপ্লেক্সে অফিস গেড়ে বসেছেন সঞ্জয় বাবু। তার অফিসটি ‘সেমি এলও অফিস’ বলে অনেকেই জানান। এলও অফিসের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে তার দহরম মহরম খাতির। তিনি এলও অফিসে বসে অনেক সময় ‘বস’ সেজে কাজ করেন। কর্তাবাবু-সঞ্জয় বাবু খাতিরটা ওপেন সিক্রেট। এ কারণে সঞ্জয় বাবুরা অধরা। এ নিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাকে দুষছেন ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা। অন্যদিকে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগ সাজসে দালালীপনা চলে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থার সদিচ্ছা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। দালালদের তালিকা প্রকাশকে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকার’ বিশেষ কৌশল মনে করছেন সচেতনমহল।

সোমবার ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত দালালদের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা হচ্ছে- মোঃ রফিক প্রকাশ ভেন্ডার রফিক, মো. মামুন, শওকত ইকবাল মুরাদ, মোস্তাফিজ, রনি, হোছাইন, মুছা, শাহাদত হোছাইন, ছৈয়দ নূর, আবুল কাশেম, মৌলভী বশর, নুরুল আবচার, আবু ছালেক, হাজি ফরিদ, সাহাব উদ্দিন, সানা উল্লাহ, খোরশেদ আলম, ফজল কাদের, আমির খলিফা, আলি মিয়া, হেলাল উদ্দিন, আরব আলী, আবুল হাশেম, সাদ্দাম হোছাইন, হাজী ছৈয়দ, নুরুল আবছার, শফিক, আমান উল্লাহ, মো. ইব্রাহিম, সোহেল, আবদুল মতিন, আছাদ উল্লাহ, মৌঃ হাবিবুর রহমান, সরওয়ার, দিদার, চট্টগ্রামের মুছা, ঢাকার মিঠুন, আহাদ, উখিয়ার হেলাল উদ্দিন ও বশর। তালিকার বাইরেও আরো অন্তত ২০/৩০ জন দালাল রয়েছে। এদের অনেকেই ২৩ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় জড়িত রয়েছে।

ভূক্তভোগীরা জানান, প্রতিদিন অন্তত ৫০/৬০ জন দালাল ভূমি অধিগ্রহন অফিস ঘিরে রাখে। বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে জমি মালিকদের হয়রানি করে এরা। এসব দালালদের সাথে কানুনগো দিদার আহমদ, সার্ভেয়ার মনির-১, মনির-২, সাইফুল, রাসেল, পিয়ন হারুন, মঈন উদ্দিন, বশির, চিন্তা বালার অন্তরঙ্গ খাতির। এ নিয়ে ইতিপূর্বে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়।

দালালদের তালিকা প্রকাশ করলেও নিজ অফিসের অভিযুক্তদের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানতে চাইলে ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা আবু আসলাম রেগে বলেন, কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আপনি মামলা করেন। তারপরে দেখা যাবে কি করা যায়। এর আগে আমার করার কিছুই নেই। ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার এমন আচরণ দেখে সঙ্গে থাকা কয়েকজন সংবাদকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

২৩ কোটি টাকা দুর্নীতির মামলায় নিজ অফিসের কর্মকর্তা গ্রেফতার হওয়ায় ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা আবু আসলাম বেশামাল হয়ে গেছেন বলে মনে করছেন সচেতনমহল। দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নেপথ্যে অধিগ্রহণ কর্মকর্তার যোগসুত্র বের করার দাবী অনেকের।

পাঠকের মতামত: