ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফুলের বাম্পার ফলনে চাষির মুখে হাসি

golapনিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :::

চকরিয়া উপজেলার হারবাং ও বরইতলী ইউনিয়ন দুটি ইতোমধ্যে ফুলের গ্রাম হিসেবে দক্ষিণ চট্টগ্রামে পরিচিতি লাভ করেছে। প্রায় ১৫ বছর ধরে দুটি ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ জমিতে চাষ করা গোলাপ ও গ্যাডিওলাসসহ নানাজাতের ফুল প্রতিবছর বিশেষ দিবসগুলোতে দেশের বিভিন্ন স’ানে সরবরাহ করা হচ্ছে। মাটির উর্বরতা শক্তি ও গুণগত মান ভাল হওয়ায় এখানকার জমিতে ফলন হওয়া ফুলের যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি সতেজ ফুলের সৌরভে বিমোহিত করছে ক্রেতা সাধারণকে। অপরদিকে অন্যের দেখাদেখি এবং প্রতিযোগিতামুলক বাজারের কারণে সময়ের পরিক্রমায় এ অঞ্চলে ফুলের চাষ বেড়ে চলছে।
ফুলের গ্রামের দুই শতাধিক বাগানে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে ঘিরে গোলাপ ও গ্ল্যাডিওলাস ফুল বিক্রির ধুম পড়ে। বিশেষ দিনে ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাগানগুলোতে সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে ফুল কাটার মহোৎসব।
সোমবার বিকেলে বরইতলীর একাধিক বাগান ঘুরে দেখা গেছে, ভালবাসা দিবস উপলক্ষে স’ানীয় বাগান থেকে প্রায় আড়াই লাখ পিস্ গোলাপ বিক্রি হয়েছে। বাগান মালিক সমিতির তথ্য মতে, দুই শতাধিক বাগান মালিকরা ভালবাসা দিবস উপলক্ষে এদিন প্রায় ১০লাখ টাকার গোলাপ ফুল বিক্রি করেছে। বেশিরভাগ ফুল সরবরাহ দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের বৃহত্তম ফুলের বাজার চেরাগী পাহাড় এবং কক্সবাজার শহরে। স’ানীয় ফুল চাষিদের মতে, উপজেলার বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে প্রথম দিকে অল্প জমিতে নানা জাতের ফুলের চাষ হলেও সময়ের পরিক্রমায় এখন দুইশত একর জমিতে হচ্ছে ফুলের চাষ। ফুলচাষি ও সমিতির কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, স’ানীয় দুই শতাধিক বাগান থেকে চাষিরা ফুল বিক্রি করে বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো আয় করছেন। ফুল চাষ করে বর্তমানে বেশির ভাগ পরিবারের আর্থিকভাবে ভাগ্য বদল হয়েছে। বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার বলেন, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের জমিতে ফলন করা গোলাপ ও গ্যাডিওলাসসহ নানা জাতের ফুল দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হচ্ছে। ফুল চাষ ও বিক্রি করে এলাকার অনেক পরিবার এখন ভাল অবস’ানে আছে। হাজার মতো মানুষের কর্মসংস’ান হয়েছে। তামাকের পরিবর্তে ফুলচাষ অবশ্যই পরিবেশবান্ধব ও লাভজনক। তাই সরকারকে ফুল চাষিদের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।
ফুলের গ্রামের ভেতরে গড়ে তোলা হারবাংয়ের অভিজাত রেস্তোরাঁ ইনানী রিসোর্ট। রেস্তোরাঁটির সাজানো হয়েছে ফুলের বাগানে। জানতে চাইলে ইনানী রিসোর্টের ব্যবস’াপনা পরিচালক মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রতিদিনই সরকারি-বেসরকারি এবং পারিবারিক ও পার্টিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা আছে। তবে ফুলের অনন্য চাহিদা থাকে জাতীয় দিবস অন্যতম।
বিশেষ দিবসগুলোতে বরইতলী ও হারবাং জনপদের বাগানের সতেজ ফুল যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজারে যাচ্ছে এটা আমাদের জন্য বড় গৌরবের। আশা করি এলাকার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল চাষিদের আরো উৎসাহ দেয়া হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ বলেন, উপজেলার বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে প্রায় আড়াইশত একর জমিতে বর্তমানে গোলাপ ও গ্যাডিওলাস ফুলের চাষ হয়েছে। এক সময় শখের বসে কেউ কেউ ফুল চাষ শুরু করেন। এখন দুই ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে। এতে চাষিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: