ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘর ভাঙলো সালমার

almaশোবিজ ডেস্ক :::

শোবিজ অঙ্গনে একের পর এক সংসার ভাঙনের ঘটনার তালিকা কেবল দীর্ঘই হচ্ছে। সেই তালিকায় এবার যোগ হলেন ফোক ঘরানার জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মৌসুমি আক্তার সালমা। ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সংগীত জগতে আসা এ শিল্পীর ঘর ভাঙলো এবার। স্বামী দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলীর সঙ্গে তার আনুষ্ঠানিক ডিভোর্সও হয়ে গেছে। গতকাল বিকাল থেকে টক অব দ্য শোবিজ-এ পরিণত হয়েছে সালমার এ বিচ্ছেদের খবরটি। দাম্পত্য কলহের জের ধরেই শিবলী সাদিকের সঙ্গে তার সংসার ভেঙেছে। গত ২০শে নভেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডির একটি রেস্তরাঁয় দুই পরিবারের উপস্থিতিতে তাদের তালাকের কার্য সম্পন্ন হয়। এ সময় সালমাকে মোহরানার ২০ লাখ ১ টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালের ২৬শে জানুয়ারি দিনাজপুরের পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরীর স্বত্বাধিকারী শিবলী সাদিকের সঙ্গে হঠাৎ করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন সালমা। এরপর ২০১৪ সালের ১লা জানুয়ারি সালমার কোলজুড়ে আসে এক কন্যাসন্তান। তার নাম স্নেহা। বিয়ের বছর দুয়েক আগে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে একটি অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করতে গেলে শিবলীর সঙ্গে সালমার পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরেই দুই পরিবারের মধ্যস্থতায় সম্পূর্ণ ঘরোয়াভাবে তাদের বিয়ে হয়। এরপর মিডিয়ায় কাজ অনেকটাই কমিয়ে দেন সালমা। তবে গত এক বছর ধরে আবারও গানের জগতে সরব হন এ শিল্পী। সালমা মিডিয়ায় কাজ করুক সেটা চাইতেন না তার স্বামী। এই নিয়েই মূলত কলহটা শুরু হয়। যার ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত ডিভোর্স হয়েছে বলে জানিয়েছেন সালমা। এদিকে এ বিষয়ে সালমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে মুঠোফোনে বলেন, এটা আসলে আমার দুর্ভাগ্য। আসলে শিবলী আমাকে বিয়ে করেছিলো মোহে পড়ে। বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে সেই মোহ কেটে গিয়েছিলো। প্রথম থেকেই সে আমাকে প্রেসার দিতে থাকে যে মিডিয়াতে আর কাজ না করার। আমি বয়সে তখন অনেক ছোট ছিলাম। এসএসসি পাস করেছি মাত্র। পরবর্তীতে সে আমাকে গান বাজনাও ছাড়তে বলে। যদিও আমার গানেই নাকি মুগ্ধ হয়ে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো সে। এক সময় শিবলী আমাকে সন্তানও নিতে বলে গান বাজনার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে। আমিও তার কথা শুনলাম। স্নেহার জন্ম হলো। অনেক দিন গান থেকে বিরতি নিয়েছিলাম তখন। কিন্তু তাতেও শিবলীর মন জয় করতে পারিনি। আমাকে একদমই সময় দিতো না সে। একা একা ঘুরে বেড়াতো। স্ত্রী হিসেবে কোনো ধরনের মূল্যায়নই করতো না। এ বিষয়ে সালমা আরো বলেন, আমার কোনো কথাই সে শুনতো না। আমি এলএলবি পড়ছি। আমার ফলাফলও অনেক ভালো। অথচ হঠাৎ করেই আমার পড়াশোনাও বন্ধ করে দেয় সে। তার আশেপাশে অনেক বাজে লোকজন ঘোরাফেরা করে। যার কারণে তারাই পরামর্শ দেয় আমার পড়াশোনা বন্ধ করার। এর বাইরে আমাকে টেলিভিশনে লাইভ করতে দিতো না। বিদেশে প্রোগ্রাম করতে দিতো না। বিদেশে যারা প্রোগ্রাম করে তারা নাকি বাজে। আমার সব কাজই বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো। আমি সব কিছুই মুখ বুজে সহ্য করছিলাম। কিন্তু তার ভালোবাসাটা আমি পাচ্ছিলাম না। আমার বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছুই সহ্য করেছি। অনেক সময় গালাগাল করতো, মারধরও করতো শিবলী। আমার প্রতি তার যেন একদমই অনীহা চলে এসেছিলো। এদিকে গত প্রায় পাঁচ মাস যাবৎ শিবলীর সঙ্গে থাকছেন না সালমা। বাবা-মার সঙ্গে বাসা ভাড়া করে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় থাকছেন। ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানতে চাইলে সালমা বলেন, সর্বশেষ একটি কর্পোরেট শো করতে গিয়েছিলাম। আমার সব শোতে আমার সঙ্গে মামা ও মামী থাকে। কিন্তু সেদিন রাতে শো করে মামার সঙ্গে বাসায় ফিরতেই দেখলাম ভিন্ন চিত্র। আমার মামার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে দিলো শিবলী। এমনকি তাকে মারার হুমকিও দিলো। সেদিন আমাকে অনেক মারধর করেছিলো। আমি এরপর সুইসাইডও করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পারিনি। তারপর থেকে বাবা-মার সঙ্গে থাকছি, তাও ৫ মাস এর মতো হবে। শেষে অবশ্য শিবলীই ডিভোর্সের কথা বলে। একদিকে আমিও কোনো কাজ করতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে গেলাম ডিভোর্সে। শেষবার বাবা-মা যখন তাকে সংসার রক্ষার কথা বলে, শিবলী বলেছিলো সালমাকে চোখের সামনে থেকে নিয়ে যান। না হয় মেরে ফেলবো। এরপর ২০শে নভেম্বর ডিভোর্স হয়। তবে একটি কথা হলো আমি শেষ চেষ্টা করেও সংসার টেকাতে পারিনি। এটাই আমার দুর্ভাগ্য।

পাঠকের মতামত: