ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

শহরে ৩ কি.মি. জুড়ে পার্কিংহীন বাস কাউন্টার

janzotতুষার তুহিন, কক্সবাজার :
বিআরটিএ’র অনুমতি ব্যতিত ও পার্কিংয়ের জায়গা ছাড়াই শহরে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক বাস কাউন্টার। ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হয়বরল এসব কাউন্টারের কারণে শহরে যানজট লেগেই রয়েছে। রাস্তায় উপর রেখেই এসব গনপরিবহনে যাত্রী উঠানামা করানো হয়। অনুমতিহীনভাবে দিনের বেলায় এসব গাড়ি প্রবেশের কারণে শহরে নিত্য যানজট লেগেই রয়েছে। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শহরবাসীকে। আর এ থেকে উত্তরণের জন্য বাস কাউন্টারগুলো শহরের বাইরে সরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলেছে সচেতন মহল। তবে অভিযোগ রয়েছে ট্রাফিক পুলিশকে অনৈতিক সুবিধা দিয়েই এসব কাউন্টারগুলো চালায় তাদের কার্যক্রম।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত শহরে বাস, ট্রাক , লরি সহ বড় ধরনের যান চলাচলে নিষ্ধেজ্ঞা রয়েছে জেলা প্রশাসনের। কিন্তু সেই নিষেধজ্ঞা অমান্য করে ও বিআরটিএ’র অনুমতি না নিয়ে শহরে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক বাস কাউন্টার। এর মধ্যে ঝাউতলা রোড়ে আজিজিয়া এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ভবনের নিচে ইনা ট্রান্সপোর্ট, হোটেল ঝাউবীথির নিচে ঈগল পরিবহন, হোটেল সাগরগাঁওয়ের নিচে রিলাক্স ট্রান্সপোর্ট, হোটেল আলহেরার নিচে সেন্টমার্টিন পরিবহন, সৈকত স্কুল মার্কেটে ইয়ার ৭১, শ্যামলী পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস, সীকুইন মার্কেটে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইকোনো সার্ভিস, হোটেল সৈকতের নিচে রয়েল কোচ, নুর হোটেলের সামনে হানিফ পরিবহন সার্ভিস লিমিটেড ।
এদের মধ্যে কলাতলী রোড়ের হোটেল ওশান প্যালেসে শ্যামলী পরিবহন,অস্টার ইকোতে ইউনিক সার্ভিস, হোটেল সী হিলে ইয়ার ৭১ পরিবহন, স্টার লাইন সার্ভিস, সী কক্স রির্সোটে হানিফ এন্টার প্রাইজ, হোটেল মেরিন প্লাজার পাশে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস, ইয়োলো লাইন পরিবহন, রিলেক্স ট্রান্সর্পোট ও বিআরটিসি কাউন্টার, সুগন্ধা গেস্ট হাউসে শ্যামলী পরিবহন, হানিমুন রিসোর্টে গ্রীন লাইন, চেয়ারম্যন শরীফ বাদশার বিল্ডিংয়ে দেশ ট্রাভলস, হোটেল সামস প্লাজায় বাড্ডা এক্সপ্রেস, তুবা লাইন , হানিফ ও ইউনিক সার্ভিস, দেলোয়ার প্যারাডাইজে ইকোনো সার্ভিস, হোটেল সপ্নালয়ে ইনা সার্ভিস, মোহাম্মদীয়া গেস্ট হাউসে রিলাক্স পরিবহন ও তুবা লাইন, হোটেল সী পার্কে শ্যামলী পরিবহন,গ্যালাক্সী রিসোর্টে ইউনিক পরিবহন ,হানিফ এন্টারপ্রাইজ, সীসান রির্সোটে হানিফ পরিবহন,আলবাট্রাস রির্সোটে ঈগল পরিবহন,তাহের ভবনে শাহ আমিন সার্ভিস। এছাড়া তাহের ভবনের দক্ষিণ পাশে কটেজ জোনের সম্মুখে রয়েছে ইকোনো সার্ভিস, বিআরটিসি, জে বি এক্সপ্রেস,স্টার লাইন, রয়েল কোচ সার্ভিস, সেন্টমার্টিন পরিবহন, তিশা সার্ভিস ও জে বি এক্সপ্রেস।
এই অর্ধশতাধিক কাউন্টারের কারণে প্রতিদিন শহরে প্রধান সড়ক সহ কলাতলী রোড়ে যানজট লেগেই রয়েছে। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয় স্কুল পড়–য়া ছাত্রছাত্রীসহ, শহরে আগত পর্যটক ও লক্ষাধিক শহরবাসী।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সোসাইটির সহ সভাপতি কলিমুল্লাহ জানান, এসব কাউন্টারের কারণে দিনের বেলায় গন পরিবহনগুলো শহরে প্রবেশ করে ফলে যানজট লেগেই থাকে । কাউন্টারগুলো সরিয়ে নিলে গাড়ি প্রবেশ করবে না। ফলে যানজট নিয়ন্ত্রনে আসবে।
আর কক্সবাজার বিআরটিএ কর্মকর্তা পার্কণ চৌধূরী জানান, কাউন্টারগুলোর অনুমোদন নেই। এসব কাউন্টারগুলোতে কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান ও চালানো হয়েছ্ েকিন্তু তারপরও সর্তক হয়নি কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার দেশ ট্রাভেলস পরিবহন কাউন্টারে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ( এএসপি) আব্দু সালাম জানান, অনৈতিক কোন সুবিধা পর্যটনের স্বার্থ চিন্তা করে শহরে গনপরিবহন প্রবেশের সুযোগ দেয় ট্রাফিক পুলিশ। তবে এতবড় শহরে কোথাও কোন পার্কিংয়ের জায়গা নেই । এই সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত যানজট নিয়ন্ত্রন সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, এসব অবৈধ ও অনুমতিহীন কাউন্টারগুলো আগামী একমাসের মধ্যে উচ্ছেদ করা হবে। এছাড়া যানজট নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রধান সড়কে পার্কিংহীন ভবনগুলোতে পার্কিংয়ের জায়গা বের করতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: